Header Ads

আর্ন্তজাতিক মাতৃ ভাষা দিবস বিবেকানন্দ কল্যাণ কেন্দ্রে

  সংবাদাতা  নয়া ঠাহর :২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ - গুয়াহাটির ওদালবাক্রাস্থ বিবেকানন্দ কল্যাণ কেন্দ্রের নিয়মিত বার্ষিক অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে ২১শে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  একটা বিশেষ গুরুত্বে চিহ্নিত। এবার   এ-রাজ্যের শিক্ষা-সস্কৃতি-ভাষা-সাহিত্যজগতের  সর্বজনমান্য  ব্যক্তিত্ব ড০ মুক্তি দেব চৌধুরীর জন্মদিন ২০ শে ফেব্রুয়ারি  তারিখটি যুক্ত হয়ে কল্যাণ কেন্দ্রের এই অনুষ্ঠানটিকে একটি  দ্বিদিবসীয় মাত্রা দিয়েছে।  বাংলা ভাষার সেবা দিয়ে শুরু করে যুগপৎ বিভিন্ন ভাষাকে সমান গ্রহীষ্ণুতায় আত্মস্থ করে তিনি ভাষার সেবায় নিজেকে দুর্লভ আন্তর্জাতিকতার স্তরে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানই হোক আর অন্যত্র যেখানেই হোক ভাষার অধিকার রক্ষার সংগ্রামে তিনি নিজেকে অধিকার রক্ষার সংগ্রামীদের সাথে একাত্ম দেখতে চেয়েছেন। কিন্তু আপাত:ভিন্ন শিবিরের অধিকারকেও সর্বাঙ্গে গ্রহণ করেছেন। সেকথা বিদ্যায়তনে, সাহিত্য সাধনায়, কর্মক্ষেত্রের বিচিত্র পর্যায়ে যেমন সত্য তেমনি তা পারিবারিক পরীক্ষায়ও বিস্ময়কর মর্যাদায় তাকে প্রতিষ্ঠা দান করেছে। এক অদ্ভুত স্বাভাবিকতায় তার ২০শে ফেব্রুয়ারির জন্মতারিখটি ২১শের আগে নিরবচ্ছিন্ন আত্মীয়তায় অভিন্নতা লাভ করেছে। এই উপলব্ধি থেকেই বিবেকানন্দ কল্যাণ কেন্দ্রের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন স্থায়ী ভাবে দ্বিদিবসীয় করার সিদ্ধান্ত। আজ তাই তার  জন্মদিন পালনের মাধ্যমে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হল। আর এই অনুষ্ঠানটি কল্যাণ কেন্দ্রে বিশেষ কারণে লোকমাতা নিবেদিতার অনুষঙ্গে তাৎপর্যময় হয়ে উঠল। মুক্তিদি চিরদিনই নিবেদিতার পথের পথিক।তাকে নিয়ে গবেষণাত্মক বই লিখেছেন। আর বিবেকানন্দ কল্যাণ কেন্দ্র নিবেদিতার মাতৃভাষিক স্বয়ংক্রিয় শিক্ষা পরিকল্পনাকে পাথেয় করেই প্রতিষ্ঠিত। বিশেষত নিবেদিতার ঐ আহ্বান : 
"Each of you I urge to study the grand literature of the east in preference to the literatures of the west. Your literature will uplift you. Cling to it. Cling to the simplicity and sobriety of your domestic lives... Do not let modern fashion and extravagances of the West  and its modern English education spoil your reverential humility, your lovable domestic ties...."
এই কেন্দ্রের সম্পাদক জহরলাল সাহা দিদিমণির ছাত্র হবার সূত্রে এখানে নিবেদিতার শিক্ষা পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখা। লোকমাতা নিবেদিতা সেন্টার ফর নেশনাল এডুকেশন  নামক কোষ স্থাপন করে হাতে-কলমে শিক্ষার চিন্তা।২০১৭ সালে নিবেদিতার সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মুক্তিদি কেন্দ্রের সবচেয়ে উঁচুতে উত্তরের সীমানায় খুঁটি পোতেন। নানা সময়ে অর্থদান সহ অভয়দান  করেছেন। তারপর ইতিহাস হবার আগে চেতনার দুয়ার উপান্তে ফিরে তাকিয়ে রেখে যান শেষ নির্দেশ - জহর, তুমি নিবেদিতার কাজটা করো। এই কাজটায় এভাবেই জড়িয়ে গেছে মাতৃভাষা, নিবেদিতা আর মুক্তি দিদিমণি ও বিবেকানন্দ কল্যাণ কেন্দ্র। মন্দির, জলাধার, ছাত্রাবাস, স্কীল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপ, প্রদর্শনী গৃহ, সংগ্রহালয়, পাঠাগার সহ এই নিবেদিতা সেন্টারের এক বিঘার সমগ্র প্রাঙ্গণটি অনেক আগেই "মুক্তি" নামে চিহ্নিত হয়েছে। 
 আজ ফিতে কেটে তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল তার ছেলে শঙ্খদীপ ও স্নেহধন্য ছাত্র পাণ্ডু কলেজের অধ্যাপক শান্তনু রায়চৌধুরীর দ্বারা। দিদিমণির ছবিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন ছাত্রছাত্রী এবং উপস্থিত অনুরাগীবর্গ। সঙ্গীতের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন  করেন রবি- রাগিণীর সদস্যগণ যথাক্রমে পুষ্পিতা, রীতা দাস,  উমা ভট্টাচার্য ও অন্যান্যরা।  অন্যান্যদের মধ্যে চৈতালী ভট্টাচার্য ও অনামিকার পরিবেশন সভাটিতে ভক্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে। অধ্যাপক রায়চৌধুরী আপ্লুত কণ্ঠে তার মাতৃসমা গুরুর স্মৃতি চারণ করেন। শঙ্খদীপ মাতৃস্মৃতি জড়িত এই প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মের সাথে থাকার আশ্বাস দান করেন। আশীষ দাস ম্যাকলের শিক্ষার বিপরীতে এই ভারতীয় শিক্ষার অনন্য ক্ষেত্রটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করে এর প্রাণপ্রতিষ্ঠায় দিদিমণির অবদানের মূল্যায়ন করেন । অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কল্যাণ কেন্দ্র বিদ্যালয় সভাপতি শ্রী যুতা শুভ্রা ভট্টাচার্য। মদন গোস্বামীর লিখিত শ্রদ্ধা নিবেদনটি পাঠ করে শোনান তিনি । জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে সাঙ্গ হয় অনুষ্ঠান। স্বল্পাহারে আপ্যায়িত হন সকলে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.