Header Ads

নীতিহীন রাজনীতির লড়াই শুরু হয়ে গেছে



নির্বাচন ২০২৪
মল্ল যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে দিল্লি থেকে কলকাতায়

মানস বন্দ্যোপাধ্যায় 

রাজনীতি অত্যন্ত নগ্ন, নোংরা, ও উদ্যেশ্য প্রণোদিত। বর্তমানকালে রাজনীতিতে কোন নীতি নেই, স্বচ্ছতা নেই, আন্তরিকতা নেই। খাঁটি দুধের মধ্য থেকে দূরবীন দিয়ে ময়লা খুঁজে বেড়ানই আজকালকার রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য।
একথা বলছিলেন গেরুয়া শিবিরের সর্ব ভারতীয় প্রবক্তা সম্বিত পাত্র। তিনি বলেন, সব পার্টিরই গুরুত্বপূর্ন বৈঠক হয়ে থাকে । কখনো নিজস্ব দপ্তরে,কখনো বাইরে। কংগ্রেস বিশাল সভাগুলি অনেকবার দিল্লির টালকাটরা স্টেডিয়ামে করেছে। অনেক সময় পাঁচতারা হোটেলেও করেছে। তৃনমূল কংগ্রেসও বহু বিলাসবহুল হোটেলে মন্থন বৈঠক করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও দার্জিলিঙে এমন গোপন বৈঠক করেছেন। ভারতীয় জনতা পার্টির ( বিজেপি) বৈদিক ভিলেজে দলীয় প্রশিক্ষণ শিবির নিয়ে হঠাৎ তৃনমূল কংগ্রেসের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। একসময়ের উপেক্ষিত,বঞ্চিত, সারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ হঠাৎই উচ্ছ্বাসিত হয়ে উঠেছেন বিজেপির প্রশিক্ষন কর্মশালা নিয়ে। কারা আসেন নি এনিয়ে মুখরোচক গল্প তৈরি করে পরিবেশন করছেন সোশ্যাল মিডিয়াতে। সব দলেরই বিশেষ অনুষ্ঠানে অনেকেই উপস্থিত হতে পারেন না বিশেষ বিশেষ কারণ বশত। কারো আগে থেকেই কোন কর্মসূচি থাকতে পারে। কারো পরিবারে সদস্যের রোগ হতে পারে। কেউ পারিবারিক কোন অনুষ্ঠানে বাধ্যতামূলক ভাবে যেতেও পারেন। কিন্তু কুণাল এনিয়ে রাজনীতির রঙ ঢালতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।
কী হয়েছে ঘটনা?

বিজেপির  প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন না ৫ সাংসদ ও মন্ত্রী। আর তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সুকান্ত মজুমজারকে তিনি কটাক্ষ করে ট্রেনি সভাপতি বললেন।  কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু অধিকারীকেও।  কুণাল ঘোষ আক্রমণ করে বলেন, সুকান্ত ও দিলীপ,  দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গেছে। ওদের একটা কর্মসূচি ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে সেখানে দেখলাম দিলীপ ঘোষ বাদ। আমার সহনুভূতি দিলীপ ঘোষের প্রতি রয়েছে। পোস্টারে দলবদলু শুভেন্দু আছে, ট্রেনি সভাপতি সুকান্ত আছে, আর দিলীপ ঘোষকে বাদ দিয়ে দিল!'

বৈদিক ভিলেজে বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবিরে দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক,কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, আলিপুরদুয়ারের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লাকে। বর্ধমান- দুর্গাপুরের সাংসদ অহলুওয়ালিয়াও অনুপস্থিত ছিলেন। 
এই ঘটনা নিয়ে হুলুস্থুল শুরু হয়েছে। 

এদিকে কুণাল ঘোষের আক্রমণের জবাব দিয়েছে গেরুয়া শিবির। যেমন, ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম জানিয়েছেন,তিনি রাজস্থানে গেছেন। সেই কারণে শিবিরে নেই। আবার শান্তনু ঠাকুর জানিয়েছেন, তিনি কাজের জন্য ভিন রাজ্যে আছেন। দলের তরফে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তিনি থাকতে পারেননি। সেকথা দলকে জানিয়েওছিলেন। 

