Header Ads

ভেনকাইয়ার হুঙ্কার

অধিবেশন চলাকালীন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার হতে পারেন সাংসদ,বিধায়ক
বিদায়ের আগে ভেনকাইয়ার হুংকার

মানস বন্দ্যোপাধ্যায় 
নয়া দিল্লি,৬ আগস্ট: 

বিদায়ী উপ রাষ্ট্রপতি এম ভেঁকাইয়া নাইডু বিদায়ের আগে সাংসদদের চরম হুমকি দিয়ে বললেন সংসদে অধিবেশন চলাকালীন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত সাংসদকে গ্রেফতার করা যেতে পারে। তাতে কোনই বাধা নেই। 
গতকাল শুক্রবার রাজ্যসভা চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু স্পষ্টতই জানিয়েছেন, অধিবেশন চলাকালীন সাংসদরা ফৌজদারি মামলার অপরাধে গ্রেফতারি থেকে কোনওভাবেই নিস্তার পাবেন না। এমনকী অধিবেশনের বাহানা দিয়ে তদন্তকারী সংস্থার তলবও এড়িয়ে যেতে পারবেন না। একের পর এক রাজনীতিককে বিভিন্ন মামলায় যখন তদন্তকারী সংস্থা তলব করছে ঠিক সেই সময়ে রাজ্যসভা চেয়ারম্যানের এই মন্তব্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুক্রবার রাজ্যসভা শুরু হতেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার নিয়ে কংগ্রেস সাংসদদের হৈ হট্টগোলের মধ্যে অধিবেশন আধ ঘণ্টার জন্য মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছিল। অধিবেশন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে অধিবেশন মুলতুবি হতেই  কার্যত অসন্তুষ্ট হতে দেখা যায় ভেঙ্কাইয়াকে।

রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০ কংগ্রেস সাংসদ ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাদের মূল দাবি ছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইডি, সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে অপব্যবহার করছে। কংগ্রেস সাংসদদের অভিযোগ, অধিবেশন চলকালীন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, যা আসলে তাঁর অপমান ছাড়া আর কিছুই নয়।  অধিবেশন পুনরায় শুরু হতেই ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, সংসদ সদস্যদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে যে, অধিবেশন চলাকালীন তদন্তকারী সংস্থার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকতে পারবেন তারা।


ভেঙ্কাইয়া বলেন , সংবিধানের ১০৫ ধারা অনুযায়ী সাংসদদের বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা ও বিশেষ অধিকার দেওয়ার কথা বলা রয়েছে, যাতে কোনও বাধা ছাড়াই তারা দায়িত্ব পালন করতে পারেন। তিনি জানিয়েছেন, অধিবেশন বা কমিটির বৈঠক শুরু হওয়ার ৪০ দিন আগে এবং তার ৪০ দিন পরে সংসদ সদস্যকে দেওয়ানি মামলায় গ্রেফতার করা যাবে না, যা বিশেষ অধিকারগুলির মধ্যে অন্যতম। ভেঙ্কাইয়া জানিয়েছেন, ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে যে নিয়ম প্রযোজ্য, সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রেও একই নিয়মে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান মনে করেন, সংসদের কোনও সদস্যরই তদন্তকারী সংস্থার কাছে হাজিরা এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়।
ভেঁকাইয়া নাইডু ১৯৬৬ সালের ড: জাকির হোসেনের এক রুলিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,হোসেন বলেছিলেন, সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদে সদস্যদের বেশ কিছু সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। অধিবেশন চলাকালীন বা কমিটি মিটিং এর কারণে তাদের গ্রেফতার করা যাবে না। কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি করা যায় না। তবে এগুলি শুধু মাত্র দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ফৌজদারি মামলায় নয়।

এই মুহূর্তে নতুন উপ রাষ্ট্রপতি আজই নির্বাচিত হতে চলেছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কয়েকশ সাংসদ,বিধায়ক ও নেতার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী,রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খার্গে সহ প্রচুর সাংসদের নামে ফৌজদারি মামলা ঝুলে রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে বহু নেতা,মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই ধরনের মামলা চলছে। কাজেই অধিবেশন চলছে বলে তাদের গ্রেফতার করা যাবে না ,এটা ভুল ধারণা বলে নাইডু জানান। তার এই মন্তব্য নিসন্দেহে তাৎপর্যমূলক। আগামীতে তার উত্তরাধিকারী এই হাতিয়ার সহজেই ব্যবহার করে তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে গ্রেফতারের অনুমতি দিতে পারেন। একই সঙ্গে রাজ্যেও বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত মন্ত্রী,বিধায়ককেও তলব করা বা গ্রেফতারি করা যাবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.