ovishopto এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিযায়ী শ্রমিক দের kanna chabi. প্রথম শ্রেণী এসি, ২ এসি, ৩ এসি, স্লিপারের পর জেনারেল সেকেণ্ড ক্লাস। ট্রেন স্টেশনে ঢোকার অনেক আগেই একদল মানুষ ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে, থামতে না থামতেই চলে ঠেলাঠেলি। আমরা বিরক্ত হই, খিস্তি করতে করতে পাশ কাটিয়ে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় নিজেদের রিজার্ভড সিটে বসে পড়ি। সেকেণ্ড ক্লাস জেনারেলের টিকিটে নাম থাকে না, PNR নম্বর নেই। রেলের খাতায় ওদের নাম বা হিসেব থাকে না – ওরা কারা? ওরা রাস্তা বানায়, ড্রেন পরিষ্কার করে, ধান কাটে, রান্না করে, মোট বয়, রিক্সা টানে, পরিয়ায়ী শ্রমিক। ওরাই রাষ্ট্র গড়ে, আর ওরাই বেনামী লাশ। কেন্দ্র ১০ লক্ষ টাকা দেব মৃতদের, কিন্তু ওদের পরিচয়পত্র মিলবে কী করে? দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া লাশের ভিড়ে ওদের নাম, ধর্ম, জাত কিছুই জানা যাবে না, জীবনের বিনিময়ে ভিক্ষের টাকাটুকুও পাবে না ওদের পরিবার। শ্রেণী অবধারিত। মৃত্যুর পরেও।
শুধুমাত্র আইআইটির ইঞ্জিনিয়ার নন, ইউপিএসসি তে ৩৪নং স্থান অর্জন করে IAS অফিসার হয়েছিলেন। গতকাল সকাল ৫ টা থেকে রাত ১১ টা, ঠাঁয় পড়ে ছিলেন দুর্ঘটনাস্থলে! খাওয়া, ঘুম ভুলে...এই প্রখর রোদে। এর আগে কত রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, রেলমন্ত্রীরা ঘটনাস্থলে এসেছেন-গেছেন, এইভাবে একটানা কেউ থেকেছেন? ওই সব কথায় কাজ নেই। রাজনীতি করতে হবে না? সারাদিন দুর্ঘটনা নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে? অশ্বিনী বৈষ্ণব সত্যিকারের রাজনীতিবিদ হতে পারলেন না, হতাশ করলেন রাজনৈতিক কারবারিদের!
ছবিটা দেখছেন? খুব চেনা ছবি। আপনি, আমি, আমাদের মতো অজস্র সাধারণ ভারতীয় স্বজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় এভাবেই বসে থেকেছি, বসে থাকি, কোনও না কোনও হাসপাতালের বাইরে বা অন্য কোনও খানে। উৎকণ্ঠিত, বিমর্ষ মুখে। ফারাকটা হচ্ছে - ইনি অশ্বিনী বৈষ্ণব, ভারতীয় রেলমন্ত্রী। চাইলে হেলিকপ্টার চেপে দুর্ঘটনাস্থলে এসে, আমলা-কর্মচারীদের দু'চারটে আদেশ দিয়ে, মিডিয়াকে কয়েকটা বাইট দিয়ে, কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আওড়ে, কিছু বিরোধীদের বিরুদ্ধে 'চক্রান্তের' দোষারোপ করে, কয়েকজন অফিসারকে সাসপেন্ড করে কেটে পড়তে পারতেন। কিন্তু করেননি।
কোন মন্তব্য নেই