বরাকে র ,বিজেপি বিধায়কদের ভূমিকা বরাক বিরোধী এক মাত্র কমলাখ্য দে পূর্ন সমর্থন করা যায় :বিডি এফ
নয়া ঠাহর :silchar
বাংলাকে সহযোগী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির প্রশ্নে বিধানসভায় বরাকের বিজেপি বিধায়কদের ভূমিকা ধিক্কারযোগ্য, বিধায়ক কমলাক্ষ্যের দাবিকে পূর্ণ সমর্থন জানাল বিডিএফ।
রাজ্যের ৩০ শতাংশ জনগনের মাতৃভাষা বাংলা কে সরকারি সহযোগী হিসেবে স্বীকৃতির জন্য বিধানসভায় আর্জি জানিয়েছিলেন করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ্যে দে পুরকায়স্থ। কিন্তু তার সরাসরি জবাব না দিয়ে যেভাবে ব্যাপারটি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং যেভাবে বরাকের বিধায়করা এর প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এবার সরব হল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন বিধায়ক কমলাক্ষ্য বাংলাকে সহযোগী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যে আবেদন জানিয়েছেন তা সঙ্গত । তিনি বলেন বোরো জনগোষ্ঠীর সংখ্যা পাঁচ শতাংশ। তাঁদের ভাষাকে সহযোগী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এটা একটি উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ। কিন্তু এক কোটি জনসংখ্যার বাঙালিদের ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে সরকারের এতো অনীহা কেন তা কোনভাবেই বোধগম্য নয়। তিনি বলেন এটাই প্রমাণ করে যে এই বিজেপি সরকার ও দল আদ্যন্ত বাঙালি বিরোধী। প্রদীপ বাবু বলেন যে তারচেয়েও বড় ব্যাপার হচ্ছে বরাকের বিজেপি বিধায়করা যেভাবে কমলাক্ষ্যের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন তাতে তাঁরা স্তম্ভিত। তিনি বলেন এরমধ্যে যারা বাঙালি বিধায়ক রয়েছেন বরাক বাসীকে তাঁদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করে রাখা জরুরী।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক এদিন আরো বলেন যে বোরো আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাঁদের স্বীকৃতি দিয়ে সরকার তাদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে অনুদান দিয়েছে। আসাম আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন সেই ৭৬৭ জনের পরিবারকেও একইভাবে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৯৬১ এর বাঙালা ভাষার জন্য শহীদদের আর্থিক অনুদান তো দূরস্থান,এখন অব্দি সরকারি স্বীকৃতি অব্দি মেলেনি । এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণের ব্যাপারটি বিভিন্ন অজুহাতে আজ অব্দি আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন বিজেপির বাঙালি ভোটারদের এটা বুঝতে হবে যে সরকার তাদের শুধু ভোটের স্বার্থে ব্যবহার করছে ,প্রকৃত উন্নয়নে কোন উদ্যোগ নেই,নাহলে বরাকের চাকরি প্রার্থীদের এভাবে বঞ্চিত হতে হতনা। এসবের জবাব দেবার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন যে মন্ত্রী পীযুষ হাজারিকা বলেছেন বিধানসভায় বাংলায় ভাষন দেওয়ার অনুমতি রয়েছে। তিনি বলেন যে বাংলাকে সহযোগী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হলে বিধানসভায় এই মর্মে বিল পাস করে সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হয়। মন্ত্রী কি সেই বিজ্ঞপ্তির প্রতিলিপি দেখাতে পারবেন ? তিনি বলেন বরাকের যেসব বিধায়করা নিজেদের চাকরি বাঁচাতে এই প্রস্তাবের বিপক্ষে সরব হয়েছেন তাঁদের ভুমিকায় সবাই লজ্জিত । এই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন যে এই ব্যাপারে কোথায় গেলেন প্রাক্তন বাঙালি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব ? তার উদ্যোগে নবগঠিত বাংলা সাহিত্য সভা , আসামের কর্মকর্তাদেরও এই ইস্যুতে কোন প্রতিক্রিয়া নেই কেন ? তিনি বলেন বিডিএফ কমলাক্ষ্য দে পুরকায়স্থের প্রস্তাবকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে এবং অবিলম্বে বাংলাকে সহযোগী ভাষার স্বীকৃতি দেবার দাবি জানাচ্ছে।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের আরেক আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে বলেন
করিমগঞ্জের বিধায়কের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বরাকের বিধায়করা যেভাবে চাটুকারিতার পরিচয় দিয়েছেন বিডিএফ তীব্র ভাষায় তার নিন্দা জানাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে লক্ষীপুরের বিধায়ক বাঙালি নন। তিনি প্রকৃতপক্ষে উত্তরপ্রদেশের এবং বাঙালিদের স্বার্থে তাঁকে কখনোই মুখ খুলতে দেখা যায়নি। তিনি বলেন যখন বাঙালির ভাষা, কৃষ্টি সংস্কৃতি রক্ষার্থে একজন বিধায়ক আবেদন রাখছেন বিজয় মালাকার সহ বিজেপির বাঙালি বিধায়করা যেভাবে তার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন এসবকে বরাকের বাঙালিরা কখনই মেনে নেবেননা এবং আগামীতে ভোটের বাক্সে তাঁদের উপযুক্ত জবাব পেতে হবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেন তিনি।
বিডিএফ এর পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন যুবশাখার আহ্বায়ক দেবায়ন দেব।
কোন মন্তব্য নেই