Header Ads

রাজ্যের এক কোটি কুড়ি লাখ বাঙালি র সমস্যা সমাধানে শুধু সি এ এ নয়,কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে

 নয়া ঠাহর ,শিলচর

রাজ্যের ১ কোটি কুড়ি লক্ষ বাঙালিদের সমস্যার সমাধানসূত্র সিএএ নয়, সমস্যা মেটাতে হলে শিক্ষিত বাঙালি বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুক সরকার - বিডিএফ।

সিএএ নতুন বিধিনিয়মে রাজ্য সরকার শিলমোহর দেবার পর এই রাজ্যের হিন্দু বাঙালিদের মূল সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
এনিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

বিডিএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে সিএএ এর অধীনে আসামে এখন অব্দি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন মাত্র আট জন। এতে বোঝা যাচ্ছে হয় সিএএ এর বিধিনিয়মে আবেদন প্রক্রিয়া জটিল নাহয় এই রাজ্যে বিদেশি প্রায় নেই। প্রদীপ বাবু বলেন যে দ্বিতীয় সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একদিকে অসমিয়া জাতিয়তাবাদীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছেন , আবার সিএএ এর মাধ্যমে হিন্দু বাঙালিদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে বলে বাঙালিদের সমর্থন ধরে রাখতে চাইছেন। প্রদীপ বলেন এই উভয় বক্তব্য পরস্পরবিরোধী। যদি বিদেশি নাই থাকে তাহলে সিএএ নিয়ে এতো প্রচার অর্থহীন।আর যদি বিদেশি থেকে থাকে তাহলে সিএএ যে তাদের সমস্যার সমাধান নয় আবেদনকারীর সংখ্যা থেকে তা প্রমানিত। প্রদীপ দত্তরায় এদিন বলেন যে রাজ্যের বাঙালিদের মুল সমস্যা মোটেই নাগরিকত্ব নয়। এটিকে রাজনৈতিক স্বার্থে এতদিন ধরে ব্যাবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন এই রাজ্যের বাঙালিদের অন্যতম সমস্যা কর্মসংস্থানের সমস্যা। তিনি বলেন যারজন্য স্নাতকোত্তর হয়েও বাঙালি বেকাররা ভিনরাজ্যে সামান্য বেতনে চাকরি করছেন,কেউ কেউ অটোরিকশাও চালাচ্ছেন। তিনি চ্যালেঞ্জ ঠুকে বলেন যে মুখ্যমন্ত্রীর এবারের তিনবছরের শাসনকালে কতজন বাঙালিকে চাকরি দিয়েছেন,সেই তথ্য সাহস থাকলে তিনি প্রকাশ করুন। যদি তা যথাযথ ও আনুপাতিক হয় তবে সবাই বুঝবেন  যে মুখ্যমন্ত্রী বাঙালিদের সমস্যা সমাধানে সত্যিকারের আগ্রহী। প্রদীপ বাবু এছাড়াও ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণ,শিলচরে ভাষা শহিদ স্মারক সংগ্রহালয় স্থাপন, বিবেকানন্দ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন,বরাক খনন ইত্যাদি সরকারের পুরোনো প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন এগুলো এতদিন ধরে ঝুলিয়ে রাখা থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে সরকার রাজ্যের বাঙালিদের সমস্যা সমাধানে মোটেই আন্তরিক নয়। তিনি বলেন জনগনকে বেশি দিন ভুল বুঝিয়ে রাখা সম্ভব নয়। সরকার চাকরি সহ সমস্ত ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা না নিলে আগামী নির্বাচনে এর ফল ভুগতে হবে সরকারকে।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য এদিন বলেন যে আসামে যে খুব অল্পসংখ্যক অনুপ্রবেশকারী রয়েছেন সেটা তাঁরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন এবং এদের সমস্যা সমাধানের জন্য সিএএ জরুরী নয়। সংবিধানে ইতিমধ্যে যে সব সংস্থান রয়েছে তা দিয়ে অনায়াসে এদের সমস্যা মেটানো সম্ভব। তিনি বলেন সম্পুর্ন রাজনৈতিক স্বার্থে এই রাজ্যে বারবার নাগরিকত্ব ইস্যু এবং সিএএ কে টেনে আনা হচ্ছে। জয়দীপ এই প্রসঙ্গে বলেন যে রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে রাজ্যের গোর্খা জনগোষ্ঠীর নাগরিকদের বিরুদ্ধে বিদেশি ট্রাইব্যুনালে যেসব মামলা চলছে তা প্রত্যাহারের নির্দেশ এবং নতুন কোন মামলা করা হবেনা বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জয়দীপ বলেন হিন্দু বাঙালিদের ক্ষেত্রে কিন্তু এরকম কোন নির্দেশ এখনো ঘোষিত হয়নি।  তিনি বলেন যে সরকার যদি বাঙালিদের নাগরিকত্বের সমস্যা সমাধানে সত্যিই আন্তরিক হত তাহলে ১৯ লক্ষ এন আর সি ছুটদের আপিল প্রক্রিয়া এতোদিন ধরে ঝুলিয়ে রাখতনা। তিনি আরো বলেন যে এটাও উল্লেখ্য যে ২৭ লক্ষ নাগরিকদের আধার কার্ড এতদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে যাদের অধিকাংশই বাঙালি। জয়দীপ এদিন বলেন যে বাঙালিদের নাগরিকত্বের সমস্যা সমাধানে তাঁদের সরকারের কাছে দাবি যে প্রথমত বাঙালিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে বা হাইকোর্টে ঝুলে থাকা সমস্ত বিদেশি মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। দ্বিতীয়তঃ অবিলম্বে যে ২৭ লক্ষের আধার কার্ড আটকে রাখা হয়েছে তা মুক্ত করতে হবে। এবং তৃতীয়ত অবিলম্বে এনার্সির আপিল প্রক্রিয়া সহ বাকি কাজ শেষ করে রাজ্যের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করতে হবে। তিনি বলেন সিএএ দিয়ে রাজ্যের হিন্দু বাঙালিরা আর ভুলিয়ে রাখা যাবে না। যদি এই দাবিগুলো সরকার পুরণ না করে তবে আগামী নির্বাচনে রাজ্যের হিন্দু বাঙালিরা সরকারকে যে সঠিক প্রত্যুত্তর দেবেন এটা নিশ্চিত।

বিডিএফ এর সাংগঠনিক সভায় এদিন উপস্থিত ছিলেন পিকলু দাস,মনোজ রায়,হারাধন দত্ত,নবারুণ দে চৌধুরী, দেবায়ন দেব ,হৃষীকেশ দে প্রমুখ।

বিডিএফ এর পক্ষ থেকে আহ্বায়ক দেবায়ন দেব এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.