তােমার নাম, আমার নাম পার্ক সার্কাস শাহিনবাগ
সুমনা রহমান চৌধুরীঃ
দুহাজার কুডির ভারতবর্ষের একজন বাসিন্দা, ধর্মসুত্রে এবং লিঙ্গসুত্রে সংখ্যালঘু থেকেও চুড়ান্ত নীচে যার
অবস্থান, নারীদিবস নিয়ে সে ঠিক কি লিখতে পারে! যদি মানুষ হিসেবে, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে
সে তার অধিকার চাইতে যায়, দেশজোড়া ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে যায়, অথবা দেশের
সংবিধানের উপর আঘাতকে রুখতে যায়, বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অর্থনীতির চুড়ান্ত বেহাল অবস্থার বিরুদ্ধে
কিছু বলতে যায় তখনই দেশবিরােধী, পাকিস্তানি বলে ঠেলে পিছনে সরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। তার পরিধেয়
পােষাক দেথে আন্দোলনের জাত বিচার করা হয়। শাসকের অন্যায় কোন নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে তার ধর্মীয়
পরিচয় সামনে টেনে আনা হয়। সন্ত্রাসবাদের মদতকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নাগরিকত্ব প্রমাণের চ্যালেঞ্জ :
অবস্থান, নারীদিবস নিয়ে সে ঠিক কি লিখতে পারে! যদি মানুষ হিসেবে, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে
সে তার অধিকার চাইতে যায়, দেশজোড়া ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে যায়, অথবা দেশের
সংবিধানের উপর আঘাতকে রুখতে যায়, বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অর্থনীতির চুড়ান্ত বেহাল অবস্থার বিরুদ্ধে
কিছু বলতে যায় তখনই দেশবিরােধী, পাকিস্তানি বলে ঠেলে পিছনে সরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। তার পরিধেয়
পােষাক দেথে আন্দোলনের জাত বিচার করা হয়। শাসকের অন্যায় কোন নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে তার ধর্মীয়
পরিচয় সামনে টেনে আনা হয়। সন্ত্রাসবাদের মদতকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নাগরিকত্ব প্রমাণের চ্যালেঞ্জ :
ওয়া হয়। এবং তারপর কাগজ কেন দেখাবাে প্রশ্ন করলে তাকে নিজের দেশেই 'অবৈধ বিদেশী হিসেবে চিহ্নিত
করা হয়। এহেন রাষ্ট্রীয়-সামাজিক অবস্থায় নারী দিবস নিয়ে আলাদা করে কি লেখা যায়। এটা ভাবতে ভাবতেই
কথাগুলাে বলছি। নারী, সেটা হওয়ার আগেও তাে 'মানুষ' শব্দটা আসে। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে নারীরা
মানুষ হলেও ঠিক যেন মানুষের মতাে নয়। আর ধর্মসুত্রে সংখ্যালঘু হলে তাে আরােই ন্য। কত যে গুজব,
কত যে ঘৃণা তাদের নিযে! সন্দেহের চক্রব্যুহে আবর্তিত হতে থাকে সারাটা জীবন।
করা হয়। এহেন রাষ্ট্রীয়-সামাজিক অবস্থায় নারী দিবস নিয়ে আলাদা করে কি লেখা যায়। এটা ভাবতে ভাবতেই
কথাগুলাে বলছি। নারী, সেটা হওয়ার আগেও তাে 'মানুষ' শব্দটা আসে। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে নারীরা
মানুষ হলেও ঠিক যেন মানুষের মতাে নয়। আর ধর্মসুত্রে সংখ্যালঘু হলে তাে আরােই ন্য। কত যে গুজব,
কত যে ঘৃণা তাদের নিযে! সন্দেহের চক্রব্যুহে আবর্তিত হতে থাকে সারাটা জীবন।
আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারীদিবসের প্রতিবছর ই একটা প্রতিপাদ্য বিষয় বা থিম থাকে।
এবছরের থিম : "I am Generation Equality: Realizing Women's Rights." প্রমিত বাংলায়
অনুবাদ করলে দাঁড়ায় “প্রজন্ম হােক সমতার : অনুভব হােক নারীর অধিকার।” এই যে সমতা
শব্দটা লিখলাম, তা কি শুধুই নারী-পুরুষের সমতা, নাকি নারীর নিজের লিঙ্গের মাঝেও শ্রেণী সমতা?
