Header Ads

anandamargi আনন্দমার্গী হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। @ তপোময় বিশ্বাস৩০ শে এপ্রিল- কলকাতার বিজন সেতুতে কান পাতলে এখনো সন্ন্যাসীদের তীব্র আর্তনাদ ভেসে ভেসে আসে-- বাঁচাও বাঁচাও। ৪১ বছর আগে ঘটে যাওয়া সন্ন্যাসী নিধন যজ্ঞের বিচার আজও অধরা! ১৯৮২ সালের ৩০শে এপ্রিল সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা বেজেছে তখন সবে।শিক্ষাবিষয়ক সেমিনারে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দায়িত্বে থাকা আনন্দমার্গী সাধু সন্ন্যাসীর দল তিলজলা আনন্দমার্গ কেন্দ্রীয় আশ্রমের অভিমুখে রওনা দিয়েছে। গাড়ী যেই বিজন সেতুতে পৌঁছেছে, অন্ধকারময় গুপ্ত গহ্বর থেকে যেমন হিংস্র হায়নার দল শিকারে বেরোয় , ঠিক সেইভাবে কয়েকশো হার্মাদ হাতে রড,শাবল, ছোরা নিয়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে টেনে টেনে আনন্দমার্গী সাধু-সন্ন্যাসীদের বের করে প্রকাশ্য দিবালোকে তাদের হাতে থাকা রড দিয়ে পিটিয়ে,ছোরা দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলে সেখানে অ্যাসিড ঢেলে, শরীর কেটে পেট্রল ঢেলে আধমরা অবস্থায় জীবন্ত জ্বালিয়ে সন্ন্যাসীদের বিজন সেতুর উপর থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। কলকাতার বুকে কয়েকশো মানুষের সামনে প্রকাশ্য দিনের আলোয় ঘটে যাওয়া এই নারকীয় সন্ন্যাসী হত্যালীলা 'সংস্কৃতির পীঠস্থান-কলকাতা: তথা 'মানবিক বাঙালীর' মাথা নীচু করেছিল গোটা পৃথিবীর কাছে। বিকৃতির কদর্যতায় স্তম্ভিত হয়েছিল মানবতা। অভিযোগের তীর যায় তৎকালীন রাজ্যের শাসক দল সিপিআইএম আশ্রিত হার্মাদ বাহিনীর উপর। তৎকালীন রাজ্য সরকারের গঠিত 'দেব কমিশন' তো নয়ই বরঞ্চ বামেদের দুর্নীতি প্রকাশ্য আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় বসা বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতাকাল ১২ বছর অতিক্রম করার পরেও 'লালা কমিশনের' র রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে দোষীদের শাস্তি (যাঁরা বেঁচে আছেন) বা দোষী কারা ছিল তা প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না কার স্বার্থে ? বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। আনন্দমার্গীরা অবশ্য বলেন,আদালতের দরবারে বিচার না হলেও প্রকৃতির দরবারে বিচার পেয়েছে তারা। সিপিএম শূন্যে পরিণত হয়েছে, অপর দিকে আনন্দমার্গ ভারত সহ বিশ্বের ২০০ টিরও বেশি দেশে তাদের সেবা কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এই বাঙলাতেই তাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে । শুধু ৩০ শে এপ্রিল নয়। ১৯৬৭ সালের ৫ই মার্চ, আনন্দমার্গের গ্লোবাল কার্যালয় পুরুলিয়ার আনন্দনগরে ৫ জন সন্ন্যাসীকে নৃশংস ভাবে খুন করে কমিউনিস্ট ঘাতক বাহিনী। যা পরে আদালত প্রমাণ করে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করে। কোচবিহারে রবি সরকার নামে জনৈক আনন্দমার্গীকে খুন করা, পুরুলিয়ার টাঁড় জমিতে অর্থকরী ফসল উৎপাদনের গবেষক কৃষিবিজ্ঞানী আচার্য অসীমানন্দ অবধূতকেও নৃশংস ভাবে খুন করার মতন বারবার আনন্দমার্গী হত্যাকাণ্ডে সিপিএমের মদতের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী ও পরবর্তী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মুখে- "আনন্দমার্গীদের তাড়াবো" ; প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর "যদি দশহাজার ছেলে ওদের আশ্রমে ঢোকে" !! এইধরনের আনন্দমার্গের প্রতি বিদ্বেষ মূলক কথা কেন তাদের মুখে শোনা যেত? আনন্দমার্গ তো আর রাজনৈতিক দল নয়, তাদের ভোটব্যাঙ্ক নেই,তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনা। তাহলে সিপিএম কেন আনন্দমার্গকে এত ভয় পেয়েছিল ? আমরা জানি, সিপিএম ক্যাডার ভিত্তিক দল।