কা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে বিধানসভায় তুলকালাম, এআইইউডিএফ, কংগ্রেস বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট, শেরমান আলি আহমেদ সাসপেন্ড
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ প্রত্যাশা মতোই অসম বিধানসভার বাজেট
অধিবেশনের প্রথম দিন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে হুলস্থূল পরিস্থিতির
সৃষ্টি হয়। এআইইউডিএফ এবং কংগ্রেসের উত্থাপিত মুলতুবি
প্রস্তাব অধ্যক্ষ হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামী আগামীকালের জন্য রিজার্ভ রাখার প্রতিবাদে
দল দুটি অধ্যক্ষের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হুলস্থূল করে ও নানা শ্লোগান তুলে এক
অভাবনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত ট্রেজারি বেঞ্চের বিজেপি সদস্যরা
পাল্টা শ্লোগান তুলে অধ্যক্ষকে সমর্থন করে। পরিস্থিতি প্রায়
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত এআইইউডিএফ এবং কংগ্রেস বিধানসভা
থেকে ওয়াক আউট করে। তার আগে প্রশ্নোত্তর পরেব কংগ্রেসের শেরমান
আলি আহমেদ পয়েন্ট অব অর্ডার তুলে এনআরসি সমন্বয়ক হিতেশ শর্মার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
তুললে অধ্যক্ষ হিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী তাতে বাধা দেন। তা নিয়ে তুমুল
বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। অধ্যক্ষ বার বার শান্ত হয়ে বসার জন্য শেরমান
আলিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আলি কর্ণপাত করেননি। অধ্যক্ষ বাধ্য হয়ে মার্শাল ডেকে বিধায়ক আলিকে বেড় করে দেন এবং আজকের জন্য
সাসপেন্ড করেন। বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে এআইইউডিএফের
পক্ষে হাফিস বসির আহমেদ এবং দলপতি দেবব্রত শইকিয়া মুলতুবি প্রস্তাব উত্থাপন করে
বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের প্রতিবাদে
হিংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাতে পাঁচজন মারা যান এবং প্রায় 50জন আহত হন। হাফিজ বসির আহমেদ বলেন, প্রথমে এনআরসি, তারপর কা বিরোধী আন্দোলনকারীরা
সভাসমিতি করা নিজস্ব মতামত জানিয়েছিল, তা সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পরে। কিন্তু সরকার আন্দোলনকারীদের উপর অত্যাচার চালিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে। মৌলিক অধিকার খর্ব হয়। তিনি বলেন, রাজ্যে কা বিরোধী আন্দোলনের ফলে
পাঁচজন নিহত এবং পঞ্চাশজন আহত হয়েছে। তাদের প্রতি সুবিচার করেনি সরকার। বিরোধী দলপতি দেবব্রত শইকিয়া কা, এনআরসি-র প্রসঙ্গ উত্থাপন না করে
আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের ওপর অত্যাচারের নিন্দা করেন। তিনি বলেন,
তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট, ত্রিপুরা হাইকোর্ট সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনকে স্বীকৃতি
জানিয়েছে। বেআইনি ঘোষণা করেনি। কিন্তু অসম
সরকার কর্মচারীদের আন্দোলনকে বাধা দিয়ে অত্যাচার করে সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করেছে। পরিষদীয় মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি জবাব দিতে গিয়ে বলেন, কা বিরোধী বিষয়টি
আদালতে বিচারাধীন, ‘সাব জুডিস’ এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যায় না। বলেন, কংগ্রেস নেতা দেবব্রত শইকিয়া কা বিষয়টি উল্লেখই করেনি। তাই কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীর প্রস্তাব তুলতে পারে না। অধ্যক্ষ জানান, মুলতুবি নোটিশ দুটি ভালো করে পরীক্ষা করে আগামীকাল রায় দেওয়া
হবে। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারেনি এআইইউডিএফ
এবং কংগ্রেস। কংগ্রেসের রাজদ্বীপ গোয়ালা, রূপম কুর্মি,
রেকিবুদ্দিন আহমেদ, কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, রকিবুল হুসেইন, অজন্তা নেওগ প্রমুখ
প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। আজই রায় দেবার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এআইইউডিএফের হাফিজ বসির আহমেদ, মামুন ইমদাদুল প্রমুখ অধ্যক্ষের ভূমিকায় ক্ষোভ
প্রকাশ করে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। ‘অধ্যক্ষের দমন নীতি চলবে না, গণতন্ত্র রক্ষা
কর, আন্দোলনকারীদের মুক্তি দিতে হবে’ প্রভৃতি শ্লোগান
দিতে থাকে। বিজেপির সদস্যরাও ‘এআইইউডিএফ-কংগ্রস ভাই ভাই, এআইইউডিএফ-কংগ্রেসের
ষড়যন্ত্র চলবে না, জয় আই অসম’ ইত্যাদি শ্লোগান
দিতে থাকলে কংগ্রেস, এআইইউডিএফ বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করে।
কোন মন্তব্য নেই