Header Ads

প্রাক্তন মুখ্য মন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চলে গেলেন ,দুই কামরার আবাসনে ৪০ বছর কাটান।

অমল গুপ্ত  ,কান্দি জেল রোড :,বাঙালি দের দুঃসময়ে পশ্চিমবঙ্গে  সৎ   উজ্জ্বল ভাবমূর্তি  জনপ্রিয় বামপন্থী নেতা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধ দেব ভট্টাচার্য   চলে গেলেন। তার মত রাজনৈতিক। বিচক্ষণ নেতা  বিরল। বাংলাদেশে একতরফা ভাবে বাঙালি হিন্দুদের নির্যাতন করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করার কেউ নেই।এই বুদ্ধ দেব বাবু বাংলাদেশের হিন্দু বিরোধী মৌলবাদী শক্তির দিকে আঙুল তুলেছিলেন। আজ সেই মৌলবাদীদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে।কোনো প্রতিবাদ নেই। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা খুবই খারাপ। হিন্দুদের মাতৃ ভূমি ভারত ভূমি।নিজের জায়গায় স্বাধীনভাবে বসবাসের সব  অধিকার আছে।এই দুঃসময়ে বুদ্ধ দেব  ভট্টাচার্যের চলে যাওয়া বাঙালিদের বিরাট ক্ষতি হল।সহজ সরল জীবন সরকারি  কামরার এক আবাস তিনি পত্নী এক কন্যাকে নিয়ে  থাকতেন।৮০ বছর বয়সে চলে গেলেন।  ২১ বছর ক্ষমতায় ছিলেন।তার মৃত্যু এক যুগের অবসান হল। বাংলার বর্তমান প্রজন্ম  সৎ মূল্যবোধে বিশ্বাসী  বামপন্থী নেতার  মূল্য দেবার ক্ষমতা নেই।পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যে দূর্নীতি আর দূর্নীতি ,আর দুষ্কৃতী আর দুষ্কৃতী ,টিভি খোলা যায়না শুধুই  কেলেঙ্কারি আর কেলেঙ্কারি,  আর এই প্রেক্ষাপটে  দু দু বর মুখ্যমন্ত্রী পদে।বাম দুর্গে  শেষ সেনাপতি জীবন সাধনা তুলনা নেই।  কলকাতা  পাম অভিনিউ  তে তার ছোট্ট সরকারি  আবাসে বসে  সরকার চালাতেন।ত্রিপুরার বাম পন্থী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সাধারণ জীবন কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।  বুদ্ধ দেব বাবু সাংবাদিকদের বলতেন তার জীবনে মূল্যবোধ নৈতিকতার স্থান সবচেয়ে উপরে। কোনো দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করতেন না।  আজ রাজ্যে    পূর্ণ দিবস ছুটি ঘোষণা ।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যপাধ্যায়  রাজ্যপাল সিভি আনন্দ প্রমুখ তার আবাসনে  যান। । তিনি বলতেন কৃষি আমাদের ভিত্তি ,শিল্প আমাদের ভবিষ্যত। তার ছোট্ট কামরার আবাসনে শুধু বই আর বই  কাল মার্কাস , চে গুয়েভারা ,রবীন্দ্র নাথ। ভরা। তার রাজনীতির প্রধান ভরসা  সততা  নৈতিকতা। সুকান্ত  ভট্টাচার্য র কাকা ছিলেন।তার আলমারিতে সুকান্তের  ছবি ছিল।   