তাদের ক্যাডার বাহিনী গড়ে উঠত মূলত প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলের অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত মানুষদের নিয়ে। আনন্দমার্গ বাঙলা সহ ভারতের দিকেদিকে বিভিন্ন প্রান্তে খুব কম খরচে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় স্থাপন করলে সেই ক্যাডার বাহিনীর সন্তান-সন্ততিদের সেই আনন্দমার্গ ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করায় আস্তে আস্তে আনন্দমার্গীয় ভাবধারার প্রভাব তাদের বাড়িতে চলে আসার ফলে সেই ক্যাডারের মধ্যেকার পশুভাব বিলীন হয়ে আধ্যাত্মিকতার আলোয় মানবিকতার রশ্মি ফেলতে শুরু করলেই সিপিএম শঙ্কিত হয়ে পড়ে । তারা বোঝে এইভাবে চলতে থেকে সেই ক্যাডারের পরবর্তী প্রজন্ম শিক্ষিত হয়ে উঠলে আর তাদের রাজনৈতিক দলদাসে পরিণত করে রাখা যাবে না, পার্টি অফিসে আড্ডা মারার ছেলেপিলে থাকবে না । শিক্ষা তাদের মধ্যে সঠিক চেতনাবোধ তৈরি করে দেবে। ধীরে ধীরে তারা রাজনৈতিক দাসত্ব ত্যাগ করবে,সিপিএম ক্যাডার শূন্য হবে। অপর দিকে আনন্দমার্গের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক তত্ত্ব- প্রাউট বা প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্বের ব্লক ভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা,সামাজিক-অর্থনৈতিক মান উন্নয়নেরর সমস্ত সিদ্ধান্ত বিদ্বৎ সমাজের সুনজরে আসায়, যদি তারা আনন্দমার্গের পাশে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে সিপিএমকে মানুষের ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দিতে বেশি সময় লাগবে না।--- এই ভয়েই, এই আশঙ্কাতেই আনন্দমার্গের নামে সমাজে অপপ্রচার থেকে শুরু করে তাদের বিরুদ্ধে নানা নাশক কাজ করেছে। সি পি এম দল তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেও তাদের দলের অন্যতম মহান (?) নেতা জ্যোতি বসুর একটি মন্তব্য স্মৃতিতে উঁকি দিচ্ছে, 'সরকারের মদত না থাকলে কোন দাঙ্গাই সংগঠিত হতে পারে না'। খুব সম্ভবত গুজরাট দাঙ্গার পরেই তিনি এই মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই বলি- সাঁইবাড়িতে সন্তানের রক্তমাখা ভাত মাকে খাওয়ানো থেকে শুরু করে, বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রতীক হাত চিহ্নে ভোট দেওয়ার অপরাধের হাতের পাঞ্জা কেটে নেওয়া,বিজন সেতু,বানতলা,সিঙ্গুর,নানুর,বিরাটি সহ ছোট-বড় নারকীয় দাঙ্গা সিপিএমের শাসন আমলেই ঘটেছিল। অতএব জ্যোতি বসুর মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে উপরিউক্ত বিভিন্ন দাঙ্গায় সেই সময়ের শাসকদল এবং সেই দলের মুখ্যমন্ত্রীর মদত ছিল । আনন্দমার্গীরা হয়ত ঠিকই বলে- প্রকৃতির বিচারে সেই আঘাতের প্রত্যাঘাত সিপিএম ফেরৎ পাচ্ছে। রাজ্যে একদা সিপিএমের 'জাত শত্রু' কংগ্রেস-কে মিত্র করে ইতিমধ্যে সিপিএম 'জাত' খুইয়েছে। আসনের