কারন এই সমাজ ব্যবস্থায় শুধু নারী-পুরুষের মাঝেই অসমতা বিরাজ করে, নারীতে-নারীতেও চুড়ান্ত অসমতা বহাল থাকে। যেমন একজন মানুষ বােরখা হিজাব পরলেই আর নারী হিসেবে গণ্য হােন না, তার পরিচয় হয়ে উঠে যৌনদাসী, পর্দার ভিতরে থাকা বিরিয়ানি ও বাচ্চা তৈরির মেশিন। অথবা শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত নারীর মাঝে যে শ্রেণীগত বিভাজন, শহুরে এবং গ্রাণীন নারীর মাঝে যে শ্রেণীগত বিভাজন, ধনী এবং গরীব নারীর মাঝে যে শ্রেণীগত বিভাজন, সেটাও তাে অসমতা ই! তাহলে প্রজন্ম হােক সমতার মানেখানা তাে শুধু নারী-পুরুষের সমতা ই নয়, নারীতে নারীতে সমতাও। অধিকার ক্ষেত্রেও তাে তাই। শিক্ষিত ধনী নারীটির মতাে সমান অধিকার অশিক্ষিত গরীব নারীটিরও আছে। এবং বিপরীত লিঙ্গের পুরুষ নামক শ্রেণীটির মতাে অবিকল একই অধিকার নারী নামক শ্রেণীটির ও আছে। এই বিষযটা শুধু পুরুষকেই অনুভব করলে হবে না, নারীকে নিজেও অনুভব করতে হবে। নারী দিবসের প্রেক্ষিতে আরাে কিছু বলার আগে এই দিনটি উদ্যাপনের ইতিহাসটাও ছােট করে বলে রাখা দরকার। এই দিনটি উদ্যাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের, সংগ্রামের ইতিহাস। দীর্ঘদিনের সংগ্রামের সেই ইতিহাসকে সংক্ষিপ্ত ভাবে বলতে গেলে খানিকটা এরকম, ১৮৫৭ সালের ৮ ই মার্চ নিউইয়র্কের সূতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা রাস্তায় নেমেছিলেন মূলত তিনটে দাবী নিযে -
এবছরের থিম : "I am Generation Equality: Realizing Women's Rights." প্রমিত বাংলায়
অনুবাদ করলে দাঁড়ায় “প্রজন্ম হােক সমতার : অনুভব হােক নারীর অধিকার।” এই যে সমতা
শব্দটা লিখলাম, তা কি শুধুই নারী-পুরুষের সমতা, নাকি নারীর নিজের লিঙ্গের মাঝেও শ্রেণী সমতা?
কারন এই সমাজ ব্যবস্থায় শুধু নারী-পুরুষের মাঝেই অসমতা বিরাজ করে, নারীতে-নারীতেও চুড়ান্ত অসমতা বহাল থাকে। যেমন একজন মানুষ বােরখা হিজাব পরলেই আর নারী হিসেবে গণ্য হােন না, তার পরিচয় হয়ে উঠে যৌনদাসী, পর্দার ভিতরে থাকা বিরিয়ানি ও বাচ্চা তৈরির মেশিন। অথবা শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত নারীর মাঝে যে শ্রেণীগত বিভাজন, শহুরে এবং গ্রাণীন নারীর মাঝে যে শ্রেণীগত বিভাজন, ধনী এবং গরীব নারীর মাঝে যে শ্রেণীগত বিভাজন, সেটাও তাে অসমতা ই! তাহলে প্রজন্ম হােক সমতার মানেখানা তাে শুধু নারী-পুরুষের সমতা ই নয়, নারীতে নারীতে সমতাও। অধিকার ক্ষেত্রেও তাে তাই। শিক্ষিত ধনী নারীটির মতাে সমান অধিকার অশিক্ষিত গরীব নারীটিরও আছে। এবং বিপরীত লিঙ্গের পুরুষ নামক শ্রেণীটির মতাে অবিকল একই অধিকার নারী নামক শ্রেণীটির ও আছে। এই বিষযটা শুধু পুরুষকেই অনুভব করলে হবে না, নারীকে নিজেও অনুভব করতে হবে। নারী দিবসের প্রেক্ষিতে আরাে কিছু বলার আগে এই দিনটি উদ্যাপনের ইতিহাসটাও ছােট করে বলে রাখা দরকার। এই দিনটি উদ্যাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের, সংগ্রামের ইতিহাস। দীর্ঘদিনের সংগ্রামের সেই ইতিহাসকে সংক্ষিপ্ত ভাবে বলতে গেলে খানিকটা এরকম, ১৮৫৭ সালের ৮ ই মার্চ নিউইয়র্কের সূতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা রাস্তায় নেমেছিলেন মূলত তিনটে দাবী নিযে -
১) মজুরী বৈষম্য। ২) কাজের সময় নির্দিষ্ট করা। ৩) কর্মক্ষেত্রের অমানবিক পরিবেশ বন্ধ করা।
কিন্তু রাষ্ট্র, শাসক সেদিন দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকদের এহেন আস্পর্ধা দেখে অবাক হওয়ার থেকেও বেশী রাগে
জ্বলে উঠেছিল। ফলস্বরূপ নারী শ্রমিকদের সেই মিছিলে চললাে সরকারী লেঠেল বাহিনীর তান্ডব।
মারাত্বকভাবে আহত হলেন আন্দোলনকারী নারী শ্রমিকেরা। পৃথিবীর ইতিহাসে নারীর নিজের অধিকার
