Header Ads

বরাক পৃথক রাজ্য ছাড়া আর্থ , সামাজিক ,রাজনৈতিক সমস্যা থেকে যাবে. তাই বরাক এর দাবি

*কেন চাই পৃথক বরাক* 

                  *পর্ব -১* 

স্বাধীনতার পর থেকেই দিশপুরের শাসকগোষ্ঠীর বিমাতৃসুলভ আচরণ,ভাষিক আগ্রাসন এবং বঞ্চনা, বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে বরাক উপত্যকা। এতে শেষতম সংযোজন সাম্প্রতিক ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া যাতে বরাকের দুটি বিধানসভা আসন কর্তন করে এই উপত্যাকার সীমিত রাজনৈতিক আওয়াজকে রুদ্ধ করার চক্রান্ত করা হয়েছে।
এই ধরনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার বরাক পৃথকীকরণের দাবি বিভিন্ন মহল থেকে উত্থাপিত হয়েছে কিন্তু তাঁর সাথে যুক্ত রয়েছে কিছু প্রশ্ন,কিছু দোলাচল। সে সবেরই উত্তর খুঁজতে *বরাক* *ডেমোক্রেটিক* *ফ্রন্ট* এর পক্ষ থেকে এই নিবেদন।

 প্রসঙ্গ -
১. বরাকের হিন্দুদের একাংশ ভাবছেন যে পৃথকীকরণ হলে এখানে মুসলমানদের আধিপত্য বিস্তৃত হবে, তাঁরা ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হবেন, এবং এই ভুখন্ড শেষে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হবে।

 *এই প্রসঙ্গে আমাদের নিবেদন -* 

ভারত সরকারের জনগননা বিভাগের অনুমিত মোট জনসংখ্যার তথ্য অনুযায়ী ২০২৬ সালে বরাকে মোট জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ হিন্দু ও ৪৮ শতাংশ মুসলমান থাকবেন।মোট জনসংখ্যা হবে ৪১,৮১,৩৩৭। যদি হিন্দুরা মনে করেন যে এতদিন দিশপুরের অভিভাবকত্বের ফলেই মুসলমানদের আধিপত্য হয়নি তবে তা বরাকের হিন্দুদের পক্ষে অপমানজনক নয় কি ? ধর্মনিরপেক্ষ স্বাধীন ভারতের নাগরিক হয়েও যদি বরাকের হিন্দুদের নিরাপত্তা,সুরক্ষার জন্য অন্য জাতির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় তবে তারচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় আর কি হতে পারে ? এই শক্তি বরাকের হিন্দুদের অবশ্যই রয়েছে। দেশভাগের প্রেক্ষিত সম্পুর্ন ভিন্ন ছিল। দুই সম্প্রদায়ের নেতারা একমত হয়েছিলেন বলেই দেশভাগ হয়েছিল। ভারতীয় সংবিধান এখন অব্দি ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করাকে মেনে নেয়না।‌তাই কোন রাজ্যে  একটি সম্প্রদায় ধর্মের ভিত্তিতে বিশেষ সুবিধা নিয়ে নেবে,অন্য সম্প্রদায়কে বঞ্চিত করবে এসব আশঙ্কা ভিত্তিহীন। বরাকের হিন্দুদের যদি এই ব্যাপারে  কোন সন্দেহ থাকে তবে  তাদের নিজবলে বলীয়ান  হবার,  নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শিক্ষা নিতে হবে।মনে রাখতে হবে পরনির্ভরশীলতার অন্য নামই পরাধীনতা। বরং আসামের সঙ্গে থাকলেই অসমিয়া আধিপত্যবাদীরা কখনো হিন্দু, কখনো মুসলমানদের প্রাধান্য দিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে উস্কাতে থাকবে।যেমন তাঁরা আগেও কয়েকবার করেছে।

প্রসঙ্গ -
২. একই ভাবে এই উপত্যাকার বাঙালি মুসলমান সম্প্রদায়ের একাংশ ভাবছেন যে পৃথকীকরণ হলে আসাম সহ উত্তর পূর্বের নিপীড়িত বাঙালি হিন্দুদের অনেকেই এই উপত্যাকায় স্থায়ী বসবাসের জন্য চলে আসবেন। এছাড়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বাস্তবায়ন হলে দলে দলে বাঙালি হিন্দুরা বাংলাদেশ থেকে এই উপত্যাকায় এসে আশ্রয় নেবেন। এবং  সংখ্যাধিক্যের সুযোগ নিয়ে তাঁদের সামগ্রিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করবেন।

 *এই প্রসঙ্গে আমাদের নিবেদন -* 

এই ব্যাপারেও প্রায় একই কথা প্রযোজ্য। একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাস্ট্রে ধর্মের ভিত্তিতে বঞ্চনা,বৈষম্য সংবিধান বিরোধী।যদি এমন অপপ্রয়োগ করা হয়ে থাকে তবে তা এখনো যেমন হচ্ছে, আগামীতেও একই হবে।এটা নির্ভর করবে বরাকবাসী যাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করবেন তাদের শুভবুদ্ধি এবং শাসন দক্ষতার উপর। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা বা উত্তর পূর্বের অন্যান্য রাজ্যের বাঙালি হিন্দুরা তাদের স্থানীয় জীবিকা,স্বাচ্ছন্দ্য  ইত্যাদি বিসর্জন দিয়ে বরাকে চলে আসবেন এই ধারণা অমূলক। আর তেমন হলে বাঙালি মুসলমানরাও তো আসতে পারেন। আর যদি উভয় সম্প্রদায়ের কেউ নিপীড়িত হন তবে তাঁর দায়িত্ব ভারত সরকারের, বরাকের নয়।

এছাড়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ২০১৪ সালের ভোটার তালিকায়  যারা অন্তর্ভুক্ত তারা এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অব্দি সবাই ভারতের বৈধ নাগরিক এটাই হোক আমাদের সিদ্ধান্ত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.