Header Ads

রামকৃষ্ণ মিশনের ভাবমূর্তি নষ্ট ও জমি দখলের পিছনে তৃনমূল ?

প্রসঙ্গ : রামকৃষ্ণ মিশনের জমি বেদখল  
 
  সন্ন্যাসীদের সাথে মমতা ব্যানার্জির যে তরজা চলছে সেটা অভূতপূর্ব । কিন্ত এটা হওয়ার ই ছিল। 

 তার আগে একটা গল্প বলি। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়াতে রামকৃষ্ণ মিশনের গল্প। এখানে রামকৃষ্ণ মিশনের নাম Vedanta society of southern California. 

এদের হাতে চারটি বিশাল মঠ আছে। প্রাইম লোকেশনে। হলিউড এ যেটি আছে ১৪ একরের ওপর। তার দাম হাজার হাজার কোটি টাকা। ট্রাবুকে ক্যানিয়ন এ আছে হাজার একরের পাহাড়।  তার শীর্ষে রামকৃষ্ণ মিশন। ক্যালিফোর্নিয়াতে যখন ছিলাম এটি আমার ফেভারিট জায়গা ছিল। অসম্ভব ভাল লাইব্রেরি - পাহাড়ের চূড়ায়। পাশে হ্রদ। Santa Barbara মিশনটিও পাহাড় শীর্ষে। প্রাইম রিয়াল এস্টেট। হাজার হাজার কোটি টাকার।

 প্রশ্ন হচ্ছে রামকৃষ্ণ মিশন এত দামী রিয়াল এস্টেট পেল কিভাবে? তারা কি কিনেছে ? না। এগুলো এসব দানের জমি। বড়লোকের দান। কেন তারা ছেলেমেয়েদের না দিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনে দান করে দিলেন? 

 আমি যখন এইসব মিশনে যেতাম , মহারাজদের মুখেই শুনেছি এই জমি টিকিয়ে রাখতে মিশনের প্রচুর খরচ। কারন দাতাদের নাতি পুতি ছেলেমেয়েরা মামলা করেছে। যুক্তি কি ? সন্ন্যাসীরা নাকি ব্ল্যাক ম্যাজিক দেখিয়ে এসব সম্পত্তি দখল করছে!

আসল সত্য কি ? অধিকাংশ বড়লোক দাতারা দেখেছেন তাদের ছেলেমেয়েরা তাদের সম্পত্তি নিয়ে লোভ লালসার তাড়নায় এত নিচে নেমেছে  , তারা নিজের ছেলেমেয়েদের ওপর বিরক্ত হয়েছেন।  উনারা রামকৃষ্ণ মিশনে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সবাই জানে রামকৃষ্ণ মিশনকে দান করলে সেই সম্পত্তি মানুষের কাজে লাগবে। কে চায় তার সারাজীবনের অর্জন নর্দমায় ফেলতে ? 

 শিলিগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখলের খবরে আমার সেই কুড়ি বছরের আগের স্মৃতি ফিরে এল। দাতারা রামকৃষ্ণ মিশনে দান করে যাতে তাদের কষ্টার্জিত সম্পত্তি তাদের বংশধররা লুঠ পাঠ না করে। যাতে সেটা সাধারন মানুষের উপকারে আসে। 

 তৃণমূলের রাজত্বে সমস্যা এটাই পুরো রাজ্যের প্রশাসন দুর্নীতি এবং দুষ্কৃতীদের অধীনে চলে গেছে। তাদের এখন এত সাহস তারা রামকৃষ্ণ মিশনে দান করা জমিও পুলিশ গুণ্ডা কাজে লাগিয়ে আবার দখল করার চেষ্টা করছে। রামকৃষ্ণ মিশনের মতন প্রতিষ্ঠানের জমি যেখানে বেদখল হয়ে যাচ্ছে গুন্ডাদের কাছে সেখানে সাধারন মানুষের সম্পত্তির নিরাপত্তা কিছু আছে কি ? 

 এই ঘটনাকে হিন্দু মুসলমান বিভাজনে টেনে লাভ নেই। মূল সমস্যা -- দুর্নীতি এখন এতই গভীরে মঠ মিশনের সম্পত্তিগুলোর দিকে দুর্নীতিবাজদের চোখ একদিন না একদিন যেত।  মুখ্যমন্ত্রীর সাথে মঠ মিশনের সংঘাত সেই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এটাও হতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে এই সংঘাত তৈরি করেছে প্রশাসনের দখল নেওয়া ক্রিমিনালরা।  মুখ্যমন্ত্রীকে ভুল ইনফরমেশন দিয়ে। যাতে এই সংঘাত তৈরি হয়। এবং তারা আরামে দখলদারি করতে পারে। আজকের পশ্চিম বংগ এ কিছুই অসম্ভব না। 

কিন্ত এর দায় মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি প্রশাসন কে দুর্নীতিবাজদের আখড়া বানিয়েছেন। এবার তারাই মুখ্যমন্ত্রীকে ম্যানিপুলেট করছে।  সেটাও হতে পারে। কিছুই বিচিত্র না এই বঙ্গের রাজনীতিতে।

আমার এই সন্দেহের মূল কারণ দুটি। মুখ্যমন্ত্রীর নিজের ইন্টেলিজেন্স বাহিনী আছে। এবার দেখুন দুটি ঘটনা একসাথে ঘটল

 এক , কার্তিক মহারাজ সম্বন্ধে তাকে ভুল ইনফরমেশন দিয়েছে তার নিজের ইন্টেলিজেন্স। 

  দুই   সেই ইন্টেলিজেন্স তাকে রামকৃষ্ণ মিশনে গুন্ডামি করে যে জমি বেদখলের চেষ্টা হয়েছে সেই খবর দেয় নি। ভোটের বাজারে এই  সেনসিটিভ ইস্যুতে তার ইন্টেলিজেন্স ঠিক খবর দেবে না ? 

 সুতরাং কেউ না কেউ পেছন থেকে খেলছে। টাকার হাত বদল হচ্ছে। 

 আমার সমস্যা অন্যত্র।  রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে আমি জানি এই মিশন গুলো বাঙালিদের মধ্যে মেধা তৈরির শেষ ফ্যাক্টরি।  এগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে।
বিপ্লব পাল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.