আদায়ের লক্ষ্যে সবচেযে সংগঠিত এবং লড়াই বােধহয় এই সূতা কারখানার নারী শ্রমিকদের হাত ধরেই শুরু
হয়েছিল। তারও অনেক পরে ১৯০৮ সালে জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন, সমাজতান্ত্রিক নেত্রী
ক্লারা জেটকিনের নেতত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। এরপর ১৯১০ সালে কোপেনহাগেনে
অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে বিশ্বের ১৭ টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি যােগ দেন এবং
এই সম্মেলনেই ক্লারা জেটকিন প্রস্তাব করেন "৮ ই মার্চ" দিনটি 'আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস' হিসেবে
পালনের। সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ সাল থেকে এই দিনটিকে নারীদের সমঅধিকার দিবস হিসেবে পালন
করার। ১৯১৪ সাল থেকে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ৮ ই মার্চ উদযাপন করা শুরু করে। অবশেষে ১৯৭৫ সালে
এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে রাষ্ট্রসংঘ এবং বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান করে দিবসটি
উদযাপন করার।
জ্বলে উঠেছিল। ফলস্বরূপ নারী শ্রমিকদের সেই মিছিলে চললাে সরকারী লেঠেল বাহিনীর তান্ডব।
মারাত্বকভাবে আহত হলেন আন্দোলনকারী নারী শ্রমিকেরা। পৃথিবীর ইতিহাসে নারীর নিজের অধিকার
আদায়ের লক্ষ্যে সবচেযে সংগঠিত এবং লড়াই বােধহয় এই সূতা কারখানার নারী শ্রমিকদের হাত ধরেই শুরু
হয়েছিল। তারও অনেক পরে ১৯০৮ সালে জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন, সমাজতান্ত্রিক নেত্রী
ক্লারা জেটকিনের নেতত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। এরপর ১৯১০ সালে কোপেনহাগেনে
অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে বিশ্বের ১৭ টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি যােগ দেন এবং
এই সম্মেলনেই ক্লারা জেটকিন প্রস্তাব করেন "৮ ই মার্চ" দিনটি 'আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস' হিসেবে
পালনের। সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ সাল থেকে এই দিনটিকে নারীদের সমঅধিকার দিবস হিসেবে পালন
করার। ১৯১৪ সাল থেকে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ৮ ই মার্চ উদযাপন করা শুরু করে। অবশেষে ১৯৭৫ সালে
এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে রাষ্ট্রসংঘ এবং বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান করে দিবসটি
উদযাপন করার।
আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে যদি বলি, তাহলে দেখা যায় সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক এবং রাষ্ট্রীয়- এই
প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই নারীরা ভ্যাবহভাবে শােষন এবং বৈষম্যের শিকার। ১৯৯৪ সালে ভারত রাষ্ট্রসংঘের সিডােও
(CEDAW) অথবা "The Convention on the Elimination of all forms of Discrimination Against Women" -
21501 PCS নারীর ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে। নারীর পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অসমতা
দূর করার লক্ষ্যে। কিন্তু একটি এক্ট বা কনভেনশন গ্রহণ করলেই তাে শুধু হয় না, তার বাস্তবায়ন ও জরুরী।
ভারতবর্ষের নিরিখে সিডােও এক্টগুলি আজোও বাস্তবায়িত হওয়ার থেকে কয়েকশাে হাজার মাইল দূরে অবস্থান
করছে। ভারতের সংবিধানে সামাজিক, রাজনৈতিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রে প্রত্যেকজন
মানুষের সমঅধিকার স্বীকৃত আছে। কর্মক্ষেত্রেও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভারত ইন্টারন্যাশনাল লেবার
অর্গানাইজেশন কনভেনশনে স্বাক্ষর করে। কিন্তু বাস্তবতা?
