Header Ads

বাংলাভাষার পক্ষে আন্দোলোন করলে অসমে জেলে যেতে হয়



বাংলা ভাষার স্বাধীকার রক্ষায় এ রাজ্যে আন্দোলন করলে মামলা হবে বা জেলে যেতে হবে এটা স্বাভাবিক - প্রদীপ দত্তরায়।

সাইনবোর্ডে অসমিয়া ভাষায় সরকারি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ায় কয়েক মাস আগে সরব হয়েছিলেন বিডিএফ এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়। এই নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন 'হিন্দু যুব পরিষদ' নামক একটি সংগঠনের সদস্য জনৈক রঞ্জু দেবনাথ। এবার তিনি ধলাই থানায় তার বাড়ির মালিক বিজয় পান্ডের বিরুদ্ধে  আর একটি মামলা দায়ের করেছেন যাতে উক্ত বিজয় পান্ডে তাকে প্রদীপ দত্তরায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে  বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সমগ্র ব্যাপার নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানালেন প্রদীপ দত্তরায়।

প্রদীপ বাবু বলেন যে বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষায় বা বরাক উপত্যকার স্বার্থে এই রাজ্যে আন্দোলন করলে মামলা হবে বা জেলে যেতে হবে এসব খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। তিনি এসব নিয়ে কখনোই বিচলিত বোধ করেন না। তিনি বলেন যে ব্যানার বিতর্কের সময় তার ও বিডিএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় প্রায় পঞ্চাশটি মামলা হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় তাঁর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে। তবে সবার জ্ঞাতার্থে তিনি জানান যে ইতিমধ্যে  এই সংক্রান্ত সবকটি মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। দেশদ্রোহী মামলা সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশ মেনেই এটা করা হয়েছে বলে জানান তিনি । তিনি বলেন এর আগে দশবছর ব্যাপী আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের সময়ও তার বিরুদ্ধে ২৭ টি মামলা দায়ের হয়েছিল। কাজেই এসবকে ভয় পাবার কোন প্রশ্নই নেই এবং রঞ্জু নাথ বা বিজয় পান্ডে কাউকেই  চেনেন না বলে জানান তিনি।

বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে ব্যানার বিতর্কের সময় কালি লাগানো বা হুমকি দেওয়া নিয়ে বরাকের কিছু সংগঠন বা বুদ্ধিজীবীরা এসব আতিশয্য বলে মন্তব্য করেছিলেন। প্রদীপ বাবু দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে সেইসময় অনেকেই তাঁর পদক্ষেপকে ভালো চোখে দেখেননি,কেউ কেউ এমনও বলেছিলেন যে আসামে থাকতে হলে এসব মানিয়েই চলতে‌ হবে।তিনি বলেন তাঁর প্রশ্ন যে বা যারাই কালি লাগাক এটা না করলে  কিম্বা তার হুমকি এসব না হলে কি ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরকারি তরফে ব্যানার বা পোস্টার বদলে বাংলা ব্যানার লাগানো হত ? প্রদীপ বাবু বলেন ইদানীং শিক্ষার মাধ্যম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে গৌহাটিতে যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হল রাজ্যের সব জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব মুলক সংগঠনকে তাঁতে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ডাক পায়নি বাঙালি তথা বরাকের কোন সংগঠন। তিনি বলেন এই নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ প্রতিবাদ জানালেও সেরকম কোন সাংগঠনিক প্রতিবাদ নেই।প্রদীপ বাবু বলেন কিছুদিন পুর্বে আবার বরাক উপত্যকার কেউ কেউ বরাক ব্রহ্মপুত্র সমন্বয়ের নামে অতি উৎসাহী হয়ে আবার সভা সম্মেলন ইত্যাদির আয়োজন করছেন এটাও দেখা গেল। তাঁর প্রশ্ন উক্ত ব্যাক্তিবর্গ বা সংগঠন এই ইস্যুতে নীরব কেন ? প্রদীপ বাবু  বলেন এইধরনের কিছু স্বার্থান্বেষী লোকজনের জন্যই বারবার বরাক উপত্যকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন ৬১ এর ভাষা আন্দোলনের সময়ও এই ধরনের বিরুদ্ধ উস্কানি দেওয়া হয়েছে যার জন্য হাইলাকান্দিতে আমরা বাংলা ভাষা বিরোধী আন্দোলনও প্রত্যক্ষ করেছি। বরাকের জনগনকে তাই এসব উদ্যোগ বা লোকজনের ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি বলে মত ব্যাক্ত করেন তিনি। বিডিএফ  মুখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি নিয়ে ব্যাস্ত থাকলে বা মাঠে নেমে অধিকার রক্ষায় সরব না হলে আমাদের অবস্থার কখনোই পরিবর্তন হবেনা। তাই এসব নিয়ে বরাকের প্রতিনিধিত্ব কারী সংগঠন এবং বুদ্ধিজীবিদের পর্যালোচনা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.