বরাক -ব্রহ্মপুত্র উপত্যকাতে বাংলা সাইনবোর্ড এ আলকাতরা লেপে বাঙালিদের অপমান করা হচ্ছে ,অথচ সরকার ও বুদ্ধিজীবীরা চুপ
নয়া ঠাহর , শিলচর:যে সরকার ও বুদ্ধিজীবীরা বিডিএফ এর ভুমিকাকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন, ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকায় একের পর এক বাংলা সাইনবোর্ড,ব্যানারে কালি লাগানোর পর তাঁরা নীরব কেন - প্রশ্ন তুলল বরাক ডেমোক্রেটিক যুবফ্রন্ট।
গৌহাটির খ্রীস্টান বস্তিতে এন আর এইচ এম এর একটি সরকারি বাংলা সাইনবোর্ডে সম্প্রতি
কালো কালি লাগিয়েছে লাচিত সেনা নামক এক ভুঁইফোড় সংগঠন। এর আগেও একই ভাবে তিনসুকিয়ায় নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন এবং আরো দু একটি পোস্টারে কালো কালি লাগানো হয়েছে,অথচ এই নিয়ে রাজ্যের সরকার তথা বুদ্ধিজীবীমহল এযাবৎ নীরব। সামগ্রিক এই পরিস্থিতি নিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করল বিডিএফ যুব ফ্রন্ট।
এক প্রেস বার্তায় যুবফ্রন্টের কার্যকরী আহ্বায়ক দেবায়ন দেব বলেন যে আমরা গত পনের দিন ধরে এইসব কান্ড লক্ষ্য করছি এবং আশা করেছিলাম যে সরকার তথা রাজ্যের বুদ্ধিজীবিরা এ নিয়ে সরব হবেন । কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় দু একটি সংগঠন ছাড়া কার্যক্ষেত্রে সেরকম কোন পদক্ষেপ নিতে কাউকেই দেখা গেলনা এবং তাই অবশেষে আমরা মুখ খুলতে বাধ্য হলাম।
দেবায়ন বলেন যে শিলচর রেলস্টেশন বা মেহেরপুর পেট্রল পাম্পে অসমিয়া ভাষায় পোস্টার লাগানো ছিল সরাসরি ১৯৬১ এর ভাষা আইনের উল্লঙ্ঘন। তাই এই ব্যাপারে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট যে প্রতিবাদ করেছিল তা সরকারি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে,কোন ভাষিক গোষ্ঠী বা ভাষার বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে তারজন্য শুধু সরকার নয়, বরাক, ব্রহ্মপুত্রের অনেক বাঙালি বুদ্ধিজীবি ও নাগরিকরাও বিডিএফ এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। বিডিএফ এর মুখ্য আহ্বায়ককে গ্রেফতার বরণ অব্দি করতে হয়েছিল। যুবফ্রন্টের কার্যকরী আহ্বায়ক বলেন যে তাদের সঙ্গত প্রশ্ন যে আজ যখন বারবার লাচিত সেনা নামের কুখ্যাত সংগঠনের সদস্যরা বাংলা ব্যানার পোস্টার কালো কালি লাগাচ্ছেন তখন সরকার কিংবা সেইসব তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা নিশ্চুপ কেন ? তিনি বলেন যে এর সহজ অর্থ হচ্ছে সরকার বাঙালিদের হেনস্থা করার স্বার্থে এইসব সংগঠনকে পরোক্ষ মদত দিচ্ছেন এবং একইভাবে মেরুদন্ডহীন তথা চাটুকার এইসব বুদ্ধিজীবীরা নীরব থেকে তাদের উৎসাহ যোগাচ্ছেন। তিনি বলেন এই ব্যাপারে উভয় পক্ষের ভুমিকাই চরম ধিক্কার যোগ্য।
বরাক ডেমোক্রেটিক যুবফ্রন্টের আরেক আহ্বায়ক বাহার আহমেদ চৌধুরী বলেন যে অসমিয়া ভাষা,সংস্কৃতিকে আমরা শ্রদ্ধা করি ও আপন ভাবি তাই শিলচরের ঐতিহ্যবাহী তরুনরাম ফুকন অসমিয়া মাধ্যম স্কুল বন্ধ করে বাংলা মাধ্যমের সাথে জুড়ে দেবার সরকারি উদ্যোগকে আমরাই প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। তিনি আরো বলেন যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯ অনুযায়ী সমস্ত রাজ্যে সংখ্যালঘুদের নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতি চর্চার অধিকার স্বীকৃত। কেউ যদি তাঁতে বাধা দেয় তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সরকারের অবশ্য দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাই ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকার এইসব ভুঁইফোড় সংগঠনের সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনি ব্যবস্থা সরকারকে নিতে হবে। এবং ভবিষ্যতে যাতে এইসব অনাচার বন্ধ হয় তারও সম্পুর্ন নিশ্চয়তা দিতে হবে। অন্যথা এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে বাধ্য। এছাড়া যে হিন্দু বাঙালিদের একচেটিয়া ভোট পেয়ে এই সরকার নির্বাচিত হয়েছে তাদের আস্থা ও নিরাপত্তা যদি এভাবে বিঘ্নিত হয় তবে আগামীতে তার উপযুক্ত জবাবও
এই সরকারকেই পেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিডিওয়াইএফ যুব ফ্রন্টের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন রিপন দাস।
কোন মন্তব্য নেই