Header Ads

উজান সাহিত্য গোষ্ঠীর ভাষা শহীদ দিবস উদযাপন

শ্রদ্ধার সঙ্গে গাম্ভীর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানে
"উজান সাহিত্য গোষ্ঠী' পালন করল ৬৪-তম ভাষা শহিদ দিবস
 সংবাদদাতা নয়া ঠাহর। তিনসুকিয়া 
প্রতিবারের মতো এবারেও ১৯শে মে, রবিবারে  ‘ভাষা শহিদ দিবস’ পালন করল   তিনসুকিয়ার  ‘উজান সাহিত্য গোষ্ঠী’ । উজান সাহিত্য গোষ্ঠীর আমন্ত্রণে ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ডে সমবেত হন সদস্য-সদস্যারা ছাড়াও শহরের সংস্কৃতি-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ী অনেকেই। 
গোষ্ঠীর সভাপতি সুজয় রায় সন্ধ্যা পাঁচটায় একাদশ শহিদের স্মরণবেদীতে প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ফুল ছড়িয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। তাঁকে সঙ্গ দেন সহ সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য, সম্পাদক ভানু ভূষণ দাস, সাংবাদিক কাজল চৌধুরী, সঙ্গীত শিক্ষক নির্মলেন্দু চট্টোপাধ্যায়, অধ্যাপক হিমাংশু বিশ্বাস , রঞ্জন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত সবাই। একই সময়ে উদ্বোধনী ১৯-শের গান ‘ডাকে ঐ একাদশ শহিদেরা ভাই’ গান করে শোনান সঞ্জয় গুহ, জীবন কৃষ্ণ সরকার, বিনায়ক সেনগুপ্ত, বর্ণালি সেনগুপ্ত, চন্দ্রা চক্রবর্তী, সম্রাট মুখার্জি, সুমিত ঘোষ ও পায়েল দাশ। তবলাতে সহযোগী দেবপ্রিয় চক্রবর্তী।  একই দল পরে আরও দুটি সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এর মাঝে সভাপতি সুজয় রায় সবাইকে স্বাগত জানিয়ে একটি ছোট্ট বক্তৃতা পরিবেশন করেন। সহ সভাপতি সুশান্ত কর এর পরে উনিশের তাৎপর্য, ৬০-৬১-র ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং এখন যখন একের পরে এক মাতৃভাষা মাধ্যমের সরকারি বিদ্যালয় বন্ধ হচ্ছে তখন মাতৃভাষা আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করে দুই চারটি কথা বলেন। একেবারে শেষে শহরের বিশিষ্ট নাগরিক শ্রমিক নেতা রঞ্জন চৌধুরীও এই নিয়ে কিছু কথা বলেন।
 বাকি পুরো অনুষ্ঠান যথারীতি সাজানো হয় কবিতায়, গানে ও নৃত্যে।  ভাষার গান, দেশের গান ও মানুষের প্রতিবাদের গানে মুখর হয়ে উঠে অনুষ্ঠান।  একক গান গেয়ে শোনায় শিশু শিল্পী টিউলিপ  দত্ত। আরও গান করেন চন্দ্রা চক্রবর্তী, বর্ণালি চৌধুরী, ও সাগ্নিক চক্রবর্তী। আরও গান করেন তুহিনা ভট্টাচার্য, মিতালি মালাকার, বর্ণালি চৌধুরী, তুহিনা ভট্টাচার্য, সঞ্জয় গুহ, লাবনী ঘোষ চক্রবর্তী , জীবন কৃষ্ণ সরকার ও অচিন্ত্য দেব। তাঁদের কারও সঙ্গে তবলাতে সঙ্গত করেন দেবপ্রিয় চক্রবর্তী, কাউকে অনুপম চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে   নিজের লেখা কবিতা পড়ে শোনান নির্মলেন্দু চট্টোপাধ্যায় ও মিস্টূ দত্ত। ভাষা আন্দোলন সংক্রান্ত কবিতা আবৃত্তি করে শোনান মাম্পী আচার্য, সুমিত ঘোষ, উজ্জয়নী চৌধুরী, নন্দিতা মুখার্জি, সুতনুকা ভট্টাচার্য প্রমুখ।  দুটি নৃত্যে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাকে মুগ্ধ করেন মঞ্জুশ্রী চক্রবর্তী ও জ্যোতি দেবনাথ। 
গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দীপ্রনীল শর্মা ও সুতনুকা ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানের শেষে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন গোষ্ঠীর সদস্য গোপাল মজুমদার।  অনুষ্ঠানে তিনসুকিয়া ও মাকুম থেকে  সত্তর আশিজন দর্শক শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন। শহরে এদিন সঙ্গীত বিদ্যালয়গুলোর গানের পরীক্ষা ছিল, আরও একটি সংগঠনের রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থাকাতে এর প্রভাব উজানের অনুষ্ঠানেও উপস্থিতির হারে পড়েছে। অন্যথা, উজানের অনুষ্ঠানে লোক সমাবেশ এর থেকে বহু বেশি হয়ে থাকে। এর মধ্যেও শহরের সবচাইতে দায়বদ্ধ অনুষ্ঠান এটিই ছিল। গত বিশ বছর ধরে এই দিনটিকে এতটা আন্তরিকতার সঙ্গে গোটা উজান অসমে আর কেউ পালন করেন না বললেই চলে। এটি একটি সামাজিক দুর্বলতাও বটে। 
এখানে উল্লেখ করা ভালো, যে প্রতি বছরের মতো এই বছরে ও একষট্টির ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত উজান-সদস্যা নীহারিকা দেবীর বাসভবনে উজান সদস্য-সদস্যা ও পরিবারের সবাই মিলে ঘরোয়া ভাবে একাদশ শহীদদের প্রতি একাদশ প্রদীপ-ধূপ জ্বালিয়ে সমবেত সঙ্গীত,প্রবন্ধ, কথা ও কবিতার মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উজান সভাপতি সুজয় রায়, ‘উজান’ পত্রিকা সম্পাদক সবিতা দেবনাথ, সদস্যা মাধুরী ভট্টাচার্য প্রমুখ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.