ছোট্ট রেডিও ছিল শুধু রবীন্দ্র সঙ্গীত ছিল।টিভিতে শুধুই খবর দেখতেন। খবরের কাগজ হেডলাইন দেখতেন শেষের দিকে।তিনি প্রচুর লিখেছেন। ছোট্ট স্যাঁতসেঁতে ঘরে চার দশক। আজ   শেষ দু টুকরো আম আর ঔষধের পাউডার খ্য়েছিলেন। হাসপতালে যাবার আগেই মারা গেলেন। পত্নী মিরা  ভট্টাচার্য কেও তিনি।তার অসুখের কথা কষ্টের কথা বলতেন না। চলে গেলেন  শ্যামবাজার সৌলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয়ে পড়তেন।তার সাদা জামা শার্ট পড়তেন।    পাড়ার ছেলেরা তাকে বাচ্চু বলে চিনতেন।।
 আজ সকাল ৮, ৩০মিনিটে  মারা যান।হাসপতালে যাবার আগেই।আজ রাতে  তপসিয়া   পিস ওয়ার্লড এ দেহ রাখা হবে।কাল তিনি   এন আর এস হাসপতালে দেহ দান করবেন।  তিনি প্রেসিডেন্সি থেকে বাংলা তে অর্নাস পাশ করেন। তিনি ১৯৮৭ থেকে ৯৭ পর্যন্ত রাজ্যের   সাংস্কৃতিক মন্ত্রী পদে ছিলেন।১৯৬৬সালে সিপি এমের সদস্য পদে  বসেন।তার রাজ্যে ধান চালে প্রথম শুধু সবজি তে প্রথম ছিল। ১৯৪৪ সালে তারb১ মার্চ কলকাতায় জন্ম।১৯৭৭সালে জ্যোতি বসুর মন্ত্রী সভাতে তিনি মন্ত্রী পদে বসেন।,২০২২ সালে পদ্মভূষণ ত্যাগ করেন।এবিপি আনন্দ এ এক সাক্ষাৎকারে   দুবারের মুখ্যমন্ত্রী  বলেন
 সিঙ্গুরে ৮০ শতাংশ শিল্প  সম্পূর্ণ হয়েছিল। ১৯৭৭ সাল তিনি কাশিপুর থেকে প্রথম বিধায়ক নির্বাচিত হন। সিঙ্গুরে ফ্যাক্টরি সম্পূর্ণ হলে হাজার হাজার বেকার যুবকের চাকরি হত।   বলেন শিল্পে জমির পরিমাণ নিয়ে আপত্তি ছিল  এত বেশি পরিমাণ জমি দেব কেন।সব জমি তে রিয়াল এস্টেট করতে দেওয়া যাবেনা। নীতি হীন, দিশা হীন সরকার চলতে পারেনা।বলেন প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়েছিলাম কলকাতার বিমান বন্দরকে বেসরকারিকরণ।করবেন না। বলেন রাজ্য সরকার চলছে না ক্লাস চলছে। পাড়ার জলসা সরকারি জলসা তে পরিনত হয়েছে।  বলেন প্ল্যান বাজেট থেকে ক্লাব কে টাকা দেওয়া হয়েছে।সেই টাকা প্ল্যান এ ধরা হচ্ছে।উৎসবের জন্যে টাকা ক্লাবের জন্যে টাকা ।এই প্রবণতা রাজ্যের ক্ষতি  হচ্ছে।
 বলেন গোর্খা ল্যান্ডের সঙ্গে আপস করা ভালো হচ্ছে না।পাহাড় এলাকা স্পর্শ কাতর এলাকা আপস করা কঠিন। পাহাড় হাসে কথাটা মূল্য নেই। তৃনমূল, মাওবাদী  রাতে অন্য কমিটি  এই ভাবে জঙ্গলমহল চলছে।পুলিশ ফাঁড়ি থেকে অস্ত্র নিয়ে অস্ত্র আত্মসমর্পণ চলতে পারে না। এভাবে শান্তি আসতে পারে না।   বলেন সহজে হাঁটু ভাঙ্গেনা। বলেন মানুষের অভিজ্ঞতা বড় সম্পদ।  
