Header Ads

শিলচরে বন্যার ফলে হাজার হাজার যান বাহন ডুবেছে ,ইন্সুরেন্স বিধি কি হবে

জলে ডুবেছে গাড়ি-বাইক, জেনে নিন ইন্সুরেন্স বিধি

সমুদ্ৰশিহর বিশ্বাস : শিলচর,   : বন্যার জলে ডুবে গেছে শহরের অৰ্ধেকের বেশি বাইক, স্কুটি বা গাড়ি৷ কিছু কিছু বিলাসী গাড়িকে পাঁচ-ছয় ফুট জলে হাবুডুবু খেতেও দেখা গেছে৷ প্ৰাণপাত করে কেনা গাড়ির এমন করুণ অবস্থা দেখে, অনেকে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি৷ তবে এবার প্ৰশ্ন, এভাবে বন্যার জলে ডুবে যাওয়া গাড়ির ক্ষতিপূরণ কি মিলবে ইন্সুরেন্স কোম্পানি থেকে? এ নিয়ে কী রয়েছে নিয়ম? কীভাবে কী করতে হবে যানের মালিককে? বাৰ্তালিপি এ নিয়ে খোঁজ নিল৷ এক উচ্চপদস্থ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ইন্সুরেন্স কৰ্তার সঙ্গে কথা বলে জেনে নিল কী কী নিয়ম রয়েছে এক্ষেত্ৰে৷

গাড়ি বা বাইকের ইন্সুরেন্স মূলত হয় দু’রকমের৷ এক, প্যাকেজ পলিসি৷ দুই, লাইবেলিটি পলিসি৷ চালু ভাষায় মূলত প্যাকেজ পলিসিকে বলা হয় ফাৰ্স্ট পাৰ্টি ইন্সুরেন্স৷ আর, লাইবেলিট পলিসির নাম পড়েছে থাৰ্ড পাৰ্টি ইন্সুরেন্স৷ প্ৰথমেই বলে রাখা ভাল, থাৰ্ড পাৰ্টি ইন্সুরেন্সের ক্ষেত্ৰে বন্যার জলে গাড়ি বা বাইক ডুবে গেলে, এই বিমা দাবি করার সুযোগ নেই৷ তবে প্যাকেজ পলিসি অৰ্থাৎ ফাৰ্স্ট পাৰ্টি বিমায় ‘ওন ড্যামেজ’ (own damage) বলে একটি অপশন থাকে৷ তাতেই জমা জল (inundation) বা বন্যার জলে ডুবে যাওয়া যানের ক্ষতিপূরণ দাবি করা যায়৷

অনেকের মধ্যেই একটা প্ৰশ্ন রয়েছে, সরকারিভাবে বন্যা ঘোষণা না হলেও বন্যায় আক্রান্ত যানের ক্ষতিপূরণ মেলা কি সম্ভব? এ নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা দ্য নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসুরেন্সের উধারবন্দ মাইক্রো ব্ৰাঞ্চের প্ৰধান তথা দীৰ্ঘদিনের অভিজ্ঞ সিনিয়র বিমা কৰ্তা অংশুমান দত্ত বলেন, ‘সরকার বন্যা ঘোষণা করল কিনা, এ নিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবির কোনও সংযোগ নেই৷ মালিকপক্ষের যদি প্যাকেজ পলিসি, মানে ফাৰ্স্ট পাৰ্টি ইন্সুরেন্স থাকে, তবে তারা সেই দাবি করতেই পারবেন৷ তখন এই বিমা কভার হবে ওন ড্যামেজ-এর আওতায়৷’

তবে দুম করে বিমা দাবি করলেই হবে না৷ কিছু নিৰ্দৃষ্ট নিয়ম রয়েছে৷ তা মেনে চলার পরামৰ্শ দিয়েছেন বিমা বিশেষজ্ঞ অংশুমানবাবু৷ কী পরামৰ্শ

এক) প্ৰথমেই আপনার বাইক, স্কুটি বা গাড়ি যে বন্যা আক্রান্ত হয়েছে সেই ছবিটি তুলে রাখুন মোবাইলে৷

দুই) যদি জল একটু নেমেও যায়, জলের দাগ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এমন অ্যাঙ্গল থেকে ছবি তুলে রাখুন৷

তিন) যেখান থেকে ফাৰ্স্ট পাৰ্টি ইন্সুরেন্স করেছেন, খবর দিন সেখানে৷ যদি ফোনে সম্ভব না হয়, জল কমলে সেখানে নিজে যান৷ একটি লিখিত আবেদন করুন, সঙ্গে জুড়ে দিন জলে ডুবে থাকা গাড়ি বা দুই চাকার যানের প্ৰিন্টেড ছবি৷

চার) বাইক বা গাড়ি স্টাৰ্ট দেওয়ার আগেই বিমা কোম্পানিকে বিষয়টি জানান৷ একটা নিয়ম রয়েছে, স্পট সাৰ্ভের৷ সেই নিয়মের সুযোগ দিন৷ মূলত, ফেক্‌ ক্লেম (ভুঁয়ো ক্ষতিপূরণ দাবি) যাতে এড়ানো যায়, তাই এমন নিয়ম রয়েছে৷ বিমা অফিস থেকে লোকজন এসে সরাসরি দেখবে আপনার গাড়ি আদৌ জলে ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়েছে কিনা৷ তখন তারাই পরামৰ্শ দেবে পরবৰ্তী পদক্ষেপের৷

পাঁচ) বিমা দাবি করতে চাইলে ভুলেও গাড়িটি চালিয়ে বা অন্য গাড়ি দিয়ে টানিয়ে নিয়ে যাবেন না৷ আগে খবর দিন আপনার নিৰ্দিষ্ট বিমা কোম্পানিকে৷ বা নিজে থেকে গিয়ে যোগাযোগ করুন৷ তাদের পরামৰ্শ মেনেই কাজ কন৷

বন্যার সময়ে অনেকেই অসাধু পথ অবলম্বন করে ভুঁয়ো ক্ষতিপূরণ দাবি করতে সচেষ্ট থাকেন৷ তাই বিমা কৰ্তাদের হুজ্জুতি পোহাতে হয়৷ এসব কারণেই মূলত ‘ওন ড্যামেজ’ নিয়মের আওতায় কিছু নিৰ্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে৷ সেই নিয়মগুলি মেনে চলার জন্য গ্ৰাহকদের আহ্বান জানান অংশুমান দত্ত৷

অংশুমানবাবু আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে মারুতি নেক্সা সহ কয়েকটি কোম্পানির ডিক্লারেশন দেখলাম৷ তারা জানিয়েছে, তাদের কোম্পানির বন্যাক্রান্ত গাড়িগুলির দায়িত্ব তাদের নিজেদের৷ ফলে, গ্ৰাহকরা যেন গাড়িটি স্টাৰ্ট দেওয়ার আগেই কোম্পানিতে খবর দেন৷’ মূলত, সাৰ্কিট উড়ে যাওয়া সহ বিমা কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি; গাড়ি স্টাৰ্ট করার আগে কোম্পানিকে খবর দিলে অনেকটাই লাঘব হবে গ্ৰাহকদের হুজ্জুতি৷ (বার্তালিপির  সৌজন্যে)

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.