Header Ads

২১ অক্টোবর জাতির প্রথম মুক্তি দিবস

 জহরলাল সাহা :সুমহান ২১শে অক্টোবর  বাঙালি - জাতির প্রথম মুক্তি-দিবস।-
এই ২১শে অক্টোবর-এর প্রাক্লগ্নে ভাষা-বর্ণ-জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল বাঙালি, ভারতবাসী ও বিশ্ববাসীকে অভিনন্দন জানাই। বৈচিত্র্যে বিশিষ্ট , প্রত্যেকের জন্যে, ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে ও স্তরে এই দিবসের বহুমাত্রিক বাণী রয়েছে। সে-সবের অন্তর্নিহিত  মৌলিক সাধারণ তত্ত্বটি হল -  প্রবল পরাক্রান্ত সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সমাজতান্ত্রিক পথে মনুষ্যত্বের আত্মার মুক্তির  সর্বস্বপণ যুদ্ধে নিপীড়িত পরাধীনের নিঃশর্ত অভ্যুত্থান। সেদিন ১৯৪৩ সালের ২১শে অক্টোবর দেশমাতা ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্যে নেতাজি আজাদ হিন্দ সরকার গঠন করেছিলেন। তা এই প্রথমবার আপতিত সকল ভারতবাসীর সম্মিলিত সশস্ত্র সংগ্রাম । তা কোনো রাজা-বাদশার স্বার্থে তাদের অধীনস্থ নয়, বা বিশেষ একটা পেশাগত শ্রেণীর অংশগ্রহণে নয়। সত্যিকারের অর্থে সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে সকল স্তরের সকল ভারতবাসীর যোগদানে মুক্তির জন্যে ভারতীয় সৈন্যদের বিপরীত দিশায়  ঘুরিয়ে দিতে "দিল্লী চলো"র প্রেরণা হল এর  শক্তিকেন্দ্র।  
ভারতীয় সমাজতান্ত্রিক  উদ্দেশ্য রূপায়ণে স্বাধীনতার যুদ্ধে
নিহিত এই দিবসের তাৎপর্য। এই দিবস ভারতকে দিয়েছে মুক্ত ভূখণ্ড, ঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্রত্ব ও পররাষ্ট্র স্বীকৃতি,   প্রথম সর্বভারতীয় সৈন্যদল, বিশ্বের প্রথম নারী বাহিনী, মুখে দিয়েছে ভারতমন্ত্র - "জয় হিন্দ্", দিয়েছে একটা নিজস্ব সংবিধানের রূপরেখা, আরো আরো কত দুর্লভ সম্পদ।
    এ আজাদ হিন্দ যুদ্ধের নেতৃত্বে বাঙালির সন্তান, এ-কথাটার তাৎপর্যও বিশাল।  নিজের মূল অনার্য রক্তে কমেও আড়াই হাজার বছর আগে  ভারতবর্ষের  বিশ্বাত্মিক অমৃতের আহ্বানকে আত্মদীপ করে বাঙালি যে নিরবচ্ছিন্ন সাধনা শুরু করেছিল তা স্বামী বিবেকানন্দে রক্তমাংসের রূপধারণ করে নেতাজির মধ্যে ক্রিয়াশীল হয়ে ভারতের মুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের মুক্তির সংকল্পে রণমূর্তিতে ধাবিত হয়েছিল। স্বামিজি বিশ্বের মুক্তির উদ্দেশ্যে সর্বধর্মস্বরূপী  শ্রীরামকৃষ্ণের সর্বধর্মসমন্বয় ও সেবা ধর্মের রূপায়ণে নারীর মুক্তি ও সমাজতন্ত্রকে অগ্রাধিকার দিতে চেয়েছিলেন। ভিত্তি ছিল অদ্বৈতবাদ, যার দ্বারা বেদ-কোরাণ-গীতা-বাইবেলের পারে মানুষকে এমন অবস্থানে নিয়ে যাবেন যেখানে এরা সব থাকবে, কিন্তু মানুষ তার নিজস্ব মহিমায় সমুজ্জ্বল হয়ে বিরাজ করবে। ২১শে অক্টোবরের প্রেরণাকেন্দ্রে বাঙালির এই সাধনার নির্যাস । ভবিষ্যৎ পৃথিবী এর দ্বারাই নিজেকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে। বাংলা, ভারত ও বিশ্ব -  এ তিনটি স্তরে এর ত্রৈমাত্রিক বৈশিষ্ট্য। নেতাজির ২১শে অক্টোবর-এর প্রতিজ্ঞা শিরে ধরে ভারত তথা বিশ্বের তরে বাঙালিকে উঠতেই হবে। পুনর্বার সকলকে ২১শে অক্টোবরের বৈপ্লবিক অভিনন্দন! জয় হিন্দ্।
-শ্রী জহরলাল সাহা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.