 গ্রামের মানুষ তৃণমূলের হাতে ছিলনা।ধান সরাসরি কৃষকের কাছে কেনা হত  নূন্যতম পয়সা দেওয়া হত। পরে কৃষকের  আত্মহত্যা শুরু হয়েছে। বলেন  সচার  কমিটির প্রতিবেদন চালু করেন ১০০ জন মধ্যে ১০ জন মুসলিম প্রতিনিধি ছিল। পরে বন্ধ হয়ে যায়।   ৩,কোটি ৩৫ লাখ মানুষ  বাম ফ্রন্ট কে সমর্থন করেছিল।গ্রাম কে ফিরিয়ে আনা হবে। বলেন সিঙ্গুরে তাদের ভুল ছিল।দলের দূর্বলতা ছিল। সবাই তাদের থেকে সরে যায়নি।বলেন দূর্নীতি মুক্ত ব্যক্তি  কেবল গ্রহণ যোগ্যতা থাকবে।
বলেন এখনো কয়েক হাজার পরিবার ঘরে ফিরতে পারেনি। আমি ঠুনকো কাঁচের কাপ নয়।বলেন নৈতিকতার সঙ্গে কোনদিন আপোষ করিনি। দলের শুদ্ধি করণ এর জন্যে ছয় মাসের মধ্যে সব   কর্মী কে পদত্যাগ করার নির্দেশ  দিয়েছিলাম।কলেজ শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাট ভুল হচ্ছে। সংস্কৃতি কে গুরুত্ত দিয়েছিলাম।  সত্যজিত রায়কে নন্দন এর দায়িত্ব দিয়েছিলাম। নিজে বসিনি।পাঁচ
বছর পর শিল্প   কি পরিস্থিতি হবে চিন্তা করতে ভয় লাগছে। মুড়ি বিক্রি করে চানাচুর বিক্রি করা শিল্প কে চাঙ্গা করা যাবে এই নীতি   সমর্থন করা যায়? গ্রামের মানুষ মাথা তুলতে চাইছে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।সজাগ করতে হবে।আপ্রাণ চেষ্টা করছি নতুন ছেলেমেয়েদের দলে টানতে।বুড়ো সম্পন্ন ব্যক্তি কে পলিটব্যুরো মেম্বার হয়। তার সময় অপরাধ হয়েছে কিন্তু এই সরকারের সময় এত মারাত্বক হয়নি। জ্যোতি বসু বলেছিলেন এইরকম ঘটনা ঘটেই থেকে।সেই সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তোলাবাজি বন্ধ করা যায়নি। বামপন্থী মানেই সংস্কৃতি এই  ধারা তারা মেনে চলছে।  তৃনমূল থেকে রাজনীতি 
 শিক্ষা নেয়া যেতে পারে কি। ?আমরা দলে মূল্যবোধে বিশ্বাসী ছিলাম   মমতার প্রতি ক্ষোভ আছে তবে কি বামপন্থীদের প্রতি সমর্থন বাড়ছে। কলকাতা পার্ক স্ট্রীট নারী নির্যাতনের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।  বলেন দুর্বল পুলিশ অফিসারকে গুরুত্ত দিই নি। দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের চেষ্টা করেছে। বলেন রাজ্যে সরকার ৩৪শতাংশ কর দিচ্ছে।আমি বাড়াতে বলেছিলাম। বলেন ভাষা দিবসে বন্ধের বিরোধিতা করেন তিনি। চীনের উপর দুটি বই পড়ছি।শরীর মন বুঝে বই পড়ি।জাপানি দের আত্ম হত্যা এক  রীতি। সেই সম্পর্কে বই পড়তে ভালবাসি। এবিপি আনন্দ  পক্ষে সুমন বিকাল ৫ টা সাক্ষাৎকার শুরু করে সন্ধ্যা ৭ ,টা টানা দুঘন্টা চলে। সাদা ধপধপে ধুতি পাঞ্জাবি পড়ে বুদ্ধদেব বাবু শেষ সাক্ষাৎকার দেন।


 






































কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.