tinsukia তে উজানে সাহিত্য গোষ্ঠীর ভাষা শহীদ দিবস উদযাপন
শ্রদ্ধার সঙ্গে গাম্ভীর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানে
"উজান সাহিত্য গোষ্ঠী' পালন করল ৬৩-তম শহিদ দিবস
প্রতিবারের মতো এবারেও ১৯শে মে, শুক্রবারে ‘ভাষা শহিদ দিবস’ পালন করল তিনসুকিয়ার ‘উজান সাহিত্য গোষ্ঠী’ । উজান সাহিত্য গোষ্ঠীর আমন্ত্রণে ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ডে সমবেত হন সদস্য-সদস্যারা ছাড়াও শহরের সংস্কৃতি-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ী অনেকেই।
গোষ্ঠীর উপ-সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য সন্ধ্যা পাঁচটায় একাদশ শহিদের স্মরণবেদীতে প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ফুল ছড়িয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। তাঁকে সঙ্গ দেন উপস্থিত সবাই। একই সময়ে উদ্বোধনী ১৯-শের গান ‘ডাকে ঐ একাদশ শহিদেরা ভাই’ গান করে শোনান তুহিনা ভট্টাচার্য, জীবন কৃষ্ণ সরকার, বিনায়ক সেনগুপ্ত, বর্ণালি সেনগুপ্ত। তাঁদের গিটারে সঙ্গ দেন শুভঙ্কর ভট্টাচার্য ও তবলাতে রতন দেব।
এদিনে বিশেষ বক্তৃতা করবার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল শহরের দুর্গাবাড়ি শিশু বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক জগদ্বন্ধু বিশ্বাসকে। তাঁকে একটি ফুলাম গামোছা দিয়ে বরণ করেন বর্ণালি সেনগুপ্ত। কিন্তু সেই ভাষণের আগে স্বাগত ভাষণ করেন এবং দিনটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন উপ-সভাপতি সুশান্ত কর। তাঁর পরেই অতিথি জগদ্বন্ধু বিশ্বাস "সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার হালহকিকত এবং মাতৃভাষা শিক্ষার আশা-হতাশার কাহিনি' নিয়ে একটি ছোট্ট বক্তৃতা প্রদান করেন।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে মাতৃভাষা অধ্যয়নের গুরুত্ব নিয়ে ছোটো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সুজিৎ কুমার দে।
অনুষ্ঠানে এর পরে প্রশান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার বই ‘প্রেরণা’ উন্মোচন করেন অতিথি জগদ্বন্ধু বিশ্বাস। তাঁকে সঙ্গ দেন সুশান্ত কর, ভানু ভূষণ দাস, তুহিনা ভট্টাচার্য, পার্থ সারথি ভট্টাচার্য প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে একক গান গেয়ে শোনায় শিশু শিল্পী টিউলিপ দত্ত ও সাগ্নিক চক্রবর্তী। আরও গান করেন তুহিনা ভট্টাচার্য, মিতালি মালাকার, বর্ণালি চৌধুরী, বর্ণালি সেনগুপ্ত ও তাঁর সন্তান বিনায়ক সেনগুপ্ত, শুভঙ্কর ভট্টাচার্য, পৌষালি কর, শীলা দেব দে সরকার এবং জীবন কৃষ্ণ সরকার। এদের কাউকে কাউকে তবলাতে সহযোগ করেন রতন দেব, গিটারে সহযোগিতা করেন শুভঙ্কর ভট্টাচার্য, হারমোনিয়ামে জীবন কৃষ্ণ সরকার।
সুস্মিতা ঘোষ ভূপেন হাজরিকার "বিস্তির্ণ দুপারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও' গানে নৃত্য পরিবেশন করে।
নিজের লেখা কবিতা পড়ে শোনান অধ্যাপিকা শেলী দত্ত, ভানু ভূষণ দাস, সবিতা দেবনাথ , নীহারিকা দেবী, পার্থ সারথি দত্ত, স্বস্তি সাধন চক্রবর্তী প্রমুখ। পৌষালি করও জয় গোস্বামীর একটি কবিতা আবৃত্তি করে নিজের গান পরিবেশনের আগে।
গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ত্রিদিব দত্ত। অনুষ্ঠানের শেষে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন গোষ্ঠীর সদস্য গোপাল মজুমদার।
এখানে উল্লেখ করা ভালো, যে প্রতি বছরের মতো এই বছরে ও একষট্টির ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত উজান-সদস্যা নীহারিকা দেবীর বাসভবনে উজান সদস্য-সদস্যা ও পরিবারের সবাই মিলে ঘরোয়া ভাবে একাদশ শহীদদের প্রতি একাদশ প্রদীপ-ধূপ জ্বালিয়ে সমবেত সঙ্গীত,প্রবন্ধ, কথা ও কবিতার মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। স্বরচিত কবিতা পড়েন নীহারিকা দেবী, দীপ্তি শর্মা, ভানু ভূষণ দাস, সবিতা দেবনাথ, বক্তব্য রাখেন মাধুরী ভট্টাচার্য। সুব্রত, ঝুমা, মণি দেবনাথ সহ অন্যান্যরা মিলে অনুষ্ঠানটিকে সঙ্গীতমুখর করেন।
কোন মন্তব্য নেই