Header Ads

অবসর গ্রহণের পর কি করণীয়

এই পোষ্ট এক কথায় অসাধারণ ও শিক্ষনীয়। 

রিটায়ারমেন্টের পরে
"""""""""""""""""""""""''"""""""" 
ইন্দোর শহরের বিজয় নগরের এক আবাসিক কমপ্লেক্সে এক রিটায়ার্ড IAS অফিসার এসেছেন রিটায়ার্ড লাইফ অতিবাহিত করতে। তিনি সত্যিই একজন প্রকৃত Public Servant হিসেবে তার সমস্ত কর্ম জীবন অতিবাহিত করেছেন।

এই রিটায়ার্ড বড় IAS অফিয়ার সব সময়ই এক নেগেটিভ মানসিকতা নিয়ে রোজ বিকেলে হাউসিং কমপ্লেক্সের পাশের পার্কে হাঁটতে আসতেন আর পার্কে উপস্থিত সবাইকে এক অবজ্ঞাপূর্ণ দৃষ্টিতে অবলোকন করতেন এবং পার্কে উপস্থিত কারো সাথেই তিনি কোন কথা বলতেন না।

একদিন পার্কে হাঁটা শেষ করে ক্লান্তি নিবারণের জন্য পার্কের বেঞ্চে এক বৃদ্ধের পাশে এসে বসলেন। এরপর থেকে তিনি রোজ হাঁটা শেষ করে ক্লান্তি নিবারণের জন্য সেই বৃদ্ধের পাশে গিয়েই বসতেন এবং সেই সূত্রেই তাদের মধ্যে টুকটাক বাক্য বিনিময়ও শুরু হলো। তবে রিটায়ার্ড IAS অফিসারের কথার বিষয়বস্তু কিন্তু একই ছিলো- আমি ভোপালে এতো বড় IAS অফিসার ছিলাম যে আপনি ভাবতেই পারবেন না। আমি তো ভোপালে মজবুর হয়ে গিয়েছিলাম, নইলে আমার ইচ্ছে ছিলো দিল্লিতে জয়েন করার।

বৃদ্ধ লোকটি রোজ শান্তিপূর্ণভাবে লোকটার কথা শুনতেন। বিরক্ত হয়ে বৃদ্ধ একদিন রিটায়ার্ড IAS লোকটাকে বললেন - আপনি কি কোনদিন ফিউজ Bulb দেখেছেন ? Bulb ফিউজ হয়ে যাবার পর কেউ কি দেখে ওটা কোন কোম্পানির Bulb ছিলো ? ওটার কত ওয়াটের ছিলো ? ওটার আলো কেমন ছিলো ? একটা Bulb ফিউজ হয়ে যাবার পর এসবের কোন মূল্য ও গুরুত্ব থাকে না। ফিউজ bulb মানুষ রাস্তার ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসে কি না বলুন ?

যখন সেই রিরায়ার্ড IAS অফিসার মহাশয় বৃদ্ধের কথার সমর্থনে মাথা নাড়লেন, তখন বৃদ্ধ বললেন - অবসর গ্রহণের পর আমাদের সবার স্থিতি ফিউজ Bulb - মতো হয়ে যায়। আমরা কোথায় কাজ করতাম, আমাদের পদ কত বড় বা ছোট ছিলো, আমাদের কি ক্ষমতা ছিলো, অবসর গ্রহণের পর এসবের কোন মূল্যই থাকে না। আমি এই হাউসিং সোসাইটিতে বিগত অনেক বছর থেকে বাস করছি, অথচ আজ পর্য্যন্ত এই সোসাইটির কেউ জানে না যে এক সময় আমি একজন মেম্বার অফ পার্লিয়ামেন্ট ছিলাম। আমি একজন MA in Political Science এবং LLB ডিগ্রীধারী লোক। ঐ সামনের বেঞ্চে বসে আছেন শর্মাজী, ইনি এক সময়ে রেল বিভাগের চিফ ম্যানেজার ছিলেন। ঐ যে এই দিকে হেঁটে আসছেন যোশী সাহেব তিনি সেনা বাহিনীর  ব্রিগেডিয়ার ছিলেন।  ঐ যে পার্কের শেষ প্রান্তে দাড়িয়ে আছেন, ইনি হলেন ড: পাঠক, তিনি  ISRO Chief ছিলেন। এরা কোনদিন নিজের মুখে এসব কাউকে কোনদিন বলেন নি। কেনো জানেন ? চন্দন কাঠ কখনো কাউকে বলে ফেরে না যে আমি চন্দন, তার সৌরভই মানুষকে তার কাছে নিয়ে আসে। ওরা কেউই তাদের বিগত দিনের উচ্চ পদের কথা আমাকে বলে নি, তবে আমি সেটা জেনেছি নিজের আগ্রহে, ওদের অতি সাধারণ জীবনযাত্রা দেখে । আমি জানি সব ফিউজ bulb - এর মূল্য সমান। হতে পারে এই ফিউজ bulb কেউ জিরো ওয়াটের, কেউ 60 বা 100 ওয়াটের। কিন্তু এদের কারোরই আজ আলো দেবার সাধ্য নেই, কাজেই এদের কোন উপযোগীতা নেই।

মানুষ উদিত সূর্য্যের উদ্দেশ্যে জল অর্পণ করে সূর্য্যদেবের পুজো করে। কিন্তু অস্তাচলগামী সূর্য্যদেবের পুজো কেউ করে না।

কিছু কিছু লোক তার কর্মজীবনের পদ নিয়ে এতো ভ্রমে থাকে যে অবসর গ্রহণের পরও সে তার সেই পদের গরিমা ভুলতে পারে না।।

#সংগৃহীত

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.