অপরাধের উৎস বন্ধের দাবি আমরা বাঙালি সংগঠন এর
নয়া ঠাহর ,শিলচর
‘অপরাধীদের শাস্তি হোক, অপরাধের উৎস বন্ধ হোক’— আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ ‘আমরা বাঙালী’ ও ‘বাঙালী মহিলা সমাজে’র
আর.জি.করের নির্যাতিতা চিকিৎসক-পড়ুয়া ‘অভয়া’ কাণ্ডের প্রকৃত বিচার ও অবিলম্বে খুনী-ধর্ষকদের কঠোরতম শাস্তির দাবীতে কলকাতার রাজপথে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা ও রাখী পড়িয়ে ভাই-বোনের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করে সমাজকে পাপাচার তথা দূর্নীতি মুক্ত করার শপথ নেওয়া হল ‘আমরা বাঙালী’ ও ‘বাঙালী মহিলা সমাজে’র পক্ষ থেকে। ১৯শে আগস্ট,২০২৪ রাখীর পূর্ণিমার দিন সোমবার কলকাতার বাগবাজারে সংগঠন গুলির তরফে এক বিক্ষোভ সভা ও রাখী বন্ধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
‘বাঙালী মহিলা সমাজে’র পক্ষে যুব নেত্রী তনিমা বৈরাগী বলেন— আজ রাখী বন্ধনের দিনে আমরা আমাদের দাদা-ভাইদের রাখী পড়িয়ে এই শপথ নিচ্ছি যে, সমাজকে,দেশকে পাপাচার-শোষণ মুক্ত করতে আমরা একে ওপরের হাত ধরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়বো।একটি বোনকেও যেন আর ‘অভয়া’র মতন নির্মমতম ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে না হয়। আর.জি.করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার বিভৎসতম হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। ‘আমরা বাঙালী’ দলের তরফে কেন্দ্রীয় সচিব জ্যোতিবিকাশ সিনহা দোষীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবীতে বক্তব্য রাখেন। এদিন বিকেলে বারাসতে অনুষ্ঠিত ‘অভয়া’র বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ সভায় ‘আমরা বাঙালী’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন— আমরা প্রথম থেকেই আর.জি.কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সরব। আমাদের মহিলা সংগঠন জেলায় জেলায় এমনকি ত্রিপুরা ও অসমের বিচারের দাবীতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। আমরা একটি কথা গোটা বাঙলার মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাই ... শুধু অভয়া নয়- পার্কস্ট্রিট, হাস খালি, কামদুনি,বিগত বাম আমলের বানতলা,তারকেশ্বর,বিরাটী,অনিতা দেওয়ান সহ যত অবিচার মহিলাদের ওপর সংগঠিত হয়েছে তার বিচার চাই। বাম আমলের অনেক দোষীই হয়ত মারা গেছে তাও সত্যিটা সামনে আসুক। আর.জি.কর কাণ্ডকে কেন্দ্র করে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে বেশকিছু রাজনৈতিক দল। তারা জনমানসকে প্রভাবিত করে ‘বাংলাদেশ মডেল’ -এ বাঙলার মসনদ দখল করতে চাইছে। আর সি.পি.এমের ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার কোন নৈতিক অধিকার আছে কি? বিরোধীদের মা-বোন-স্ত্রী কে ক্যাডার লেলিয়ে ধর্ষণ করানোর রাজনীতি বাঙলায় প্রবেশ করিয়েছে এই মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টি। বর্তমান শাসক দলের নেত্রীও তদন্তের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। তদন্ত ভার সিবিআইয়ের হাতে গেছে, আমরা দাবী রাখছি অবিলম্বে তদন্ত শেষ করে দোষীদের কঠোরতম শাস্তি দিতে হবে ও প্রত্যেক নারীর ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা দেওয়ার যথাযথ পদক্ষেপ চাই।চিকিৎসার মতন মৌলিক পরিষেবা বন্ধ রাখা অমানবিক।প্রতিবাদ হোক, তবে দয়াকরে চিকিৎসা বন্ধ করে অমানবিকতার দৃষ্টান্ত রাখবেন না প্রতিবাদীদের কাছে আমাদের এই অনুরোধ রইল।হাসপাতাল গুলিতে দালাল রাজও বন্ধ করে প্রত্যেকে যাতে সুস্থ পরিবেশ ও সঠিক চিকিৎসা পায় সরকারকে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।আমাদের মাথায় রাখতে হবে— প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনেই সহজাত ভোগ বৃত্তি রয়েছে। আমাদের উচিত এই ভোগবৃত্তি গুলোকে উৎসাহ দিতে পারে এমন অশ্লীল সাহিত্য-শিল্প-সিনেমা-নীল ছবির মতন জিনিসকে কঠোরভাবে কড়া হাতে নিষিদ্ধ করা। মদ,ড্রাগস,গাজার মতন মাদককেও নিষিদ্ধ করতে হবে। শুধু তাই নয় স্কুলের পাঠ্যসূচীতে ছোট থেকেই ‘নৈতিক শিক্ষা’র ব্যবস্থা করে শিশুমনে নীতিবাদের প্রবেশ করাতে হবে। ধান্দাবাজ,সুবিধাবাদী উন্মাদ তথাকথিত ‘বিপ্লবী’দের জন্য আমার এই বক্তব্য নয়, যাঁরা সত্যিকারের সমাজের পরিবর্তন চান,যাঁরা রাজনৈতিক স্বার্থের বাইরে ওই তরুণীর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ন্যায্য বিচারের দাবীতে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে আমাদের বার্তা এগিয়ে আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ ; শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ ; বিবেকানন্দ , নেতাজী সুভাষের রচনাবলী এগুলি তৎকালীন তরুণদের মধ্যে জাগিয়ে তুলেছে দেশপ্রেম, মাতৃ ভক্তি, নারী জাতিকে মায়ের সমান মর্যাদা। আর আজকের বিপরীতধর্মী নগ্ন যৌনতা মার্কা অশ্লীল সাহিত্য, সিনেমা ; ব্লু ফ্লিমের অবাধ প্রদর্শন মানুষকে কি নৈতিক অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে না? সুশীল সমাজ ভাবুন। সমাজে নৈতিক দৃঢ়তার প্রতিষ্ঠাই সমাজকে এইসব পাপাচার ব্যাভিচার নির্যাতন মুক্ত করবে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন— ‘আমরা বাঙালী’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সচিব হিতাংশু বন্দ্যোপাধ্যায়, মোহন অধিকারী,জয়ন্ত দাশ,অরুপ মজুমদার। বাঙালী মহিলা সমাজের পক্ষে সুনন্দা সাহা, প্রণতি পাল , গোপা শীল,সুপ্রিয়া ভৌমিক,স্বাগতা ব্যানার্জী; ‘বাঙালী ছাত্র-যুব সমাজে’র পক্ষে ছিলেন কৃষাণু ব্যানার্জী,শুভদীপ হাজারি প্রমুখ নেতৃবৃন্দ
তারিখ: ১৯/০৮/২০২৪
নিবেদক—
উজ্জ্বল ঘোষ
কেন্দ্রীয় প্রচার সচিব, আমরা বাঙালী
২নং বল্লভ স্ট্রীট, কলকাতা—০৪
কোন মন্তব্য নেই