আইনজীবী প্রদীপ দত্ত রায় কে গ্রেফতার অগণতান্ত্রিক বলে আখ্যা দিল কলকাতার যুব ছাত্র সমাজ
কলকাতা: বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট দলের নেতা তথা গুয়াহাটি হাইকোর্টের আইনজীবী প্রদীপ দত্তরায়ের গ্রেফতার কে অগণতান্ত্রিক ও রাষ্ট্র স্বৈরতন্ত্রের সাথে তুলনা করল "বাঙালী ছাত্র-যুব সমাজ" সংগঠন ।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সচিব তপোময় বিশ্বাস কলকাতা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিবৃতি দিয়ে বলেন, অসম সরকার বারংবার বরাকের সরকারী ভাষা বাংলাকে উপেক্ষা করে অসমীয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্ত করে আসছে । এরই প্রতিবাদ করার ফলে আগেও প্রদীপ দত্তরায়কে অসম প্রশাসন দ্বারা হেনস্থা শিকার হতে হয়েছে , বর্তমানে তো সরাসরি আইন লঙ্ঘন করে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৯৬১ সালের অসম সরকার ভাষা আইনের ৫ নং ধারা অনুযায়ী অসমের বরাক উপত্যকার তিন জেলার আঞ্চলিক তথা সরকারী ভাষা "বাংলা ভাষা" । সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী সেখানের সকল কাজ,কর্ম,অফিস,আদালত,হোডিং সমস্ত কিছুতেই বাংলা ভাষার ব্যবহার অবাঞ্ছিত নয় বরং আবশ্যিক । কিন্তু সেখানে অসমীয়া ভাষায় সরকারী বিজ্ঞাপন লাগানোটাই আইন লঙ্ঘিত কাজ , তারই প্রতিবাদ করেছিল প্রদীপ বাবু । তাঁকে গ্রেফতার করে অসমের বাঙালীদের কন্ঠরোধ করা যাবে না । ১৯৬১ সালের ১৯ শে মে'র একাদশ শহীদের রক্তস্নাতের মধ্যে দিয়ে বাংলা ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে, এর অবমাননা আমরা মানব না মানব না। অসমের বাঙালীদের পাশে ,প্রদীপ দত্তরায়ের পাশে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বাঙালী আছে । তাদের প্রতিনিধি স্বরূপ "বাঙালী ছাত্র-যুব সমাজ" অসম সরকারের কাছে আবেদন করছে অবিলম্বে প্রদীপ দত্ত রায়কে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে এবং ভাষা আইন লঙ্ঘন করে বরাক উপত্যকায় অসমীয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়া চলবে না ।
তপোময় বিশ্বাস আরো বলেন, এক শ্রেণির মিডিয়া অসমীয়া জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগকে উষ্কে অসমীয়া ভাষার অপমান বলে , বাঙালী-অসমীয়াদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে । আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই , আমরা সংঘাতে নয় , জাতি বিদ্বেষে নয় সৌভাতৃত্ববোধ , একতাবোধে বিশ্বাসী । সরকারী আইন অনুযায়ী প্রত্যেক জনগোষ্ঠী ভাষা সহ সর্বত্র তার নিজ নিজ অধিকার পাক। আসলেই ভোটের স্বার্থ ও ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শাসক দল অসমীয়া-বাঙালীদের মধ্যে যাতে একতা তথা সৌভাতৃত্ব বোধ গড়ে না উঠতে পারে সেজন্য বিদ্বেজ ছড়াতেই বরাকের ভাষা আইন লঙ্ঘন অসমীয়া ভাষা চাপিয়ে দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সংকীর্ণতাবোধ ভুলে, সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন বাঙালী-অসমীয়াদের কাছে আবেদন রাখছি ,পারস্পরিক মেলবন্ধনের মধ্যে দিয়ে ভাতৃত্ববোধ গড়ে তুলতে সচেষ্ট হোন । পাশাপাশি "বাঙালী ছাত্র যুব সমাজ" দাবী রাখছে অবিলম্বে প্রদীপ দত্তরায়ের উপর থেকে চক্রান্তমূলক সমস্ত মামলা প্রত্যাহার এবং তাঁকে নিঃর্শত মুক্তি দিতে হবে , নচেৎ বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত হবে অসমের বুকে ।
কোন মন্তব্য নেই