Header Ads

বরাক উপত্যকা র প্রতি কংগ্রেস দলের বঞ্চনা সবার জানা


 নয়া ঠাহর. ,silchar 
আসামে বিভাজনের রাজনীতির হোতা কংগ্রেস দল,বরাক উপত্যকা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছে কংগ্রেস আমলে- তাই বরাক পৃথকীকরণ নিয়ে ভুপেন বরার বক্তব্য বরাকের স্বার্থে নয় সম্পুর্ন দলীয় স্বার্থে - বিডিএফ।

বরাক উপত্যকায় সাম্প্রতিক সফরে এসে আসাম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরা বলেছেন বরাক পৃথকীকরণের ইস্যুকে উস্কে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিভাজনের রাজনীতি ও ষড়যন্ত্র করছেন এবং তিনি বরাকবাসীকে এসবে বিভ্রান্ত না হবার আহ্বান জানিয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতির এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।

বিডিএফ কার্যালয়ে এদিন সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে পৃথকীকরণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য কি করে ষড়যন্ত্র হল এটা তাদের বোধগম্য হয়নি।‌ তিনি বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হয়তো হিমন্ত বিশ্বশর্মা বরাকবাসীর ইচ্ছা অনিচ্ছা নিয়ে ওয়াকিবহাল । অনেকেই পৃথকীকরণ চাইছেন এটা অনুধাবন করেই তিনি বলছেন যে যদি অধিকাংশ বরাকবাসীর চাহিদা পৃথকীকরণ হয় তবে তাঁর সরকার তাতে আপত্তি করবে না। তাই এটাকে ষড়যন্ত্র ইত্যাদি বলা তাঁর মোটেই ঠিক হয়নি।

প্রদীপ বাবু এদিন আরো যে যদি বিভাজনের কথাই বলা হয় তবে আসামে সেই রাজনীতির হোতা কংগ্রেস দলই। তিনি বলেন  কংগ্রেসের একপেশে জাতিয়তাবাদী রাজনীতির জন্যই আসাম থেকে পৃথক হয়ে তৈরি হয়েছে মেঘালয়, মিজোরাম, অরুনাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড রাজ্য। যদি এই ধরণের জাতিয়তাবাদকে প্রদেশ কংগ্রেস মদত না দিত তাহলে আসাম ভেঙে টুকরো টুকরো হতনা।  শুধু তাই নয় কংগ্রেস আমলেই পৃথক বোরো টেরিটোরিয়েল কাউন্সিল, ডিমা হাসাও,কার্বিয়াংলং অটোনমাস কাউন্সিল ইত্যাদি তৈরি হয়েছে। কাজেই বিভাজন নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কিছু বলা সাজেনা।

বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক এদিন আরো বলেন যে বরাকবাসী কি সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা নিয়েও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য করার অধিকার নেই। কারণ বরাক উপত্যকা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছে কংগ্রেস আমলেই। তিনি বলেন ১৯৬১ সালের বিতর্কিত ভাষা সার্কুলার বরাক বাসীর উপর চাপিয়ে দেবার চক্রান্ত করেছিল দিশপুরের কংগ্রেস সরকার। ভাষা শহিদদের উপর গুলি চালনার আদেশও দেওয়া হয়েছিল কংগ্রেস সরকারের পক্ষ থেকে। কেন্দ্রীয় সরকার তথা রেলমন্ত্রকের সম্মতি থাকা সত্ত্বেও ' ভাষা শহিদ স্টেশন ' নামকরণ আটকে রেখেছিলেন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। প্রয়াত কংগ্রেস সাংসদ সন্তোষমোহন দেবের উদ্যোগে বরাক উপত্যকার রাস্তাঘাটের উন্নয়নে ডোনার মন্ত্রক ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার পরও নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে সেই টাকা বরাকের বদলে ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকায় ব্যায় করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তিনি বলেন এই তালিকা শেষ হবেনা। কংগ্রেসের চক্রান্তেই নিগ্রিমস হাসপাতাল শিলচরে প্রস্তাবিত হবার পরও শিলংয়ে স্থানান্তরিত হয়েছিল।চোদ্দ বছর ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে ভাবে ব্রডগেজের কাজ ঝুলিয়ে রেখেছিল কংগ্রেস। অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্বপ্ন শিলচর সৌরাস্ট্র মহাসড়ক শিলচরের বদলে সদিয়া থেকে শুরু করতে হবে বলে আব্দার জানিয়েছিলেন তরুণ গগৈ। এমনকি কাজ শুরু হওয়ার পরও বালাছড়া থেকে হারাঙ্গজাও অব্দি ৩১ কিলোমিটারেল কাজ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দোহাই দিয়ে অনৈতিক ভাবে চারবছর আটকে রেখেছিলেন তিনি। বিজেপি সরকারের আমলে এই দুই বাধা কেটেছে। ব্রডগেজে বহির্ভারতের সাথে যুক্ত হয়েছে বরাক।‌ প্রদীপ বাবু বলেন তাঁরা বরাক বঞ্চনা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব থাকলেও বরাকের স্বার্থে বিজেপি সরকারের এইসব পদক্ষেপকে মান্যতা দিতে কখনো কুন্ঠিত নন। তাই বরাক নিয়ে ভূপেন বরার এই মন্তব্য যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা বরাকবাসী ঠিকই বুঝতে পারছেন।

বিবিএস মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য এদিন বলেন যে বিডিএফ বরাক পৃথকীকরণের ডাক দেবার পরই ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার কিছ বিজেপির মেরুদন্ডহীন বাঙালি নেতারা বিডিএফ কর্মকর্তাদের কুৎসা রটিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন যে ইদানীং সিলিং খাস জমিতে বসবাসকারী যে সমস্ত বাঙালিরা তাঁদের জমি পাট্টা জমিতে রুপান্তরের জন্য বসুন্ধরা এ্যপের মাধ্যমে আবেদন জানিয়েছিলেন তাদের অধিকাংশের আবেদন খারিজ করেছে প্রশাসন। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে গত ৭৫ বছর ধরে অথবা তিন প্রজন্ম ধরে আসামে বাস করার নথি তারা দেখাতে পারেন নি। অথচ এরা সবাই বৈধ নাগরিক। ১৯৭১ এর আগে থেকেই আসামে রয়েছেন। আসাম চুক্তির ছয় নং দফাতে ভুমিপুত্রদের জন্য জমির অধিকার সংরক্ষণ করার প্রস্তাব রয়েছে। যদিও এই ব্যাপারে গঠিত কমিটি এখনো কোন সুপারিশ করেনি কারণ ভূমিপুত্রের সংজ্ঞাই ঠিক হয়নি। জয়দীপ বলেন জমির পাট্টার ব্যাপারে ১৯৪৮ সাল থেকে আসামে থাকার যে নথি বাঙালিদের দেবার কথা বলা হচ্ছে এই ব্যাপারে কিন্তু অসমিয়া দের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তাই এটা বকলমে ছয় নং ধারা কার্যকর করার চক্রান্ত এবং আসামের বাঙালিদের জন্য অশনিসংকেত।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.