Header Ads

বিচারপতি বিপ্লব শর্মা প্রতিবেদন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া


বিপ্লব শর্মা কমিশনের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে  অসম নাগরিক মঞ্চের প্রতিক্রিয়া।

১:-বিপ্লব শর্মা কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন ঐতিহাসিক আসাম চুক্তিকে ধুলিস্যাৎ করেছে। আসাম চুক্তি মতে ১৯৭১ সনের ২৫ শে মার্চের পূর্বে  অর্থাৎ  বাংলাদশের জন্মের পূর্বে  যাঁরা পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারত বর্ষ/ আসামে এসেছে তাঁরা অসমিয়া তথা ভারতীয় নাগরিক। আসাম চুক্তিতে ১৯৫১ সনের কোনও উল্লেখ নাই। আছে ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সনের উল্লেখ। ১৯৬৫ সনের পর ১৯৭১ সনের ২৫ শে মার্চের পূর্বে যাঁরা পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসামে এসেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে মাত্র দশ (১০) বৎসরের জন্য ভোটাধিকার থেকে মুক্ত রাখা হবে। কিন্তু তাঁরা সংবিধান স্বীকৃত সকল সুবিধা উপভোগ করতে পারবে। ১৯৫১ সনকে অসমিয়ার সংঘা নির্ধারণের ভিত্তি বর্ষ ধরা আসাম চুক্তির পরিপন্থী।
     বিপ্লব শর্মা কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন কে AASU র সমর্থন আসাম চুক্তিকে অপমান করল। আসাম চুক্তির প্রতি শাসক দল বিজেপি যেমন শ্রদ্ধা নেই অনুরূপ ভাবে আসাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করা কংগ্রেসও আসাম চুক্তিকে অপমান করল। আসাম চুক্তির ০৫ নং দফা স্পষ্ট করে দিয়েছে  কারা অসমিয়া। ১৯৫১ সন -বিপ্লব শর্মা কমিশনের মন গড়া। এই মন গড়া কথাকে আসাম সরকার কিভাবে মেনে নিলো? এই প্রতিবেদন মেনে নেয়া - বৃহত্তর অসমিয়া সমাজের প্রতি আসাম সরকারের বিশ্বাস ঘাতকতা।আসাম সরকার কি সংবিধানের উর্দ্ধে? 
২:- বিপ্লব শর্মা কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী। ভারতের সংবিধানের মতে ভারতীয় সকল নাগরিক আইনের চোঁখে সমান। কিন্তু বিপ্লব শর্মা কমিশনের প্রতিবেদন ভারতের অন্যতম অঙ্গ রাজ্য আসামে দুই ধরনের নাগরিক সৃষ্টি করেছে- অসমিয়া ও ভারতীয়। কমিশনের প্রতিবেদন মতে " অসমিয়া "গণ   আসামে সকল ধরনের সরকারি ও সাংবিধানিক সুবিধার এক মাত্র অধিকারী অন্যদিকে ভারতীয় গণ দ্বীতিয় শ্রেণীর নাগরিক এবং সীমিত সুবিধার অধিকারী।প্রতিবেদন মেনে নিয়ে আসাম সরকার আসামে বর্ণবাদী শাসনের শুরুয়াত করতে চাইছেন। এতে জাতি বিদ্বেষ বৃদ্ধি পাবে।
৩:- বিপ্লব শর্মা কমিশনের প্রতিবেদন আসাম চুক্তির মত আসমের NRC কেও নস্যাৎ করেছে।CAA -19 কে এই প্রতিবেদন হেয় প্রতিপন্ন করেছে। আসাম সরকার এই প্রতিবেদনের পক্ষ অবলম্বন করায় প্রমাণ হ্য় বিজেপি নেতৃত্বধীন আসাম সরকারের সাথে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের নীতি গত প্রার্থক্য আছে। আসাম বিজেপি আঞ্চলিকতায় / উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ভারতীয় জাতীয়তাবাদে নয়। আসাম সরকারের বিপ্লব শর্মা কমিশনের প্রতিবেদনের প্রতি প্রদর্শিত মানসিকতায় বিচ্ছিন্নতাবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি উৎসাহিত হবে।
৪:- এই প্ৰতিবেদনের মুল উদ্দেশ্য আসামের বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার হিন্দু বাঙালি সম্প্রদায়কে দ্বীতিয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করে মাটি- বাড়ি, ব্যবসা বাণিজ্য সরকারি চাকরি ও অন্যান্য সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা। এই প্রতিবেদন ভারতের সংবিধানকে অপমান করেছে। আসাম সরকার কিভাবে সংবিধানের অপমান মেনে নিলো ?
 ৫:- আসামের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ড:হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সংবাদ মাধ্যমে আসাম চুক্তির অপব্যাখ্যা করেছেন।
 ৬:- আসাম সরকারের প্রধান মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবেদনের দফা গুলো বরাক ভেলী ও ষষ্ঠ তপশীল ভূক্ত অঞ্চলে প্রয়োগ না করার শর্ত মেনে নিতে AASU কে অনুরোধ করেছেন - এতে আসামের অখণ্ডতা প্রতি প্রত্যাহ্বান জানাতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়ক হবে।
   তাই,আসামের অখণ্ডতা ও শান্তি সম্প্রীতির স্বার্থে আসাম নাগরিক মঞ্চ দাবী করে যে বিপ্লব শর্মা কমিশনের প্রতিবেদন কার্যকরী করার পূর্বে আসামের সকল জন গুষ্টির প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি নিয়ে , কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধির সম্মুখে আসাম সরকার একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করুক। বৈঠকে আসামের প্রতিটি বাঙালি সংগঠনের প্রতিনিধিকেও ডাকতে হবে। পর্যবেক্ষক হিসেবে জাতীয় ও রজ্যিক পর্যায়ের স্বীকৃত প্রাপ্ত সাংবাদিক গণকেও আমন্ত্রণ জানাতে হবে।
    আসাম সরকারকে মনে রাখতে হবে AASU সমগ্র আসামের প্রতিনিধিত্ব করে না, এমন কি সমগ্র অসমিয়া জাতিরও প্রতিনিধিত্ব করে না।

ইতি 

বিজয় চক্রবর্তি।
সাধারন সম্পাদক 
অসম নাগরিক মঞ্চ, হোজাই।
ফোন নং ৯৪০১২৪৪৫৬৪

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.