Header Ads

নেতাজির আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রতি নেহরুর চরম অন্যায়

☘️|| গনহত্যার আরেক অজানা অধ্যায় ||☘️

‘ দ্যা কাশ্মীর ফাইলস ’ অনেকেই দেখেছেন। ভালো অভিনয়, ভালো নির্দেশনা, দেখেও বেশ লাগল। গণহত্যার এক নির্মম ইতিহাস।জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই ! আপনি আশাকরি এটাই মনে করেন যে এটা ভারতবর্ষে ইংরেজদের দ্বারা সংঘটিত সবচেয়ে বর্বরোচিত অত্যাচার। ভুল একদম ভুল। ভারতবর্ষের ইতিহাসে এমন বেশ কয়েকটি অকথিত, অপ্রকাশিত, অপ্রচারিত গণহত্যার ঘটনা আছে যা আজও আমরা অনেকেই জানিনা এবং দুঃখের বিষয় এই যে এখনও অবধি তা নিয়ে কোন প্রযোজক-পরিচালকই সিনেমা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি।

🗓️ সাল ১৯৪৫ 🗓️

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে দিল্লিতে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈন্যদের বিচার চলছে। এর পাশাপাশি আজাদ হিন্দ বাহিনীর বহু সৈন্যকে বিভিন্ন ক্যাম্পে বন্দি রাখা হয়। এমনই দুটি ক্যাম্প ছিল বারাসাতের নীলগঞ্জে এবং যশোরের ঝিকরগাছায়। বর্তমানে ঝিকরগাছা বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্ত। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু’র নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনী রীতিমতো ত্রাস তৈরী করেছিল ব্রিটিশদের ভেতর। গোটা দেশবাসীর মধ্যে চিরস্থায়ী জায়গা করে নেন তাঁরা। ব্রিটিশদের আশঙ্কা ছিল আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈন্যদের চিরতরে শেষ না করতে পারলে দেশে গণজাগরণ হতে পারে।

🗓️ ১৯৪৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর 🗓️

 মধ্যরাত.. সশস্ত্র ব্রিটিশ পুলিশ ঘিরে ধরে নীলগঞ্জ ও ঝিকরগাছার ক্যাম্প। তারপর টানা গুলির আওয়াজ। কয়েকঘন্টার মধ্যে দুটি ক্যাম্পের আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রায় পাঁচ থেকে ‘ছয় হাজার’ সৈন্যকে হত্যা করা হয়। দুটি ঘটনার নৃশংসতা হার মানিয়েছে নাজী জমানার ‘ অসউইচ ’ বা স্ট্যালিনের গুলাগ শিবিরের গণহত্যাকে।

এত মানুষ একসাথে তো জালিনওয়ালাবাগেও মারা যায়নি !

মৃতদেহ সরাতে ব্রিটিশরা নিয়ে এসেছিল অনেকগুলি লরি। সেই লরিতে মৃতদেহগুলোকে তোলা হয়। রাস্তা ভেসে গিয়েছিল রক্তে। এরপর নিকটবর্তী নোয়াই খালে সেনাদের লাশ ছুড়ে ফেলা হয়। নোয়াই খাল আজও আছে। যদি শিয়ালদহ বনগাঁ শাখায় ট্রেনে করে যাতায়াত করেন তাহলে দেখবেন মধ্যমগ্রাম স্টেশনে ঢোকার আগেই(নিউবারাকপুর থেকে মধ্যমগ্রাম যাত্রাপথে) একটা ছোট ব্রিজ আছে , ব্রিজের নিচে আছে এক খাল , ওটাই নোয়াই খাল। এই খাল নীলগঞ্জের ওই ক্যাম্পের পাশ দিয়েও গেছে।

পরের দিন যখন বাসিন্দারা ওখানে যান, সেখানকার দৃশ্য দেখে শিহরিত হন সবাই। চারিদিকে রক্ত। নোয়াই খালের জলের রং হয়ে গিয়েছিল লাল। এখানে সেখানে পড়ে আছে আইএনএ'র বন্দী সৈনিকদের ছিন্নভিন্ন দেহ। অনেক দেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মাটি খুঁড়ে চাপা দেওয়া হয়েছিল অনেক মৃতদেহ।

এই নারকীয় হত্যার ঘটনা যখন চারিদিকে জানাজানি হয়ে গেল। খবর গেল ‘ নেহেরুর ’ কাছে, তিনি লখনউ থেকে বিবৃতি দিলেন, 

“ হ্যাঁ আমি শুনেছি নীলগঞ্জে গুলি চলেছে, ‘মাত্র পাঁচজন’ আইএনএ সৈন্য মারা গেছেন।”

ভারত সরকারের তরফ থেকেও পরবর্তীতে এই ঘটনা নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করা হয়নি। এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত সবাই। নেহেরু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ফাইলগুলোকে উন্মুক্ত না করে চূড়ান্ত গোপনীয় করে রাখলেন, কয়েক বছর আগে এই ঘটনার উপর ১-২ টি ফাইল জনসম্মুখে এসেছে, তার থেকেই এই ইতিহাস জানা যায়।

৫০এর দশক এ প্রভুদের পাপ চাপা দিতে সেই স্থানে পাট গবেষণা কেন্দ্র গড়েছিল নেহেরু সরকার। সেই গবেষণাকেন্দ্র আজও আছে। বাতানুকূল অফিস আর ঝাঁ চকচকে কোয়াটার্সের আড়ালে হারিয়ে গেছে সেদিনের বন্দীশিবির। জালিয়ানওয়ালাবাগের চেয়ে তিনগুন শহীদকে মর্যাদা দেয়নি কেন্দ্র কিংবা রাজ্য কেউই।

আজকের ইতিহাস বইয়ে এইসব ঘটনার উল্লেখ নেই। কেন চুপ গোটা রাজনৈতিক মহল ? 
কে দেবে এই জবাব ?  হয়নি কোনও বিচার। ইতিহাস রয়েগেছে অন্ধকূপেই বিচারের আশায়..

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.