Header Ads

বাঙালি শিল্পপতি Bablu Maiti মহারাষ্ট্রে গিয়ে মহারাষ্ট্র রত্ন পুরস্কার পেয়েছেন

নয়া ঠাহর প্রতিনিধি, পুনে : কারো ভালো  করতে না  পারি, কারোর খারাপ করবো না, টাকার পেছনে নয় কাজের পেছনে দৌড়াব - এই নিরেট সত্য কথাগুলি মেনে চলে  একজন সফল উদ্যোগপতি হলেন  বাবলু মাইতি। পশ্চিমবঙ্গের পাঁশকুঁড়া থানার পূর্ব বাকুলদা গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান তিনি । পরিবারের আর্থিক অনটনের কারনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পাননি জীবনে ৷ বোনের বিয়ের জন্য ব্যাংক থেকে নেওয়া ৬ হাজার টাকা ঋন শোধ করতে কিশোর বয়সে বাড়ি ছাড়তে হয় বাবলু বাবুকে। ১৫ বছর বয়সে জীবিকার সন্ধানে বাড়ি থেকে বহুদূরে পুণে শহরে মাত্র এক হাজার টাকা বেতনে একটি প্লাস্টিক কোম্পানিতে কাজ শুরু করা বাবলু মাইতি এখন বিশ্বকর্মা প্লাস্টিক সংস্হার মালিক। সম্প্রতি তিনি পেয়েছেন ভারতশ্রী রাষ্ট্রীয় সন্মান৷ জানুয়ারীতে মহারাষ্ট্র রত্ন সন্মানে তাকে ভূষিত করেছে  মহেশেত্বা নামের মহারাষ্ট্রের এক প্রতিষ্ঠান। পুণেতে গিয়ে দিনে ১/২ টা বড়াপাও খেয়ে দিন কাটানো বাবলু মাইতি স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি। অল্প সময়ের মধ্যেই কোম্পানির মেশিন অপারেটর ও পরে কোম্পানির ম্যানেজারের দায়িত্ব পান তিনি। পরে আরেকটি কোম্পানিতে কিছুদিন কাজ করার পর মাত্র উনিশ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে ২০০৭   তৈরি করেন নিজের সংস্হা বিশ্বকর্মা প্লাস্টিক। সেই থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি বাঙালী উদ্যোগপতি বাবলু মাইতিকে। ২০১১ সালে পুণের কোরেগাওঁ ভীমা অঞ্চলে জায়গা কিনে তৈরি করেন নতুন কারখানা৷ ২ বছরে ব্যবসায়  দারুন সফল হয়ে  ২০১৩ সালে পুণের খারাডি অঞ্চলে নিজস্ব বাড়ি তৈরি করেন। নিজের ব্যবসার পাশাপাশি স্ত্রী জয়ন্তী মাইতিকে স্বনির্ভর মহিলা হিসাবে সমাজে  প্রতিষ্ঠিত করতে স্ত্রীকে তৈরি করে দেন মা কালী পলিমার্স নামের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। নিজে  উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ না পাওয়ায় দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করার স্বপ্নে বিভোর বাবলু বাবু বড় মেয়েকে উচ্চশিক্ষিার জন্য  আমেরিকায় পাঠিয়েছেন গত বছর। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েই শুধু নিজের পরিবারের কথা না ভেবে ভাবতে শুরু করেন বিপন্ন মানুষদের কথাও। ২০১৮ সালে সম মনস্ক অন্য কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তুলেন সামাজিক সংস্থা - অগ্রদূত বঙ্গসমাজ। সংস্থার সভাপতি হিসাবে মানুষের প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। করোনা অতিমারির সময়ে পাঁচ হাজার গরীব পরিবারকে দিয়েছেন খাদ্য সামগ্রী। বহু পরিযায়ী শ্রমিককে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়েছেন নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে। পুনের খারাডি অঞ্চলে বড়সড় দুর্গাপূজা করেন বাবলু মাইতিরা৷ এবারও পুনেতে সবচেয়ে বড় দুর্গাপূজার আয়োজন করছে তাদের সংস্থা - অগ্রদূত বঙ্গসমাজ। নিজের সাফল্যের জন্য পাওয়া দুইটি পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করেছেন পরিবার ও কারখানার কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি। ভবিষ্যতে ও বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান শূন্য থেকে নিজের জীবন শুরু করা এই বাঙালী উদ্যোগী।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.