দিক থেকেও তারা রাজ্য বিধানসভায় শূন্য। তাদের জোট 'সংযুক্ত মোর্চা'র যেদুজন বিধায়ক আছে তাদের মধ্যে একজন ISF নামক হঠাৎ গজিয়ে ওঠা দলের আর এক জন সদ্য উপনির্বাচনে জয়লাভ করা কংগ্রেস দলের। সিপিএমের কোন আসন নেই। এর থেকে বড় লজ্জা আর কি হতে পারে ? আজও রাজ্যে চলছে চরম দুর্নীতি, অরাজকতা। সিপিএমের দেখানো পথেই হাঁটছে বর্তমান শাসক দল। গ্রামে-গঞ্জে পঞ্চায়েত নির্বাচনী যে সন্ত্রাসের প্রচলন শুরু করেছিল সিপিএম সেই ট্রাডিশন বজায় রেখেছে বর্তমানের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু সিপিএম কে ক্ষমতাচ্যুত করা নয়। শোষণ করে রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক ক্ষমতাভোগের যে তীব্র লোভ-লিপ্সা তা পরিত্যাগ করে সমাজের সার্বিক সেবা করার মনোভাবে মধ্যে দিয়েই সিপিএমের রোপিত দানবীয়তার বিষবৃক্ষকে নির্মূল করা যাবে। সত্যিকারের "বদল" আসবে। তবেই ১৭জন আনন্দমার্গী সাধু সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীর আত্মবলিদানের যথার্থ শ্রদ্ধা জানানো হবে। আসুন আনন্দমার্গ যে নতুন শোষণমুক্ত, পারস্পরিক মৈত্রীর মাধ্যমে আনন্দময় সমাজ গঠনে আগ্রহী আমরা আমাদের সাধ্যমতো তাদের সাহায্য সহযোগিতা করি। সপ্তদশ দধিচীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ভক্তিপূর্ণ প্রণাম ও লালা কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে বিচার ও দোষীদের চিহ্নিতকরণ,যে বা যারা বেঁচে আছে তাদের কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে শেষ করছি। প্রেরক- তপোময় বিশ্বাস ঠিকানা- বারাসাত, কোলকাতা-৭০০১২৬

আনন্দমার্গী হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। 

@ তপোময় বিশ্বাস



৩০ শে এপ্রিল- কলকাতার বিজন সেতুতে কান পাতলে এখনো সন্ন্যাসীদের তীব্র আর্তনাদ ভেসে ভেসে আসে-- বাঁচাও বাঁচাও। ৪১ বছর আগে ঘটে যাওয়া সন্ন্যাসী নিধন যজ্ঞের বিচার আজও অধরা! ১৯৮২ সালের ৩০শে এপ্রিল সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা বেজেছে তখন সবে।শিক্ষাবিষয়ক সেমিনারে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দায়িত্বে থাকা আনন্দমার্গী সাধু সন্ন্যাসীর দল তিলজলা আনন্দমার্গ কেন্দ্রীয় আশ্রমের অভিমুখে রওনা দিয়েছে। গাড়ী যেই বিজন সেতুতে পৌঁছেছে, অন্ধকারময় গুপ্ত গহ্বর থেকে যেমন হিংস্র হায়নার দল শিকারে বেরোয় , ঠিক সেইভাবে কয়েকশো হার্মাদ হাতে রড,শাবল, ছোরা নিয়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে টেনে টেনে আনন্দমার্গী সাধু-সন্ন্যাসীদের বের করে প্রকাশ্য দিবালোকে তাদের হাতে থাকা রড দিয়ে পিটিয়ে,ছোরা দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলে সেখানে অ্যাসিড ঢেলে, শরীর কেটে পেট্রল ঢেলে আধমরা অবস্থায় জীবন্ত জ্বালিয়ে  সন্ন্যাসীদের বিজন সেতুর উপর থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। কলকাতার বুকে কয়েকশো মানুষের সামনে প্রকাশ্য দিনের আলোয় ঘটে যাওয়া এই নারকীয় সন্ন্যাসী হত্যালীলা 'সংস্কৃতির পীঠস্থান-কলকাতা: তথা 'মানবিক বাঙালীর' মাথা নীচু করেছিল গোটা পৃথিবীর কাছে। বিকৃতির কদর্যতায় স্তম্ভিত হয়েছিল মানবতা। অভিযোগের তীর যায় তৎকালীন রাজ্যের শাসক দল সিপিআইএম আশ্রিত হার্মাদ বাহিনীর উপর। তৎকালীন রাজ্য  সরকারের গঠিত 'দেব