বাঁধের নিম্ন মানের কাজ আড়াল করতে জল সেচ বিভাগের অফিসার ,ও বিধায়কের সমর্থকরা বেতু কান্দির বাঁধ ভেঙে ছে অভিযোগ বি ডি এফের
নয় ঠাহর শিলচর :ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজকে আড়াল করতে জলসম্পদ আধিকারিক সহ বিজেপির বিধায়ক ও নেতাদের জ্ঞাতসারেই বাঁধ কাটা হয়েছে - বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
শিলচরের এবারের বন্যায় সাধারণ নাগরিকদের যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছেতা এককথায় অভুতপূর্ব এবং যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তার এখনো অবসান হয়নি। ক্ষয়ক্ষতির ছাড়াও শহরের ৯৫ শতাংশ নাগরিক যে অবর্ণনীয় পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন, বিদ্যুত, টেলিযোগাযোগ ছাড়া যেভাবে আতঙ্কে দিন কাটিয়েছেন তাও এর আগে কখনো হয়নি। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট
ফ্রন্টের মুখ্য আহবায়ক প্রদীপ দত্ত রায় বলেন যে আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এই বন্যা মানবসৃষ্ট এবং তার এই মন্তব্যে আমিও সহমত। তবে এটা কিছু স্থানীয় দুস্কৃতিকারীর জন্য হয়নি। এর পেছনে বেতুকান্দি অংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার থেকে জলসম্পদ বিভাগের আধিকারিক সহ শিলচরের বিধায়ক, সাংসদ সবাই দায়ী কারণ তারা জেনে বুঝে এই বিপর্যয় ঘটিয়েছেন। তিনি আরও বলেন যে আমি সন্দেহ করছি যে মুখ্যমন্ত্রীরও এসব অজানা ছিল না। একটা ব্যাপার লক্ষণীয় যে মুখ্যমন্ত্রী বাকি সব জেলায় স্পট ভিজিট করলেও বেতুকান্দির এই ভাঙা অংশ যা শিলচরের এই দেড়লক্ষ ভুক্তভোগী মানুষের দুর্দশার জন্য দায়ী, সেখানে কিন্তু যাননি। যার কতৃত্ব ও কর্মদক্ষতা নিয়ে সবাই সরব তাঁর তো উচিত ছিল এই বন্যার মূল কারণ যা তা সড়েজমিনে গিয়ে দেখা। তিনি তা না করে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন যে কিছু দুস্কৃতিকারীরা বাঁধ কেঁটে দিয়েছিল বলে এই বন্যা হয়েছে। কিন্তু তা একেবারে মিথ্যা।
প্রদীপ বাবু আরও বলেন যে তার কাছে একটি সূত্রে খবর আছে যে বাঁধের এই অংশের সুরক্ষার এর জন্য দশ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট অনুমোদিত হয় যার দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজীব লোহিয়া নামে গৌহাটির এক ঠিকাদারকে। এই ঠিকাদার শাসকদলের খুব ঘনিষ্ট। কিন্তু এই কাজ খুবই নিম্নমানের হয় এবং এতোটাই যে মে মাসের প্রথমে যে বন্যা হয় তারপর এই বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে যাবার অবস্থা হয়। মে মাসের ২১ তারিখ রাত্রে এই ঠিকাদারের নির্দেশেই এই বাঁধের একটি অংশ কেঁটে দেওয়া হয় এবং এটি করে এই ঠিকাদারের কয়েকজন স্থানীয় প্রতিনিধি । এও কাজের উদ্দেশ্য ছিল যাতে মহিষাবিলের জমা জল বের হয়ে গেলে এই নিম্নমানের প্রটেকশনের উপর চাপ কমে যাবে এবং এটা বেঁচে যাবে। আর যদি এটা ভেঙে যায় তাহলে দুস্কৃতিকারীদের জন্য হয়েছে বলে পার পেয়ে যাওয়া যাবে।
প্রদীপ বাবু বলেন যে আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি যে জলসম্পদ বিভাগের কর্তা সহ শিলচরের বিধায়ক এই ব্যাপার পুরোপুরি জানতেন এবং তাঁরা স্পটে গিয়ে এই বাঁধ কাটাকে সমর্থন করে স্থানীয়দের বুঝিয়েছেন এ খবরও আমাদের কাছে আছে। এবং এইসব মুখ্যমন্ত্রী জানেন না সেটাও বিশ্বাস করা মুস্কিল। নাহলে স্থানীয় নাগরিকরা ২৩ তারিখ এই বাঁধ কাটা নিয়ে থানায় এফ আই আর দায়ের করার পর থেকে পরবর্তী ২০ দিন কেন দুস্কৃতীকারিদের বিরুদ্ধে কেনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলনা? কেন এই সময়ে জলসম্পদ বিভাগ থেকে এই কাটা অংশের মেরামত করার কোন উদ্যোগ নেওয়া হলনা ?
আসলে সবাই সব জানতেন এবং গৌহাটির এই বিশেষ ঠিকাদারকে বাঁচাতে সবাই স্থবির হয়ে বসেছিলেন। এর পিছনে অবশ্যই উপর মহলের রাজনৈতিক নির্দেশ ছিল। তাঁরা ভাবেননি যে এতো কম সময়ে বরাকের জলস্তর এভাবে বেড়ে যেতে পারে যাতে জলের চাপে এই কাটা অংশ বহুগুণ বেড়ে বরাক নদী সারা শহরকে এভাবে প্লাবিত করতে পারে।
ফ্রন্টের যুব শাখার মুখ্য আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত বলেন যে শিলচরের এবারের ভয়াবহ বন্যার জন্য বিজেপির স্থানীয় বিধায়ক থেকে উপরমহল এবং জলসম্পদ বিভাগের আধিকারিক থেকে জেলা প্রশাসন সম্পুর্নভাবে দায়ী। আমি অবিলম্বে এঁদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এবং যেহেতু তাঁদের ন্যাস্ত স্বার্থের জন্য শিলচরের নাগরিকদের কয়েকশ কোটি টাকার ব্যাক্তিগত সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে,তাই সরকারকে নিয়ম মেনে সবাইকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে দাবি জানাচ্ছি।
এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন ফ্রন্টের মিডিয়া সেলের আহবায়ক ঋষিকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।
কোন মন্তব্য নেই