সরকারের বুলডোজার নীতির শিকার হিন্দু মুসলিম উভয়েই
নয়া ঠাহর শিলচর সরকারের বুলডোজার নীতির অন্যতম শিকার হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে রাজ্যের বাঙালিরা, এইজন্যই কি হিন্দু বাঙালিরা বিজেপিকে ঝুলি ভরে ভোট দিয়েছিলেন - প্রশ্ন বিডিএফ প্রধান প্রদীপ দত্তরায়ের।
সরকারি জমিতে অবৈধ দখলদারির অভিযোগে সম্প্রতি শোনিতপুর জেলার ৫৫ টি হিন্দু বাঙালি পরিবারের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। মোট উচ্ছেদ করা হয়েছে ২৯৯ টি পরিবারকে যার অধিকাংশই বাঙালি ও গোর্খা জনগোষ্ঠীর। সমগ্র ঘটনা নিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়।
এক প্রেস বার্তায় প্রদীপ বাবু বলেন যে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর প্রশ্ন যে এবেলা কোথায় গেল বিজেপি,বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল এদের হিন্দু প্রেম? কোথায় গেল রাজ্যের হিন্দু বাঙালিদের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাসবানী ? বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন যে এইসব পরিবারকে স্থানীয় 'সেটেলমেন্ট অফিসার' এবং পাটোয়ারীরা পাট্টা দিয়েছেন এবং তাঁরা অনেক দিন ধরে খাজনাও দিয়ে আসছেন। তাই এদের দোষ কোথায় ? দোষী হিসাবে প্রথম গ্রেফতার করা উচিত ছিল সেইসব সরকারি কর্মীদের। প্রদীপবাবু আরো বলেন নিতান্ত গরীব এবং দুঃস্থ এইসব লোকজনের অধিকাংশ ব্রহ্মপুত্রের নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি খুয়িয়েছেন। অনেক শ্রম দিয়ে তাঁরা কোনক্রমে আবার আশ্রয়স্থল গড়েছিলেন। কিন্তু সরকারের বুলডোজার তাঁদের আবার রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। যদি সরকার সত্যিই মানবিক হত তাহলে উচ্ছেদের আগে এঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করত। কিন্তু সেরকম কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।তাই এই পদক্ষেপ ধিক্কারযোগ্য।
প্রদীপবাবু আরো বলেন যে ইদানীং জেহাদীদের সাথে যোগাযোগের সন্দেহে একের পর এক মাদ্রাসা একই ভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন এসব মাদ্রাসা কিন্তু সরকার তৈরি করেনি তৈরি করেছেন স্থানীয় নাগরিকরা , জনগনের স্বার্থে। তিনি বলেন যদি কেউ উগ্রপন্থার সাথে জড়িত থাকে তবে তাঁদের অবশ্যই যথাযথ শাস্তি হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে কোন আপস করার প্রশ্ন উঠেনা। কিন্তু শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া ও আবার বানানো হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া এসবের মধ্যে কোনো যুক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন কখনো ডি নোটিশ,কখনো ডিটেনশন, কখনো এন আর সি ইত্যাদি করে বারবার হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে রাজ্যের বাঙালিদের হেনস্থা করা চলছে। তাঁর সাথে যদি এবার বুলডোজার দিয়ে বাঙালিদের বাসস্থান,বিদ্যায়তন সবকিছুকে গুঁড়িয়ে দেবার উদ্যোগ নেওয়া হয় তবে অবশ্যই সরকারের মনোবাসনা কি সেটা নিয়ে রাজ্যের বাঙালিদের ভাবতে হবে। তিনি বলেন যে হয়তো সরকার চাইছেন এভাবে আতঙ্কিত করে বাঙালিদের এই রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দিতে। কারণ প্রকৃতপক্ষে এ রাজ্যে অসমিয়াভাষীরা সংখ্যালঘু। তাই তাঁদের প্রভুত্ব বজায় রাখার জন্যই এসব করা হচ্ছে।
প্রদীপবাবু বলেন যে রাজ্যের বাঙালি হিন্দুরা সরকারের এইসব দ্বিচারিতা এখন সম্যক বুঝতে পারছেন। এবং এসব বন্ধ না হলে যাদের ভোট পেয়ে এই শাসকদল ক্ষমতায় এসেছে আগামীতে সেই হিন্দু বাঙালিরাই তাঁদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন ,এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।
কোন মন্তব্য নেই