দুর্গোৎসব শান্তি পূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করতে করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সভা
দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সভা
করিমগঞ্জ ৫ সেপ্টেম্বর : আসন্ন দুর্গোৎসব করিমগঞ্জে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সোমবার করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পূজা কমিটির কর্মকর্তাদের সাথে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। করিমগঞ্জের জেলাশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেলাশাসক মৃদুল যাদবের পৌরহিত্যে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সুরক্ষার দিকগুলি চর্চা করে বিগ বাজেটের পূজা মন্ডপগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। সভায় পুলিশ বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করে ডিএসপি হেডকোয়ার্টার গীতার্থ শর্মা জানান যে পূজার দিনগুলিতে করিমগঞ্জ শহর এবং জেলার অন্যান্য ভিড় হওয়া স্থান গুলিতে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রিত করা হবে এবং নো এন্ট্রির ব্যবস্থা থাকবে। পূজা কমিটি গুলিকে মন্ডপে নাইটগার্ডের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করতে হবে। রাস্তা জুড়ে কোন বৈদ্যুতিক সজ্জার গেইট না বসাতে পরামর্শ দেওয়া হয়, এতে ভক্তদের চলাচল সহ দুর্ঘটনার আশংকা থাকে। জেলা প্রশাসন থেকে সার্কেল অফিসারকে নিয়ে পূজা কমিটির কর্মকর্তাদের একটি হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ গঠন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি মন্ডপে অগ্নি নির্বাপক সামগ্রী জল, বালি ইত্যাদি মজুদ রাখতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এ পি ডি সি এল থেকে মন্ডপে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য এক সপ্তাহ আগে টেস্ট রিপোর্ট ও দরখাস্ত জমা দিতে অনুরোধ জানানো হয়। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন থেকে পৃথক কন্ট্রোল রুম খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পূজার দিনগুলিতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ থেকে শহরে নিয়মিত জল সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়। সভায় জেলাশাসক পূজা কমিটি গুলিকে প্রতিটি মন্ডপে ডাস্টবিন রাখতে, পরিস্কার পরিছন্নতা বজায় রাখতে এবং যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলতে আহ্বান জানান। ভক্তিমূলক উদ্দেশ্যে সকাল ছয়টা থেকে রাত দশটার মধ্যে নিয়ন্ত্রিত শব্দ মাত্রায় মাইক ব্যবহার করা যাবে তবে এর জন্য জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিতে হবে। শহরে কোন অস্থায়ী স্টল খোলার জন্য পুলিশ থেকে অগ্রিম অনুমতি নিতে হবে বলে জানানো হয়। সভার পূজা কমিটির কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে পূজার দিনগুলিতে শহরে রাস্তা জুড়ে কোন ধরনের অর্কেস্টা ইত্যাদির অনুষ্ঠান যাতে না করা হয় তার প্রতি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানানো হয়। এতে দর্শনার্থীদের চলাচলে অনেক অসুবিধার সৃষ্টি হয় এবং দুর্ঘটনারও আশঙ্কা থাকে। বিসর্জনের দিন প্রতিমার সাথে আসা মিউজিক সিস্টেমগুলি শম্ভু সাগর পার্ক থেকে বিসর্জন ঘাটের দিকে যেতে দেওয়া হবে না, শুধু প্রতিমার সাথে পূজা কমিটির ২০ জন কর্মকর্তা কালীবাড়ি রোড হয়ে বিসর্জন ঘাটে যেতে পারবেন। সভায় পৌরপতি রবীন্দ্র দেব শহরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ জানান। তিনি শহরে থাকা অবৈধ মদের ঘাঁটিগুলি শীঘ্রই বন্ধ করতে পরামর্শ দেন। পাশাপাশি তিনি রাস্তার ধারে থাকা বিপজ্জনক অবস্থায় গাছের ডাল গুলো কেটে ফেলার ব্যবস্থা করতে বন বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান। পৌরপতি সভায় জানান যে এবার পুজোয় মন্ডপসজ্জা, স্বচ্ছতা এবং আইন-শৃঙ্খলা বিষয়গুলির উপর শ্রেষ্ঠ তিনটি পূজা কমিটিকে পৌরসভার পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও শ্রেষ্ঠ পূজা কমিটিকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জেলাশাসক ঘোষণা দেন। এদিনের সভায় ডিডিসি বিক্রম দেব শর্মা, এডিসি দুইজন জেমস আইন্ড, রিন্টু বড়ো, জেলার সার্কেল অফিসাররা, বিএসএফের কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় আধিকারিক এবং পূজা কমিটির কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
কোন মন্তব্য নেই