মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে এক বাংলাদেশির খোলা চিঠি
*বাংলাদেশ থেকে ফরোয়ার্ডেড হয়ে হোয়াটস্যাপ এ আসা এক চিঠি l :-*
।। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চিঠি•••••••।।
প্রতি,
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,
সদ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক,
চিত্রশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও গীতিকার।
মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
মাননীয়া,
চিঠির শুরুতে স্বৈরতন্ত্রের বিভীষিকাময় পতন দেখে যাওয়ার জন্য আপনার দীর্ঘ জীবন কামনা করি।
আমি আপনাকে শ্রদ্ধা আর ঘৃণা দুটোর কোনটাই করিনা। কারণ শ্রদ্ধা করলে শ্রদ্ধেয় মানুষদের ছোট করা হবে, আর ঘৃণা করলে ঘৃণার মান কমে যাবে। কারণ ঘৃণাও মানুষকে গঠনমূলক কাজে অনুপ্রাণিত করে যা আপনাকে করেনা।
আমার মা দিদির মমতার সঙ্গে আপনার নামের অর্থটা বেমানান বলে আমি আর মমতা শব্দটা মায়া শব্দের পরে লিখিনা। মমতা শব্দটা যেন আজ বাংলায় বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে।
আপনার সদ্য একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্তিতে শুভা সুবোধের মতো স্তাবকেরা ছাড়া সমস্ত মানুষেরা সোচ্চার হয়েছে এটা বোঝার মত আত্মসম্মানবোধ আপনার নেই।
পঁচিশে বৈশাখের মঞ্চে যখন আপনার নাম বাংলা একাডেমী পুরস্কারের জন্য ঘোষণা করা হচ্ছে তখন আমি বাংলাদেশের শিলাইদহের রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়িতে কবি প্রণামের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছি। তখনই আমার আত্মহত্যা করা উচিৎ ছিল আপনার পুরস্কার প্রাপ্তির সংবাদ শুনে। কিন্তু করিনি। কারণ আমার মায়ের কাটমানির টাকা নেই যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের থেকে আমার লাশটা নিয়ে যাবে। তাছাড়া আমার প্রবাসী বন্ধুদের কেন বিব্রত করব?
পশ্চিমবঙ্গের শেষ হওয়ার আর বাকি নেই। একসময় বিহারীদের আমরা অবজ্ঞা করতাম আজ সেই বিহার আপনার মুখ্যমন্ত্রীত্বের কালে পশ্চিমবাংলাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। আমাদের অবজ্ঞা করে। আর আপনার পুরস্কার প্রাপ্তিতে এপারের তথা বাংলাদেশের সুশীল সমাজের কাছে মুখ দেখানো দায়। তারা বলেন তোমাদের ওখানে হাম্বা হাম্বা করলে একাডেমী পুরস্কার পাওয়া যায়। শুনতে হয়। বলার কিছু থাকে না আপনার বোধহীন মানসিকতার জন্য। আমার তো লজ্জায় মাথা কাটা যায়। এভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু অনেক ভালো। আপনি সম্মতি দেবেন আশা করি। নতুবা আপনার পুলিশের অনেকগুলি আছে তার একটি খরচ করতে বলবেন আমার জন্য যা আপনার পেটুয়া সাংবাদিকের পরিভাষায় এনকাউন্টার। অন্যথায় আমাকে দেশে ফিরে বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা বিদ্যাসাগর মহোদয়ের বীরসিংহের বাড়িতে অনশনে বসতে হবে স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য অথবা যারা এই ভাবে নিজেদের স্বার্থের জন্য বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে কলঙ্কিত করেছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি প্রদানের জন্য সিবিআই তদন্তের দাবীতে। আপনার খেলা হবে নয়, আমাদের দেখা হবে বীরসিংহের পথে।
আমি কবি বা সাহিত্যিক নই। আমি একজন সাধারণ শব্দশ্রমিক। আপনার স্নেহধন্য••••••• দুঃখিত না আপনার স্নেহধন্য হতে চাইনা, কারণ তাহলে আমাকে কাটমানিখোর হতে হবে। আপনার স্তাবক হতে হবে। তা হতে চাইনা।
আরেকটি কথা বলে শেষ করব। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধেয়া শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। রুচিশীল এবং সুন্দর কথা বলেন। লেখেন ভালো। কিন্তু তিনি কোন শিল্পী সাহিত্যিককে নিয়ে আপনার মতো রসিকতা বা বেয়াদবি করেন না। তাই আজও তিনি সমান শ্রদ্ধেয়া ঘরে ও বাইরে।
আপনার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে পশ্চিমবঙ্গবাসী বামফ্রন্টকে পরাজিত করে আপনাকে ক্ষমতায় এনে যে ভুল করেছে আজ তার প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে জীবন দিয়ে।
আমি সপিন্ডন প্রায়শ্চিত্তের একজন অশুচি মানুষ।
আপনার সুস্থতা কামনা করি। কালের নিয়মে আপনার শাসনকালের চরম পরিণতি যেন দেখতে পাবেন এই দুর্মর আশাবাদ ব্যক্ত করে ইতি টানছি।
বিনীত ,
কৃষ্ণেন্দু বেরা
আপনার চাটুকার কক্ষের
বাইরের এক শব্দ সৈনিক।
২৭ শে বৈশাখ ,১৪২৯
শিলাইদহ, কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ।'
কোন মন্তব্য নেই