কমিশন' তো নয়ই বরঞ্চ বামেদের দুর্নীতি প্রকাশ্য আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় বসা বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতাকাল ১২ বছর অতিক্রম করার পরেও  'লালা কমিশনের' র রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে দোষীদের শাস্তি (যাঁরা বেঁচে আছেন) বা দোষী কারা ছিল তা প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না কার স্বার্থে ? বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। আনন্দমার্গীরা অবশ্য বলেন,আদালতের দরবারে বিচার না হলেও প্রকৃতির দরবারে বিচার পেয়েছে তারা। সিপিএম শূন্যে পরিণত হয়েছে, অপর দিকে আনন্দমার্গ ভারত সহ বিশ্বের ২০০ টিরও বেশি দেশে তাদের সেবা কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এই বাঙলাতেই তাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
     শুধু ৩০ শে এপ্রিল নয়। ১৯৬৭ সালের ৫ই মার্চ, আনন্দমার্গের গ্লোবাল কার্যালয় পুরুলিয়ার আনন্দনগরে ৫ জন সন্ন্যাসীকে নৃশংস ভাবে খুন করে কমিউনিস্ট ঘাতক বাহিনী। যা পরে আদালত প্রমাণ করে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করে। কোচবিহারে রবি সরকার নামে জনৈক আনন্দমার্গীকে খুন করা, পুরুলিয়ার টাঁড় জমিতে অর্থকরী ফসল উৎপাদনের গবেষক কৃষিবিজ্ঞানী আচার্য অসীমানন্দ অবধূতকেও নৃশংস ভাবে খুন করার মতন বারবার আনন্দমার্গী হত্যাকাণ্ডে সিপিএমের মদতের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী ও পরবর্তী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মুখে- "আনন্দমার্গীদের তাড়াবো" ; প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর "যদি দশহাজার ছেলে ওদের আশ্রমে ঢোকে" !! এইধরনের আনন্দমার্গের প্রতি বিদ্বেষ মূলক কথা কেন তাদের মুখে শোনা যেত? আনন্দমার্গ তো আর রাজনৈতিক দল নয়, তাদের ভোটব্যাঙ্ক নেই,তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনা। তাহলে সিপিএম কেন আনন্দমার্গকে এত ভয় পেয়েছিল ? আমরা জানি, সিপিএম ক্যাডার ভিত্তিক দল।তাদের ক্যাডার বাহিনী গড়ে উঠত মূলত প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলের অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত মানুষদের নিয়ে। আনন্দমার্গ বাঙলা সহ ভারতের দিকেদিকে বিভিন্ন প্রান্তে খুব কম খরচে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় স্থাপন করলে সেই ক্যাডার বাহিনীর সন্তান-সন্ততিদের সেই আনন্দমার্গ ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করায় আস্তে আস্তে আনন্দমার্গীয় ভাবধারার প্রভাব তাদের বাড়িতে চলে আসার ফলে সেই ক্যাডারের মধ্যেকার পশুভাব বিলীন হয়ে আধ্যাত্মিকতার আলোয় মানবিকতার রশ্মি ফেলতে শুরু করলেই সিপিএম শঙ্কিত হয়ে পড়ে । তারা বোঝে এইভাবে চলতে থেকে সেই ক্যাডারের পরবর্তী প্রজন্ম শিক্ষিত হয়ে উঠলে আর তাদের রাজনৈতিক দলদাসে পরিণত করে রাখা যাবে না, পার্টি অফিসে আড্ডা মারার ছেলেপিলে থাকবে না । শিক্ষা তাদের মধ্যে সঠিক চেতনাবোধ তৈরি করে দেবে। ধীরে ধীরে তারা রাজনৈতিক দাসত্ব ত্যাগ করবে,সিপিএম ক্যাডার শূন্য হবে। অপর দিকে আনন্দমার্গের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক তত্ত্ব- প্রাউট বা প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্বের ব্লক ভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা,সামাজিক-অর্থনৈতিক মান উন্নয়নেরর সমস্ত সিদ্ধান্ত বিদ্বৎ সমাজের সুনজরে আসায়, যদি তারা আনন্দমার্গের পাশে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে সিপিএমকে মানুষের ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দিতে বেশি সময় লাগবে না।