বিপ্লবী উল্লাস কর দত্তের জন্মদিন পালন শিলচরে
নয়া ঠাহৰ ,শিলচর :আজ ছিল বিপ্লবী উল্লাস কর দত্তের জন্মদিন। বিপ্লবী ঊল্লাসকর দত্তের প্রতিমূর্তির সামনে উনার জন্ম দিন উপলক্ষে সকাল আট ঘটিকায় অনুষ্ঠানের সূচনা হয় প্র দী প প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন নীলাঞ্জন পাল,
অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করেন বিপ্লবী ঊল্লাশকর দত্ত স্মৃতি রক্ষা কমিটির কার্যকরী সভাপতি শ্যামল কান্তি দেব । এই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের জীবন নিয়ে এবং স্বাধীনতার যুদ্ধে যারা আত্মবলিদান দিয়েছিলেন , বছরের পর বছর আন্দামানের সেলুলার জেলে অকথ্য নির্যাতনের স্বীকার হয়ে এই স্বাধীনতা আমাদের কে উপহার স্বরূপ দিয়ে গেছেন তাদের স্মরনে এনে তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে প্রবীর কুমার রায় চৌধুরী, পীযুষ কান্তি চক্রবর্তী , দীপঙ্কর চন্দ্ , শেখর পাল চৌধুরী ,সাধন পুরকায়স্থ , এন আর পাল এবং সভাপতি শ্যামল কান্তি দেব গন।
শিলচরের শ্যামাপ্রসাদ রোডে অবস্থিত বিপ্লবী ঊল্লাসকর দত্তের প্রতিমূর্তিতে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস দত্ত শিলচর গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার দেব এবং কিরণ রাস সহ স্থানীয় অনেক বিশিষ্ট জনেরা। বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের জীবন নিয়ে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন বিজন বিশ্বাস দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করেন মলয় ভট্টাচার্য ।এই বিপ্লবী ঊল্লাসকর দত্ত বর্তমান বাংলাদেশের কুমিল্লা কালিকচ্ছ গ্রামে ১৬/০৪/১৮৮৫ সনে জন্মগ্ৰহণ করেন। এন্ট্রান্স পাশ করে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যয়ন করেন। অধ্যয়ন কালে জনৈক অধ্যাপকের ভারতীয় সম্পর্কে কটুক্তি করায় তাঁর মধ্যে ইংরেজ বিদ্বেষ মনোভাব বৃদ্ধি পায় । ১৯০৫ সালে বঙ্গ ভঙ্গের বিরোধিতা করতে গিয়ে বিপ্লবী দলে যোগ দান করেছিলেন। ১৯০৮ সালে বোমা তৈরির মামলায় ফাঁসির সাজা হয় এবং উচ্চ আদালতে আপিল করার পর ফাঁসির সাজা মাপ করে আন্দামানের জেলে তাঁকে পাঠানো হয় এবং শুরু হয় অকথ্য নির্যাতন। ফলস্বরূপ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন । ঊল্লাসকর দত্ত
১৯২০ সালে অনেক কষ্টে জেল থেকে মুক্তি পান এবং স্বাধীনতার পর খন্ডিত বাংলা ত্যাগ করে ১৯৪৮ সনে
শিলচরে এসে আমৃত্যু উনার স্ত্রী লীলা দেবির সঙ্গে বসবাস করেন।১৯৬৫ সনের ১৭ই মে ইহলোক ত্যাগ করে পরলোক গমন করেন এই মহান দেশ সেবক।স্বাধীনতার যুদ্ধে যোগদান করা সংগ্রামীদের সরকার পেনশনের ব্যবস্থা করলেও বিপ্লবী ঊল্লাসকর দত্ত তা গ্রহণ করেন নাই।
এই মহান বীর মুক্তিযোদ্ধা বিপ্লবী ঊল্লাসকর দত্তের প্রতিমূর্তি স্থাপন করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এক সুযোগ করে দিয়েছে বিপ্লবী ঊল্লাসকর দত্ত স্মৃতিরক্ষা কমিটি। স্বাধীন ভারতে এহেন অনেক আজীবন সংগ্রামী, সর্বোত্যাগী দেশপ্রেমি মহাপুরুষ দের স্মরণে রাখা ভবিষ্যৎ প্রজন্মদের কাছে হয়তো একদিন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।স্বাধীনতার পর নিজেদের স্বার্থ রক্ষা এবং নেরীকুত্তোর খেয়া খেয়ীতে ইতিমধ্যে সেলুলার জেলে বন্দি অবস্থায় অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করে তিলে তিলে দেশের জন্য মৃত্যু বরন করা অনেক সুমহান দেশ প্রেমিক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস বিলিন হয়ে যাচ্ছে । যাদের আত্মবলিদানে , যাদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাঁদের অন্তত স্মরণে রাখার প্রয়াস অবশ্যই প্রশংসনীয় বলে উপস্থিত অনেকেই মত ব্যক্ত করেছেন। কিছু সংখ্যক মানুষ যাদের প্রচেষ্টায় শিলচরে বাগ্মী পুরুষ বিপিন চন্দ্র পাল শহীদ অসিত ভট্টাচার্য দের মতো স্বাধীনতার যুদ্ধে আত্মবলিদান দেওয়া জীবন উৎসর্গ করা মহাপুরুষ দের প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। তাঁদের স্মরণে রেখে তাদের জন্মদিন মৃত্যু দিন পালনের মাধ্যমে তাঁদের আদর্শ কে ধরে রাখাই এই সংগঠনের উদ্দেশ্যে। সমস্ত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্র বীর কুমার রায় চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সফল করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন স্থানীয় বাসিন্দা সৌগত পাল বুদ্ধ।
কোন মন্তব্য নেই