শিলচর শহরে আনন্দমার্গের আলোচনা চক্র
নয়া ঠাহর রাজধানী এক্সপ্রেস থেকে।
গত ৩, ৪ ও ৫ই ফেব্রুয়ারি শিলচর রবীন্দ্র সরণিতে আনন্দমার্গ আশ্রমে তিন দিনের একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এই সেমিনারে বরাক ভ্যালির কাছাড় করিমগঞ্জ হাইলাকান্দি জেলার আনন্দমার্গের মার্গী ভাই বোনেরা যোগ দিয়েছিলেন। সেমিনারে প্রশিক্ষক হিসেবে এসেছিলেন কলিকাতা থেকে আচার্য সুধাক্ষরানন্দ অবধূত ও আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত। তিন দিনের এই সেমিনারে আনন্দমার্গের যোগ সাধনার বৈশিষ্ট্য ও মহত্ব, ব্রাম্ভিভাব ও মানব জীবন, সংগচ্ছধ্বং, প্রগতি ও পঞ্চবেদনা বিষয়ে আলোচনা হয়। সেমিনারের দ্বিতীয় দিন ৪ঠা ফেব্রুয়ারি অপরাহ্নে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শিলচর শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে রবীন্দ্র সরণিতে সমবেত হয়। সেখানে এক সভায় আনন্দমার্গ দর্শনের আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সমর পাল, অনিতা চন্দ ও আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত । আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ বলেন বর্তমান সামাজিক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে সমাজকে বাঁচাতে হলে আধ্যাত্মিকতাকে আদর্শ হিসাবে আঁকড়ে ধরতে হবে। বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে প্রাচীন ভারতের প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়ে এক আদর্শ সমাজ গড়ে ওঠা সম্ভব। আনন্দমার্গ সেই পথেরই দিশা দেখিয়েছে। তিনি বলেন মানুষ আজ প্রকৃত মানব ধর্ম থেকে দূরে সরে গিয়ে ধর্মমতের সংঘাতে মেতেছে। ধর্ম সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন---পশু বলছে সহজ ধর্মের পথে ভোগ করো, মানুষ বলছে মানব ধর্মের সাধনা কর। মানুষ আজ মানব ধর্মের সাধনা ভুলে সহজ ধর্মের পথে পশু ধর্মের পথে ছুটে চলেছে। তাই আজ সমাজের রন্ধে রন্ধে এত দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচার, ব্যভিচার। আজ মানুষের সমাজ ও সভ্যতাকে বাঁচাতে হলে মানুষকে পশু ধর্মের পথ ছেড়ে মানব ধর্মের অনুশীলন করতেই হবে।আনন্দমার্গ মানব ধর্মেরই প্রতিষ্ঠা চায়। তাই আনন্দমার্গ কোনরকম সামাজিক সাম্প্রদায়িক, ধর্মমতের, জাত পাতের বিভেদকে প্রশ্রয় দেয় না। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী সাধন পুরকায়স্থ ও শিলচর শহরের বিশিষ্ট গুণীজনেরা।এই সেমিনার উপলক্ষে আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল লোকদের মধ্যে একশটি কম্বল বিতরণ করা হয় ।
কোন মন্তব্য নেই