--- এই ভয়েই, এই আশঙ্কাতেই আনন্দমার্গের নামে সমাজে অপপ্রচার থেকে শুরু করে তাদের বিরুদ্ধে নানা নাশক কাজ করেছে।  সি পি এম দল তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেও তাদের দলের অন্যতম মহান (?) নেতা জ্যোতি বসুর একটি মন্তব্য স্মৃতিতে উঁকি দিচ্ছে, 'সরকারের মদত না থাকলে কোন দাঙ্গাই সংগঠিত হতে পারে না'। খুব সম্ভবত গুজরাট দাঙ্গার পরেই তিনি এই মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই বলি- সাঁইবাড়িতে সন্তানের রক্তমাখা ভাত মাকে খাওয়ানো থেকে শুরু করে, বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রতীক হাত চিহ্নে ভোট দেওয়ার অপরাধের হাতের পাঞ্জা কেটে নেওয়া,বিজন সেতু,বানতলা,সিঙ্গুর,নানুর,বিরাটি সহ ছোট-বড় নারকীয় দাঙ্গা  সিপিএমের শাসন আমলেই ঘটেছিল। অতএব জ্যোতি বসুর মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে উপরিউক্ত বিভিন্ন দাঙ্গায় সেই সময়ের শাসকদল এবং সেই দলের মুখ্যমন্ত্রীর মদত ছিল । আনন্দমার্গীরা হয়ত ঠিকই বলে- প্রকৃতির বিচারে সেই আঘাতের প্রত্যাঘাত সিপিএম ফেরৎ পাচ্ছে। রাজ্যে একদা সিপিএমের 'জাত শত্রু' কংগ্রেস-কে মিত্র করে ইতিমধ্যে সিপিএম 'জাত' খুইয়েছে। আসনের দিক থেকেও তারা রাজ্য বিধানসভায় শূন্য। তাদের জোট 'সংযুক্ত মোর্চা'র  যেদুজন বিধায়ক আছে তাদের মধ্যে একজন ISF নামক হঠাৎ গজিয়ে ওঠা দলের আর এক জন সদ্য উপনির্বাচনে জয়লাভ করা কংগ্রেস দলের। সিপিএমের কোন আসন নেই। এর থেকে বড় লজ্জা আর কি হতে পারে ? আজও রাজ্যে চলছে চরম দুর্নীতি, অরাজকতা। সিপিএমের দেখানো পথেই হাঁটছে বর্তমান শাসক দল। গ্রামে-গঞ্জে পঞ্চায়েত নির্বাচনী যে সন্ত্রাসের প্রচলন শুরু করেছিল সিপিএম সেই ট্রাডিশন বজায় রেখেছে বর্তমানের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু সিপিএম কে ক্ষমতাচ্যুত করা নয়। শোষণ করে রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক ক্ষমতাভোগের যে তীব্র লোভ-লিপ্সা তা পরিত্যাগ করে  সমাজের সার্বিক সেবা করার মনোভাবে মধ্যে দিয়েই সিপিএমের রোপিত দানবীয়তার বিষবৃক্ষকে নির্মূল করা যাবে। সত্যিকারের "বদল" আসবে। তবেই ১৭জন আনন্দমার্গী সাধু সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীর আত্মবলিদানের যথার্থ শ্রদ্ধা জানানো হবে। আসুন আনন্দমার্গ যে নতুন শোষণমুক্ত, পারস্পরিক মৈত্রীর মাধ্যমে আনন্দময় সমাজ গঠনে আগ্রহী আমরা আমাদের সাধ্যমতো তাদের সাহায্য সহযোগিতা করি। সপ্তদশ দধিচীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ভক্তিপূর্ণ প্রণাম ও লালা কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে বিচার ও দোষীদের চিহ্নিতকরণ,যে বা যারা বেঁচে আছে তাদের কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে শেষ করছি।

  প্রেরক- তপোময় বিশ্বাস
  ঠিকানা- বারাসাত, কোলকাতা-৭০০১২৬

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.