Header Ads

নববার্তা প্রসঙ্গে বরাকের বিদ্যুৎ চিত্র, বিধানসভায় জবাব দিলেন চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি



অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : দক্ষিণ অসমের অনগ্রসর বরাক উপত্যকার রাস্তা-ঘাট, পরিকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে বরাক উপত্যকার জনপ্রতিনিধি বিধায়করা কোনো দিনই ঐক্যবদ্ধ ভাবে বরাকের স্বার্থে লড়াই করে নি। আজও বিধানসভায় বরাক উপত্যকার বিশেষ করে করিমগঞ্জ জেলার বিদ্যুৎ চিত্র নিয়ে বরাকের বিধায়ক কমলাক্ষ্য দে পুরকায়স্থ যখন সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানান, তখনই দেখা দেল বিজেপির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল তার ভাষণে হস্তক্ষেপ করে নানা মন্তব্য করছেন। এর আগেও দেখা গেছে বরাকের বিধায়ক আতাউর রহমান মাঝার ভূইয়া বরাকের রাস্তাঘাট উন্নয়নের দাবিতে অনশন করার পর বিধানসভায় সরব হওয়ার সময় বরাকের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায় তাকে উপহাস করেছিলেন। জোটবদ্ধভাবে বরাকের উন্নয়নের বরাকের প্রতিনিধিদের দাবি তুলতে দেখা যায়নি। আজ বিধানসভায়। করিমগঞ্জ জেলায় শোচনীয় বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে অবিলম্বে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান উত্তর করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। আজ বিধানসভায় জিরো আওয়ারে করিমগঞ্জ জেলার একমাত্র বাংলাদৈনিক নববার্তা প্রসঙ্গ’-এ প্রকাশিত৩৩ কেভি পাঁচগ্রাম করিমগঞ্জ বিদ্যুৎ লাইন বিশবাঁও জলেশীর্ষক খবরের দৃষ্টি আকর্ষক করে সরকারকে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি প্রতিশ্রুতি দেয়, আগামী হোলি উৎসবের পর একজন অফিসার বিধায়ক পুরকায়স্থের কাছে গিয়ে বিস্তারিত জেনে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। মন্ত্রী আশ্বাস দেন, করিমগঞ্জের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকার উপযুক্ত পদক্ষপ গ্রহণ করবে।তিনি বলেন, বিকল্প লাইনের কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। তিনি বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, হাইলাকান্দি করিমগঞ্জ ১৩২ কেভি লাইনের ঠিকা ২০১৪ সালে ই সি আই ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে দেওয়া হয়েছিল। এই কাজ সম্পূর্ণ করার সময় ছিল ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি। কিন্তু সেই কাজ সম্পূর্ণ হল না। কোম্পানিটি ঠিক মতো কাজ না করায় ২০১৮-র ২৯ জানুয়ারি এইজিসিএল সেই চুক্তি বাতিল করে। তার পরে ওই লাইনটি যোগান (সাপ্লাই) এবং নির্মাণের জন্য পৃথক পৃথক টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এই কাজের যােগানের অংশ সম্পূর্ণ হলেও নির্মাণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিল। ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট নির্মাণ কার্যের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কিন্তু কোনো ঠিকাদার টেন্ডারে সাড়া না দেওয়ায় তা বাতিল হয়ে যায়। তার পরে টেন্ডারের নিয়ম নীতি কিছু শিথিল করে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কিন্তু সময় সীমা বৃদ্ধি করার পরেও কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষ পর্যন্ত। বিভাগীয়ভাবে কাজ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই কাজ ৩১ মে ২০২১ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এই কজের দায়িত্ব এজি অ্যাসোসিয়েট, এম বরা এবং নব বৈশ্য নামে তিনটি ঠিকাদারি সংস্থাকে ভাগ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। আরেকটি বিকল্প লাইনের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। পিজিসিআইএল (পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া), বদরপুর থেকে কুমারঘাট ১৩২ কেভি প্রস্তাবিত লাইনটি, প্রস্তাবিত ১৩২ কেভি হাইলাকান্দি করিমগঞ্জ রুটের উপর দিয়ে গেছে। এই ক্রস ওভার পয়েন্টটা করিমগঞ্জ উপকেন্দ্র থেকে মাত্র চার কিলােমিটার দূরে। এখন পিজিসিআইএল লাইনটি থেকে এক অস্থায়ী লাইন হিসাবে ১৩২ কেভি লাইন নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত ১৩২ কেভি লাইনটি বসাতে ১৪ টি টাওয়ার বসাতে হবে। খরচ হবে ১.৫ কোটি যাকা। এই লাইন জরিপ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। শিলঙে অনুষ্ঠিত ওসিসি বৈঠকে এ সম্পর্কে অনুমোদন জানানো হয়েছে। কমলাক্ষ্য দে পুরকায়স্থ অধ্যক্ষ হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামীকে বলেন, স্যার, আপনি অফিসারদের ডেকে করিমগঞ্জের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, তার পরেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হল না। অফিসার বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়েই যাচ্ছে, কিন্তু কোনো কাজ করছে না। গতকাল করিমগঞ্জে ৯ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ ছিল না। বার বার প্রতিশ্রুতির পরেও সরকার কিছুই করছেনা। এইসব অভিযোগ করার পর বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল কমলাক্ষ্য দে পুরকায়স্থকে কটাক্ষ করে বলেন, আপনাদের কংগ্রেস রাজত্বে শুধু দুর্নীতি হয়েছে, কাজ হয়নি। একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ এবং রূপজ্যোতি কুর্মি কৃষ্ণেন্দু পালের বিরুদ্ধে খুবই আপত্তিজনক মন্তব্য করেন। কৃষ্ণেন্দু পাল এবং বরাকের অন্যান্য বিধায়করা যদি কমলাক্ষ দে পুরকয়স্থের পাশে দাঁড়িয়ে বরাকের শোচনীয় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সোচ্চার হতেন তবে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এবং বরাকের পরিকাঠামোর এত বেহাল অবস্থা হতো না। গতকালই পূর্ত মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিধানসভায় অভিযোগ করেন বরাকের রাস্তা ঘাট পরিদর্শনের সময় পাশে একজনও বরাকের মন্ত্রী বিধায়কদের পাওয়া যায় নি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.