Header Ads

ভারতীয় কমিউনিস্ট দের চারিত্রিক দ্বিচারিতা

রাজনৈতিক দ্বিচারিতা ভারতীয় কমিউনিস্টদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। 
মন্ত্র আনন্দ 
      স্বাধীনতার বহু আগে থেকেই ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি রাজনৈতিক দ্বিচারিতায় ভুগছে, তাদের তত্ত্বে ও কর্মে দুমুখো নীতি খুবই স্পষ্ট। কমিউনিস্ট পার্টির ইস্তাহারে কাল মার্কস বলেছেন কমিউনিজমকে  এক কথায় বললে---'পুঁজিবাদের উচ্ছেদ'। ভারতের কমিউনিস্ট নেতারা সাধারণ কর্মী সমর্থকদের সামনে পুঁজিবাদ বিরোধী লম্বা-চওড়া বক্তব্য রাখলেও তলে তলে পুঁজিবাদকে তোষণ করে চলেছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রাজনৈতিক স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও চেয়েছিলেন। তাই তৎকালীন পুঁজিপতিদের অর্থে পরিচালিত জাতীয় কংগ্রেসের গান্ধী লভের নেতৃত্ব সুভাষ চন্দ্রের বিরোধিতা করেছিল, সুভাষচন্দ্র কে কংগ্রেস ও দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল। সমাজতন্ত্রের মুখোশধারী সাম্রাজ্যবাদের দালাল ভারতীয় কমিউনিস্টরা সেদিন সুভাষচন্দ্রের পাশে দাঁড়ায়নি। বরং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় যেমন ব্রিটিশের দালালি করেছে, তেমনি দলীয় মুখপত্রে সুভাষচন্দ্র সম্পর্কে অশ্লীল কদর্য ভাষায় অপবাদ ছড়িয়েছে। সুভাষচন্দ্র ও আজদ হিন্দ ফৌজকে জাপানি সাম্রাজ্যবাদের দালাল বলেছে।
    স্বাধীনতার পরেও কমিউনিস্টরা তাদের চরিত্র বদলায়নি। মুখে পুঁজিবাদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে গুঁড়িয়ে দাও স্লোগান থাকলেও তলে তলে দেশীয় পুঁজিপতিদের তোষণ করেই গেছে। বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নেই, সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের স্মৃতি এত তাড়াতাড়ি মুছে যাওয়ার নয়। 
      আর জি কর নিয়ে আন্দোলনেও কমিউনিস্টদের সেই চরিত্রই ফুটে উঠেছে। একদিকে আরজিকর তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সাহায্য চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ, আবার মোদি দিদির সেটিং তত্ত্বের প্রচার করছে। ডাক্তারদের আন্দোলন যতই অরাজনৈতিক বলে চিৎকার করা হোক পেছনে কারা আছে সেটা মানুষের বুঝতে বাকি নেই। বাম বিজেপির প্রকৃত সেটিং তত্ত্ব এখানেই কাজ করছে। যেভাবে জুনিয়র ডাক্তাররা সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে পাশবিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে অমানবিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তার পশ্চাতে রাজনৈতিক শক্তি অবশ্যই আছে। শূন্যের জ্বালা বুকে নিয়ে এই কমিউনিস্টরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধাচারণ করতে গিয়ে গোটা বাঙালী জনগোষ্ঠীকেই কালিমা লেপন করেছে। এদের কথায় বার্তায় চালচলনে এমন ভাব যেন আরজিকরের মত ঘটনা দেশে এই প্রথম ঘটলো। ৩৪ বছরের বাম রাজত্বে বানতলা বিজন সেতু বিরাটি সহ কয়েক হাজার খুন ধর্ষণ হয়ে গেছে, দিল্লির সঙ্গে সেটিং থেকে সব অপরাধ কেও গুম করেছে।
     আরজিকরের পাশবিক ঘটনার অপরাধীদের চরম শাস্তি প্রতিটি জনগণ চায়। কিন্তু যারা এই ঘটনা নিয়ে সারা ভারতবর্ষের সামনে পশ্চিমবঙ্গকে ছোট করতে চাইছে তাদের সামনে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিবেদনের একটা তথ্য তুলে ধরছি----
   ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানিতে পশ্চিমবঙ্গে সব থেকে কম মামলা নিষ্পত্তি হতে বাকি আছে। সংখ্যাটা৩০৩২; মধ্যপ্রদেশে ৯৬৮১,   উত্তরপ্রদেশে ৮৫,৫২৪; বিহারে ১৮, ৪০৫; গুজরাটে ৬৩৭১। এই ধরনের মামলার নিষ্পত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম স্থানে আছে। ডবল ইঞ্জিন উত্তর প্রদেশ ২৫ নম্বরে, গুজরাট ২১ নম্বরে। এসব তথ্যেও কমরেডরা দিদি মোদি সেটিং তত্ত্ব খুঁজে পাবে। 
      আজ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের দুর্নীতি অত্যাচার রুখতে  বাম কংগ্রেস জোটবদ্ধ। এখানেও রাজনৈতিক দ্বিচারিতা পষ্ট। কেরলে এক নীতি, পশ্চিমবঙ্গে আর এক নীতি। ৬৫ বছর পশ্চিমবঙ্গে ডবল ইঞ্জিন সরকার চলেছে। ৩০ বছর প্রত্যক্ষ ডাবল ইঞ্জিন, ৩৫ বছর পরোক্ষ ডবল ইঞ্জিন। অর্থাৎ দিল্লিতে দোস্তি পশ্চিমবঙ্গে কুস্তি--- যার বলি পশ্চিমবঙ্গে ৪০ হাজার কংগ্রেস কর্মী।
     কমরেড, অনেক দ্বিচারিতা হয়েছে, এবার একটু হলেও রাজনৈতিক সততার পরিচয় দিয়ে একটা তথ্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সামনে রাখুন। ঢালাও প্রচার করছেন তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গকে শেষ করে দিয়েছে। আপনাদের সব প্রচার সত্যি মেনেই জানতে চাই----পশ্চিমবঙ্গর মানুষের সামনে ১৯৪৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একটা তথ্য তুলে ধরুন। অর্থাৎ ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট শিল্পে, কৃষিতে, শিক্ষাতে, অর্থনীতিতে, সাহিত্য সংস্কৃতিতে পশ্চিমবঙ্গের স্থান কোথায় ছিল, ২০১১ সালে কোথায় নেমে এসেছিল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.