,রাম কে বাদ দিন নতুবা আপনাকে বাদ
'রামের জন্য দেশত্যাগ'
১৯৪৭- এর তখন প্রায় শেষ। ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খাঁ সাহেব তখন ওপারে । পাকিস্তানের নাগরিক। ধর্মসূত্রে নয়, জন্মসূত্রে ।*
*রেডিও পাকিস্তানের জন্য গান গাইলেন ওস্তাদ । রেকর্ডিং শেষে ফিকে হয়ে আসা রাত জুড়ে আবার তিনি একের পর এক সঙ্গীত সম্মেলনে । কখনো পেশোয়ার। কখনো করাচি ।
একদিন ফিরে এসে টেলিগ্রাম পেলেন, রেডিও পাকিস্তানের প্রোগ্রাম ডিরেক্টরের । খাঁ সাহেব যদি একবার অনুগ্রহ করে আসেন রেডিও স্টেশনে ।গেলেন ওস্তাদ।
সুগন্ধি চা আর একমুখ জর্দাঠাসা পানের পর মুখ খুললেন রেডিও-র কর্ণধার । একটা ছোট্ট অনুরোধ ওস্তাদজি, গানের মুখড়া যদি একটু বাদ দেন..খাঁ সাহেব বুঝলেন না ।
এবার কারণ ব্যাখ্যা ও রেকর্ডিং থেকে শোনানো হল চরাচর উন্মনা করা ঠুংরির প্রথম কলি ‘ইয়াদ পিয়া কি আয়ে, হায় রাম’ ! ‘হায় রাম’ এই দুটো শব্দ বাদ দিন ওস্তাদজি, দুটো শব্দ বাদ দিলে তো আপনার অনন্ত মুধভরা গান ফুরোবে না !*
*‘আপনারা রামকে বাদ দিন, আমি আপনাদের বাদ দিচ্ছি’ । সিংহ গর্জে উঠলো রেডিও স্টেশনে ।
পরের দিনই চিঠি লিখলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদকে । হৃদয় নিংড়ানো প্রেম, অপেক্ষা আর যন্ত্রণা দিয়ে যে গান রচিত হয়, তাকে রক্ষা করতে আমি ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের নাগরিক হতে চাই।
ঠিক এক পক্ষ কাল পর ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খাঁ সাহেব চিরদিনের জন্য জন্মভূমি পাকিস্তান থেকে এলেন কলকাতায়।
হ্যাঁ । এই কলকাতাতেই । কারণ এই শহরেই সুরের ভুবনে তখন অসুর আর শয়তানের প্রবেশ ছিল নিষেধ ।আজ ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খাঁ সাহেব এর কথা হঠাৎ মনে পড়ে গেল!
তাই কিছু কথা না লিখে পারলাম না!!!
আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই তাঁকে!!!
লিখলেন
কবিতা বসু।
কোন মন্তব্য নেই