ভারতকে টেক্কা দেওয়া সম্ভব নয়
সান্তনু সোম:ভারতের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও, 17 আগস্ট, দেউলিয়া শ্রীলঙ্কা চীনের গুপ্তচর জাহাজ (যেটাকে ওরা রিসার্চ ভেসল বলে থাকে), Yuan Wang 5 কে নিজের হাম্বানতোতা বন্দরে ডক করতে দিয়েছে।
চীনের এই জাহাজটির অত্যন্ত সফিস্টিকেটেড রাডার সিস্টেম এর চারপাশের 750 কিলোমিটার রেডিয়াসের মধ্যে যে কোন মিলিটারি বেস বা ইনস্টলেশনের এর সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম। ভারতের দক্ষিণ ভারতের যত মিসাইল বেস, শ্রীহরিকোটা, ভাইজাগ এর ইন্ডিয়ান নেভীর হেডকোয়ার্টার, ওড়িশার চাঁদিপুর সব এর গুপ্তচরবৃত্তির আওতায় চলে আসে।
এবার ভারত কি করল?
চীনের জাহাজটি ডক করার আগেই ভারতের দুটি মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স GSAT 7/ 7A স্যাটেলাইট (রুক্মিণী আর অ্যাংরি বার্ড), RI SAT আর ভারতের স্পাই স্যাটেলাইট EMISAT শ্রীলঙ্কার ওই বন্দরের ওপর পজিশন নেয়। তারপর এরা একটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক মেশ ব্লক (অনেকটা তড়িৎ চুম্বকীয় জাল দিয়ে ঢেকে ফেলা) করে ফেলে পুরো জায়গাটিকে। এর ফলে জাহাজটি কোন মাইক্রোওয়েভ সিগনাল পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে না। এটি এক ধরনের জ্যামিং।
উল্টে ভারতের EMISAT চীনের জাহাজের যতগুলো ট্রান্সপন্ডার ছিল সবার সাথে হ্যান্ডশেক করে ওদের সিস্টেমে ঢুকে পরে, জাঙ্ক ডেটা ভরে দেয়। এতে চীনের অনেক গোপন অ্যালগরিদম আজ ভারতের জানা হয়ে গেল। এই কাজে সবচাইতে বেশি সাহায্য করেছে "কৌটিল্য" নামে ভারতীয় একটি ইলেকট্রনিক স্পাইং সিস্টেম যেটি ভারত 2019 সালেই স্পেসে পাঠিয়ে রেখেছিল। যদিও ব্যাপারটা আমি যত সহজ করে লিখলাম এটা মোটেও অত সহজ নয়। কয়েক শত ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী আর মিলিটারি এক্সপার্ট এই প্রজেক্টটি সফল করেছে।
চীনের এই রিসার্চ শিপের ওপর যা "রিসার্চ" সেটা ভারতীয়রাই মোটামুটি করে নিয়েছে। অতঃপর এটি আগামীকাল, 22 আগস্ট দেশে ফিরে যাচ্ছে। এটাও শোনা যাচ্ছে যে এই বুদ্ধি যেই চীনা জেনারেলের মাথা থেকে বেরিয়েছিল, সে নাকি অলরেডী স্যাকড্! চীন এখানে পনের টাকার নোট ভাঙ্গতে এসেছিল, ফিরে যাচ্ছে সাত টাকার আর আট টাকার চেঞ্জ নিয়ে। আশা করি আর ফিরে আসবে না।
লেখক : শান্তনু সোম
Member of
National Geographic Society, International Society for Optics and Photonics, IEEE
কোন মন্তব্য নেই