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে থেকেই দিলীপ ঘোষকে নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছিল। যদিও মেদিনীপুরের সাংসদ সেই জল্পনার অবসান ঘটান। তিনি সাফ জানিয়ে দেন বিজেপিতেই আছেন আর সেই দলেই থাকবেন। 

এদিকে প্রশিক্ষণ দলের একাধিক সাংসদের না থাকা নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ওরা যা খুশি জল্পনা করতে পারে। আমাদের প্রশিক্ষণ শিবির কীভাবে চলতে পারে, কারা আসবে, কারা আসবে না সেই সব নিয়ে ভাবনাচিন্তার কোনও কারণ নেই অন্য দলের। যাঁরা আসবেন না তাঁরা আগেই জানিয়েছিলেন যে আসতে পারবেন না। 
এদিকে বৈদিক ভিলেজের খরচের কথা তুলে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সাধারণ একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের জন্য বৈদিক ভিলেজের প্রয়োজন হচ্ছে। বিশাল অঙ্কের এই টাকা আসছে কোত্থেকে? বিজেপির কাছে তিনি জবাব চেয়েছেন। এর জবাবে আজ বিজেপির সাংসদ রাকেশ সিনহা বলেছেন,সারা পশ্চিমবঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকার লুটের হিসাব মমতা আগে দিন। কোথা থেকে সকল মন্ত্রীদের নিজস্ব তহবিলে এতো টাকা এসেছে, কী ভাবে এসেছে এবং কোথায় কোথায় হাতবদল হয়েছে। আজ বিজেপির সদর দপ্তর থেকে সম্বিত পাত্র বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক টিএম সি নেতা বিজেপিতে আসার আগ্রহ দেখিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগেই টিএম সি তে বার রকমের ভাঙন ধরবে বলে তিনি দাবি করেছেন। 
এদিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক দেব প্রসাদ রায় ( মিঠুদা) এই প্রতিবেদককে বলেছেন, বিজেপির রাজনীতিতে আম জনতা অখুশি। যে সরকার দরিদ্রতম মানুষের খাদ্য মুড়ির ওপর জিএস টি বাসাতে পারে,তারা আর যাই হোক মানবিক মোটেও নয়। কাজেই পশ্চিমবাংলায় ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে বিজেপি কে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন মমতা। মমতাকে চ্যালেঞ্জ বিজেপির। আসলে অনেকেই জানেননা,চরম আকাশভেদি আর্থিক দুর্নীতি টিএমসি কে যেমন ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে,তেমনি বিজেপিও সাধারণ মানুষের কাছে থেকে অনেক দূর সরে গেছে। আর এই স্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ফায়দা লুট করেছে সিপিএম। কংগ্রেসও পিছিয়ে নেই। আমাদের জনাধার অনেক বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। কেন্দ্রে কংগ্রেসের সময়ে দিল্লি তে মন্ত্রীদের দরজা ছিল সাধারণ মানুষের কাছে অবারিত। সহজেই তারা নিজেদের দুঃখকষ্ট ও অসুবিধার কথা বলতে পারতেন। এখন তো সংবাদপত্রেরও কোন স্বাধীনতা নেই। গভীর রাত্রেও সাংবাদিকদের ঘর থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত এনিয়ে সরকারকে ভর্ৎসনা করেছেন। ফলে ধীরে ধীরে বিজেপিও নিজস্ব ভিত মজবুত করতে পারছে না। পশ্চিমবঙ্গে ভোট তাই হবে চতুর্মুখী অনেক জায়গায়। বিজেপির সঙ্গে সঙ্গে তৃনমূল কংগ্রেস পার্টিও অনেক আসন হারাবে। কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন ফ্রি রাজনীতি গণতন্ত্রের ভিতকে আলগা করে দেয়। অর্থনৈতিক কাঠামোকে দুর্বল করে দেয়।এনিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কেজরিওয়ালের কর্ম গুরু আন্না হাজারে কেজরিওয়ালকে সরাসরি চিঠি দিয়ে তাকে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ভ্রষ্ট পথ আগলে ধরার চরম নিন্দা করেছেন। এই ভ্রষ্ট রাজনীতিও বেশি দিন চলে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.