জল হীন শহরের স্বভি মান , , গর্ব আজও অমলিন
অমল গুপ্ত , জলহীন শহর লাম ডিং অনগ্রসর এক রেল শহর । যেখানে আজও রাতের নিরবতা রেলের হুইসেলের শব্দে চুরমার হয়ে যায়। গভীরে কান পাতলে বুনো হরিণের ডাক শোনা যায়। শিমুল ফুলে কোকিলের ডাক তো আছেই। এই জল হীন শহরে র একদিন ভরসা ছিল সেই, বিজন দা নেই ,অকৃতদার বিজন সিংহ সারা জীবন নেতাজি প্রেম ,আর সমাজ সেবা ,আর বুকে আঁকড়ে ছিলেন স্বাভি মান যাকে দেখে সবাই ভরসা পেতেন। এত মদ আর দূর্নীতি গ্রাস করতে পারত না। এই জল নেই শহরে বসন্ত রোগ নিরামযে র বড় কবিরাজ আছেন ।সারা দেশ যাকে স্বীকৃতি দেয় শীতলা দেবী।বড় বড় চোখ নিয়ে কৃপা বর্ষন করছেন। আছেন বুড়ো বেল গাছ আজও দাঁড়িয়ে। যে গাছের তলে মা কালী কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ।১৮৮২ সালে ডাক্তার অন্ন দা প্রসাদ সেনগুপ্ত রেলের মেডিকেল অফিসার হিসেবে এই শহরে এসে এই বেল গাছটি রোপণ করেন আর বারাণসী থেকে কালী মূর্তি গড়ে প্রতিষ্ঠা করেন। এই শহরে ১৯৩৭ সালে মসজিদ স্থাপন করেছিলেন রেলের ডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে এসে হুসেন সায়েব, ১৯১৬ সালে গির্জা প্রতিষ্ঠিত হয়। বৌদ্ধ মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় তার পরে।সব ধর্মের মানুষ বাস করেন এই রেল এই শহর এ বাঙালিদের স্বভিমান আছে বাংলা ভাষা সংস্কৃতির অনুশীলন এই শহরে দুই পূজারী অধ্যাপিকা উমা ভৌমিক আর অধ্যাপিকা মন্দিরা দাস শর্মা । সাংস্কৃতিক মন্দিরে প্রধান পূজারী তাদের দুজনকে বাদ দিয়ে শহরে পুজো অর্চনা হয় না। সেই সাংস্কৃতিক উৎসবে নিয়মিত ভোগ নিবেদন করেন বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি মঞ্চের দুই পুরোধা অনিমেষ মজুমদার আর স্বপন দাস। সেই সঙ্গে স্বপন দাস আর অনিমেষ মজুমদার সাংবাদিকতা ও করেন। এর পাশ নিজস্ব ঘরানা নিয়ে নারী সংগঠন নন্দিনী উজ্জ্বল ভূমিকা গ্রহন করে চলছেন লিটল স্টার একা ডেমির কর্ণধার জয়শ্রী আচার্য ,সংবাদিক সঙ্গীত শিল্পী হিসাবেও সমাদৃত। এই শহরের কবি, সাহিত্যিক ,গায়ক মন্টু লাল আচার্য র অসমীয়া পত্নী চিত্রা বলি বড়ুয়া লিখতে পারেন " তুমি আছ বলেই আমি নারী, আমি মো হময়ী।" কোনো শহরে কিশোর কুমারের নামে পূজার অনুষ্ঠান নের নজির আছে কি ? জবাব নেই ।আছে কেবল কিশোর কুমার গানের পাগল রেল কর্মী বাপন ।প্রতিবছর নিয়ম করে ধুমধাম করে কিশোরকুমারের জন্মতিথি পালন করা হয়।সঙ্গে দিনভর গান সেতো থেকেই। জলহীন এই শহরে জল নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের সেমিনার আয়োজন করেছিল লিটল স্টার ডেমি আর গুয়াহাটি থেকে প্রকাশিত বাংলা নিউজ পোর্টাল নয়া ঠাহর। এই শহর ছিল এই প্রতিবেদকের সাংবাদিক জীবনের অতুর ঘর । এই শহর থেকে সাপ্তাহিক বাংলা ঐকতান প্রকাশ পেয়েছিল। অমল গুপ্তের সম্পাদনায় প্রকাশিত সাপ্তাহিক কয়েকবছর বাদে অপমৃত্যু ঘটে। পাশে ছিলেন সেই স্বপন দাস " সর্ব ঘটে কলা ,"যাকে বাদ দিয়ে এই কোনো অনুষ্ঠান করা মুশকিল। গত ২১ মার্চ এই শহরে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি মঞ্চ কবিতা দিবস পালন করে। লিটল স্টার আকাদেমি বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান হয়। এই দিবসে বাইরের শিল্পী হিসাবে প্রণব আচার্য উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিশিষ্ট লেখক গায়ক । তিনি হাজার বছরের ইতিহাস লিখে বঙ্গে সমাদৃত। এই শহরে রেল স্টেশন এ নাগা টি স্টল ছিল বিখ্যাত কাপ ডিস গরম জলে ডুবিয়ে রেখে জীবাণু মুক্ত করে কনডেন্স মিল্কের চা পরিবেশন করা হত। এবার খুঁজে পেলাম না।সঙ্গে অনেক কিছু। হারিয়ে গেছে। প্রেম ও অবশিষ্ট কিছু নেই। আজও সোনালী অতীতের মণি মুক্ত আহরণের স্বপ্ন দেখি।
কোন মন্তব্য নেই