জন কল্যানে আইন ভাঙার অধিকার রয়েছে সরকারের:গড় করি
জন কল্যাণে আইন ভাঙার অধিকার রয়েছে সরকারের: গড়করি
মানস বন্দ্যোপাধ্যায়
দেশে প্রচলিত যেসব পুরোনো আইন রয়েছে ,সেগুলি খতিয়ে দেখে যদি মনে হয়, এগুলির মধ্যে কোন আইন জন কল্যাণের পরিপন্থী তাহলে সেই আইন ভাঙার অধিকার রয়েছে সরকারের। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গাড়করি আচমকাই এই মন্তব্য করে বসলেন। তার এই মন্তব্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গড়করি বেশকিছুদিন ধরেই রাজনীতির ভিতরে ও বাইরে এমন অনেক মন্তব্য করে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে উঠে এসেছন। সম্প্রতি, মধ্যপ্রদেশের নাগপুরে একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন একইভাবে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বিতর্ক উস্কে দিলেন তিনি। নাগপুরের অনুষ্ঠান থেকে গড়করির দাবি, “আইন ভাঙার অধিকার রয়েছে সরকারের। আমলাদের কাজ হওয়া উচিত, কেবলমাত্র মন্ত্রীদের কথা শোনা এবং তাদেরকে ‘ইয়েস স্যার’ বলা।” তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে গোটা দেশে। তবে কি কারনে বিজেপি মন্ত্রীর এই মন্তব্য?
নাগপুরের অনুষ্ঠানে ‘গরিব কল্যাণ’ প্রসঙ্গ উঠে আসে তাঁর গলায়। এই সূত্র ধরে গড়করি বলেন, “দেশে যে সকল গরিব মানুষ রয়েছেন, তাদের কল্যাণ করার জন্য কোন আইন যদি বাধার সৃষ্টি করে, অথবা এক্ষেত্রে কোন আইন সমস্যার সৃষ্টি করে, তবে তা ভেঙে দেওয়ার অধিকার রয়েছে সরকারের। এরকম আইন যদি ১০ বার ভাঙতে হয়, তাহলে আমরা সংকোচ করব না। মহাত্মা গান্ধীও এই প্রসঙ্গে বলেছেন।”
সঙ্গে সঙ্গে মহারাষ্ট্রের এমন একটি পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, “১৯৯৫ সালে মহারাষ্ট্রে এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্ত ছিলেন মনোহর জোশী। শুধুমাত্র বন ও অরণ্য আইনের কারণে এলাকায় অসংখ্য আদিবাসী বাচ্চারা অপুষ্টিতে ভুগে চলেছিল। সেটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। তাই এ সকল আইন যদি ভাঙতে হয়, তাহলে তা থেকে পিছানো উচিত নয়।”
এর পরেই আমলা প্রসঙ্গে বিজেপি মন্ত্রী জানান, “আমলারা যা বলবে, সেভাবে কাজ করা উচিত নয়। আমি এই প্রসঙ্গে তাদের একাধিকবার বলেছি, আমলাদের দায়িত্ব হলো, মন্ত্রীদের নির্দেশ মেনে চলা এবং তাদের সকল কথাতে ‘ইয়েস স্যার’ বলা। আমরা সরকার চালাবো।” একই সঙ্গে, গতকালের অনুষ্ঠানে পথ দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ উঠে আসে গড়করির গলায়। তিনি জানান, “বর্তমানে যেভাবে পথ দুর্ঘটনায় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়ে চলেছেন, ২০২৪-এর মধ্যে দেশে সেই সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। সেই জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।”
গড়করির এই মন্তব্যে অনেকেই চমকে উঠেছেন। বিশেষ করে বিরোধীরা। তাদের আশংকা কিছুদিন ধরেই সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যেহারে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের জন সংখ্যা বর্তমান আইনের জোরে তীব্রতার সঙ্গে বেড়ে চলেছে, সেদিকে ধ্যান দেওয়া উচিৎ। তাহলে কি প্রচলিত আইন অর্থাৎ সংবিধানের ৩০ এবং ৩০ এ র বিরুদ্ধে সংবিধান সংশোধন করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আইন চালু করতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। উপরোক্ত আইনে হিন্দুদের ধর্মীয় সংস্থায় আয়ের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। হিন্দু ধর্মের নামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না । স্কুল কলেজে হিন্দু ধর্মের কোন শিক্ষা ব্যবস্থা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু মুসলিম ও খ্রিস্টানদের স্কুল,কলেজ গড়ে তাতে তাদের ধর্ম শিক্ষা দেওয়ার অনুমতি রয়েছে। তাদের মসজিদ ,চার্চের আয়ের ওপর সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। বিরোধীদের আশংকা তাহলে কি অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিল সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন গড়করি?
কোন মন্তব্য নেই