সঙ্গীত শিল্পী বাপ্পি লাহিড়ি বিশ্ব কাঁপালেন
বাবা-মায়ের দেওয়া নাম অলোকেশ লাহিড়ি। ১৯৫২ সালে জন্ম জলপাইগুড়ি জেলায়। ডাক নাম ছিল বাপি। রেখেছিলেন এক আত্মীয়া। কে জানত, একদিন এই নামেই গোটা বিশ্ব কাঁপাবেন আরব সাগরের পার থেকে। বাড়িতে সঙ্গীতের চর্চা ছিল বরাবরই। বাবা অপরেশ লাহিড়ি আর মা বাঁশুড়ি লাহিড়ী দুজনেই বাংলা সঙ্গীত জগতে ছিলেন পরিচিত নাম। তাই বাপ্পি লাহিড়ীর গানের হাতেখড়ি হয় পরিবারেই।
চোখে সোনালি স্বপ্ন নিয়ে মাত্র ১৯ বছর বয়সে মুম্বই পাড়ি দেন গায়ক। ইচ্ছে ছিল টিনসেল টাউনে একদিন সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়া। ১৯৭৩ সালে হিন্দী ভাষায় নির্মিত নানহা শিকারী ছবিতে তিনি প্রথম গান রচনা করেন। এরপর তাহির হুসেনের জখমী (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে কাজ করেন।
তবে তাঁকে ডিস্কো কিং বললে ভুল বলা হবে। রোম্যান্টিক গান থেকে শুরু করে ভজন, কাওয়ালি থেকে রাগাশ্রয়ী গান, সবেতেই ছিল তাঁর অনায়াস যাতায়াত। টুটে খিলানে ছবিতে নানহা সা পঞ্চি মেরা -- সর্বক্ষেত্রেই ছিল তাঁর অনায়াস যাতায়াত।
৩৩টি ছবির জন্য ১৮০টি গান রেকর্ড করে ১৯৮৬ সালে গিনিশ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নিজের নাম তুলে নিয়েছিলেন। তিনিই একমাত্র ভারতীয় মিউজিক ডিরেক্টর যিনি জোনাথন রসের লাইভ পারফরম্যান্সে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন ১৯৮৯ সালে। তাঁর আইকনিক গান জিমি জিমি আজা আজা... হলিউড ছবি ' You Don't Mess With The Zohan's'-এ ব্যবহার করা হয়েছিল।
কালো চশমা আর গলায় বেশ কয়েক ভরি সোনার চেন, কেন সবসময় সোনার হার পরে থাকেন বাপ্পি লাহিড়ি? এ প্রশ্ন বহুজনের। উত্তর দিয়েছিলেন তিনি নিজেই। বলেছিলেন, প্রথম সোনার চেন উপহার দিয়েছিলেন মা, এর পর স্ত্রী তাঁকে গণেশের লকেট দেওয়া এক চেন উপহার দেন। তিনি মনে করেন, সোনা তাঁর জন্য বেশ লাকি। আর সে কারণেই সোনা পরে থাকার সিদ্ধান্ত তাঁর।
মাত্র ১১ বছর বয়সে নাকি প্রথম গানের সুর দিয়েছিলেন তিনি। অসম্ভব দ্রুতগতিতে সব কিছু ধরে নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর। বাংলা ছবি দাদুতে ১৯৭২ সালে সুর দেন। কিন্তু মন টেঁকেনি শহরে। মায়ানগরীর হাতছানি দিচ্ছিল তাঁকে। ছেলের কারণে, বাবা-মাও চলে গিয়েছিলেন বম্বেতে।
ভাগ্যিস গিয়েছিলেন তাই একজন বাঙালি হিসাবে আজও আর একজন বাঙালির জন্য গর্বিত !( সুজন মজুমদার সৌজন্যে )
কোন মন্তব্য নেই