লাম ডিং শিলচর পাহাড় লাইনে ধস তদন্তের দাবী আবিসা র
.
অতীতের ন্যায় এবারও বর্ষার শুরুতেই বিধ্বস্ত করে দিয়েছে ....বরাক উপত্যকার যোগাযোগের একমাত্র "লাইফ লাইন" লামডিং শিলচর রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে।
মাত্র কয়েক বৎসর আগে প্রায় ৬০০০হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শিলচর-লামডিং এই ব্রডগেজ রেল প্রকল্প (জাতীয় প্রকল্প)।
শিলান্যাস পর্বের শুরু থেকেই এই রেল প্রকল্প কে গ্রাস করে নিতে সচেষ্ট ছিল একটা অশুভ শক্তি।বরাক উপত্যকার ভিতরে গড়ে উঠা অশুভ শক্তির ইশারায় প্রায় নিরব সমর্থক ছিলেন তদানীন্তন বরাকের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। আর অপর দিকে নর্থ পাহাড়ে গড়ে উঠেছিল ভেঙের খাঁচার মতো জঙ্গি সংগঠন। চাঁদাবাজি -অপহরণ-নানাবিধ হুমকির ফলে ভারতবর্ষের উন্নত উন্নত মানের ঠিকাদার গোষ্ঠী প্রাণ রক্ষার্থে কাজ ফেলে রেখে নির্মাণ কাজে জড়িত লোকজন নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলো। জঙ্গি পনা-অশুভ শক্তির চক্রান্তে পাকাপোক্ত ভাবে হিমঘরে স্থান করে দেওয়া হয়েছিলো বরাক তথা পার্শ্ববর্তী রাজ্যের জনগণের স্বপ্ন লামড্রিং শিলচর ব্রডগেজ রেল প্রকল্পটিকে।
পরবর্তীতে অল বরাক ইয়ুথ স্টুডেণ্টস অ্যাসোসিয়েশন(অবিসা) ও বরাক উপত্যকার আপামর জনসাধারণের ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে প্রকল্পটি কে হিমঘরে স্থায়ী ঠিকানা থেকে টেনে টুনে ব্রডগেজ রেল প্রকল্পটিকে বাস্তবায়নে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উপর লাগাতার চাপ তৈরি করে কেন্দ্র সরকার কে বাধ্য করে।
২০০৭সাল থেকে কার্যত ওয়া্চ ডগ এর ভূমিকা পালন করে আসচ্ছিলো অবিসা। উপত্যকার জনগণের সাহায্য সহযোগিতা এবং সুপরামর্শে অবিসা প্রকল্পের নানা সমস্যা সময়ে সময়ে জনসমক্ষে তুলে ধরে এবং তাহা সমাধানে সরকার তথা রেল বিভাগের উপর চাপ সৃষ্টি করে।
২০১৪ সালে দিল্লীতে রাজনৈতিক পালাবদলের হাত ধরে এই প্রকল্পের রং ও বদলাতে শুরু করে। সিভিল ওয়ার্ক সম্পূর্ণ না করে রাজনৈতিক স্বার্থে ঘোষিত হয় ""মেগা ব্লক""।
CRS সুদর্শন নায়েকের তদন্ত রিপোর্ট কে বুড়োআঙ্গুল দেখিয়ে মালিগাঁওস্থিত রেল(নির্মাণ) বিভাগের আধিকারিকরা রাজনৈতিক মদতে রেল নির্মাণ বিভাগের দূর্নীতি-অর্থ নয়ছয় ইত্যাদি চাঁপা দিতে জোরজবরদস্তি জোড়াতালি দিয়ে প্রকল্পটি কে বাস্তবায়ন দেখিয়ে সম্পূর্ণ অর্থ আত্মসাতের লক্ষ্যে যাত্রী রেল চালিয়ে দেয়।
ফলস্বরূপ অতীতের ন্যায় এবারও বৃষ্টির শুরুতেই ধস নামে.. আবার ও মুখ থুবড়ে পড়ে বরাক উপত্যকার জনগণের স্বপ্নের এই রেল প্রকল্পটির""রেল যোগাযোগ"ব্যবস্থা।
বৃষ্টির শুরুতে রেল যোগাযোগের এহেন ভয়াবহ অবস্থা আবারও প্রমাণ করছে "প্রকল্পটি ঘিরে নিম্নমানের কাজ এবং আনকোরা ঠিকাদারি সিস্টেম।
পুরাতন মিটার গেজ রেলপথের পাহাড় সংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে পাহাড় থেকে বৃষ্টির জল নেমে রেললাইনের উপরে যাতে না পড়ে বা রেললাইনের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেই লক্ষ্যে পাহাড়ের উপর থেকে রেল লাইনের পাশ পর্যন্ত নির্মিত ছিল"পাথুরে নালা" এবং সেই নালা দিয়ে বৃষ্টির জল পাহাড়ের উপর গড়িয়ে রেল লাইনের পাশ দিয়ে পাহাড়ের একদম নীচে খালে গিয়ে পড়তো।
বৃটিশ কারিগরি প্রযুক্তি ব্যবস্থায় নির্মিত"আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে"এই পাহাড় লাইনে নব্বই দশকের আগে এমন ধস প্রবন ছিলোই না।
প্রায় ৬০০০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ব্রডগেজ নির্মাণের পরে প্রায় প্রতিবছরই বর্ষার মরসুমে বৃষ্টি হতেই শুরু হয়ে যায় ধস আর ধস,আজ এখানে তো কাল সেখানে।
খেলা একটাই শুধু স্থান/জায়গা ভিন্ন ভিন্ন।
বরাক উপত্যকা সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যের জনগণের যোগাযোগের একমাত্র লাইফলাইন এই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা কে সচল রাখতে অবিসা দাবি জানাচ্ছে.......
(১) রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ভরা বৃষ্টি মরসুমে সচল রাখতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বর্তমান ধস বিধ্বস্ত হারাঙ্গাজাও-জাটিঙ্গা লামপুর-র মধ্যবর্তী ১১০/৭ কিলোমিটার এলাকা শীঘ্র সংস্কার করা ।এবং
(২) ধসপ্রবণ এলাকায় রেল নির্মাণ বিভাগের কারিগরি কর্মী-ঠিকাদার সহ উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা পাহারা র ব্যবস্থা করা। এবং
(৩) নির্মাণ কালীন সময়ে সংঘটিত হওয়া দূর্নীতির উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে অবিসা।
শিলচর লামড্রিং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় মিটার গেজের শেষের দিকে শুরু হওয়া বা চলে আসা ধস ধস খেলা স্বপ্নের ব্রডগেজ ব্যবস্থায় মেনে নেওয়া যায় না। বর্ষা মরশুমে সড়ক এবং রেল উভয় যোগাযোগ ব্যবস্থা আজ বিপর্যস্ত,এটা শুধু এবারের নয়,প্রায় প্রতিবছরই এমন দিন দেখতে হয়েছে বরাক উপত্যকা বাসী জনসাধারণকে। যোগাযোগ ব্যবস্থার এহেন অবস্থা থেকে পাকাপোক্ত ভাবে বরাক বাসীকে মুক্ত করতে বরাক উপত্যকার জনগণকে পাশে নিয়ে আবারো ও পথে নামতে বদ্ধপরিকর অবিসা।
ইতি।
বাহারুল ইসলাম বড়ভূইয়া
মুখ্য-আহ্বায়ক
অবিসা--কেন্দ্রীয় কমিটি।
তারিখ--০১-০৫-২০২৪ইং।
কোন মন্তব্য নেই