ফুটপাথের জীবনে ধর্ম সম্প্রদায় নেই সবাই মানুষ
সায়ন গুপ্ত চেন্নাই থেকে :বাড়ি ফিরছি অফিস থেকে।সারাদিন কম্পিউটারে মাথা টা কে বন্ধক রাখার পর,একটু সতেজ হোতে বাড়ি ফিরি ঘুর পথে, সোয়া চার কিলোমিটারের রাস্তা। হেঁটেই ফিরি। ফুটপাথ এড়িয়ে যারা ক্যাব নেয় তারা সময়ের হিসেবে এগিয়ে থাকলেও জীবন বোধের হিসেবে অনেক পিছিয়ে।
ফুটপাথে হাজার টা গল্প বেঁচে থাকে,আর এই গল্প গুলোই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে,ভাবতে শেখায়।বিশ্বাস করতে বাধ্য করে পৃথিবীটা এখনও অনেক সুন্দর।ধুলোমাখা মানুষ গুলোর মাঝেই বেঁচে থাকে মানবিকতা - মানসিকতা।
চেন্নাইয়ের অফিসে অনাম উৎসব উপলক্ষে আমাকে "মহা পায়েসম"ডিনার বক্স দিয়েছে আজ, কোম্পানি ।আর তার আগেই হোম ডেলভারির "আন্না" উন্ড ধোসাই দিয়ে গেছে অফিসেই।অফিসেই হোম ডেলিভারি নিই।
অফিস থেকে বেরিয়েই ঠিক করে নিয়েছিলাম হোম ডেলিভারির ধোসাই আজকে ফুটপাথের কাউকে দিয়ে দেব।
চেন্নাই অ্যাপেলো চাইল্ড হাসপাতালের সামনে সেরকম দুজন "ধুলোমাখা মূর্গাই লক্ষ্মী"র মত কাপল কে পেয়ে গেলুম।
ওদের কে খাবার টা দিতেই।
মেয়েটি পুন্নাইও লাল পুন্যাইও লাল (তামিলে বিড়াল কে পুন্যাই বলে) ডাক দিতেই দুটো বেড়াল এসে হাজির ,তারপর আরও একটা বাচ্ছা বিড়াল আসতেই দুটো বেড়াল দম্পতি একটা বাচ্ছা বেড়াল ,দুটো মানুষ দম্পতি একসাথে খাবার ভাগ করে খেতে শুরু করলো।
আমি অদ্ভুত এক ঘোরে দেখছিলাম সেই দৃশ্য,আর ভাবছিলাম মানুষ হিন্দু মুসলিমের একসাথে বিজয়া কিংবা ইফতার পার্টি নিয়ে কত বড় বড় হ্যাজ নামায়।
কিন্তু ফুটপাথে বেড়াল মানুষ এক হয়ে পরিবারের মত দানের খাবার ভাগ করে খাই।এই গল্প কজন জানে?
সত্যিকারের মানবিকতার আলো বুক অবধি পৌঁছলে কতটা মানুষ হওয়া যায়!!
ফুটপাথের গল্পরাই জানে।
ফুটপাথ বেঁচে থাকুক,বেঁচে থাকুক এই গল্প গুলো...
জানোয়ার মানুষ একসাথে ভাগ করে খাবার খাই যেখানে সেখানেই লেখা হয় ওদের বাইবেল, গীতা যে বাইবেল গীতা কোনো ধর্মের নয় একান্ত ফুটপাথিয়াদের ব্যক্তিগত যুদ্ধের ইলিয়াড ওডিসি কিংবা হিসেবের দাস ক্যাপিটাল যেখান থেকে অনেক লক্ষ যোজন দূরে,এদের মনের হিসেবের এক ফোঁটাও লিখতে পারেনি বলতে পারে নি...
কোন মন্তব্য নেই