প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই নারীরা ভ্যাবহভাবে শােষন এবং বৈষম্যের শিকার। ১৯৯৪ সালে ভারত রাষ্ট্রসংঘের সিডােও
(CEDAW) অথবা "The Convention on the Elimination of all forms of Discrimination Against Women" -
21501 PCS নারীর ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে। নারীর পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অসমতা
দূর করার লক্ষ্যে। কিন্তু একটি এক্ট বা কনভেনশন গ্রহণ করলেই তাে শুধু হয় না, তার বাস্তবায়ন ও জরুরী।
ভারতবর্ষের নিরিখে সিডােও এক্টগুলি আজোও বাস্তবায়িত হওয়ার থেকে কয়েকশাে হাজার মাইল দূরে অবস্থান
করছে। ভারতের সংবিধানে সামাজিক, রাজনৈতিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রে প্রত্যেকজন
মানুষের সমঅধিকার স্বীকৃত আছে। কর্মক্ষেত্রেও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভারত ইন্টারন্যাশনাল লেবার
অর্গানাইজেশন কনভেনশনে স্বাক্ষর করে। কিন্তু বাস্তবতা?
বাস্তবতা হলাে, এদেশে ৮০ শতাংশ নারী দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করে। এবং সংগঠিত এবং অসংগঠিত কাজ
করার প্রবণতাও এই দারিদ্রসীমারেখার নীচে বসবাসকারীদের মধ্যে বেশী দেখা যায়। ভারতে বিভিন্ন
কলকারখানা, নির্মান কাজ কৃষিক্ষেত্র, গৃহ পরিচারিকা, বিডি বাধা, ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদি পেশায় প্রায় ৮০ শতাংশ
নারী নিয়ােজিত আছেন। যদি কৃষিক্ষেত্রের কথা ধরা যায়, সেখানে নিয়ােজিত নারী শ্রমিকদের মধ্যে প্রায়
৯৭.৮ শতাংশ নারীই বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেন। শিল্পক্ষেত্র থেকে নির্মানকাজ - সব জায়গাতেই নারী
পুরুষের চেযে মজুরী কম পায়। এই ক্ষেত্রে করিমগঞ্জের একটা উদাহরণ দেই। গ্রাম করিমগঞ্জে সুপারির খােসা
ছাড়ানাের কাজে বহু সংখ্যক নারী নিয়ােজিত আছেন। এই কাজে সম্য লাগে বেশী এবং একটানা বসে কাজ
করতে হয়। ১০০০ সুপারির খােসা ছাড়িযে নারী শ্রমিকেরা সারাদিনে রােজগার করেন ৫০ থেকে ৬০ টাকা,
সেই জায়গায় একজন পুরুষ দিনমজুরের দৈনিক রােজগার ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। খেতমজুর হিসেবেও
অসংখ্য মহিলা মাঠে কাজ করেন। তাদের নিজের নামে কোন জমি নেই। একইভাবে, অসংগঠিত ক্ষেত্রের
মহিলা শ্রমিক যেমন নির্মাণ শ্রমিক, ঠিকে ঝি তথা অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কাজ করা মহিলারা স্বল্প
মাইনেতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতাে গেল নিম্নবিত্ত নারীর কথা। সরকারী চাকুরী থেকে শুরু
করে বিভিন্ন সেক্টরে নারীদের নিযােগ পুরুষদের থেকে কম। প্রায় তিনভাগ পুরুষের বিপরীতে নিয়ােজিত এক
ভাগ নারী। খােদ ভারতীয় সেনাবাহিনীতেই মহিলা অফিসারদের কম্যান্ড পজিশনে যাওয়ার সুযােগ ছিল না
এতদিন। মহিলা সেনারা তাঁদের অধিকারের দাবী তুলে সুপ্রীম কোর্টের দ্বারস্থ হলে খােদ ভারত সরকার এর
বিরােধীতা করে আদালতকে যুক্তি দেয় পুরুষ সৈন্যরা এখনও নারী কমান্ডারের আদেশ মানার জন্য
মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়। অনেক লড়াইযের পর অতি সম্প্রতি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সেনাবাহিনীর নারী
অফিসারেরা সে যােগ্যতা লাভ করলেও যুদ্ধ বিভাগগুলােতে নিয়ােজিত হওয়ার অধিকার এখনাে তাঁরা পাননি।
করার প্রবণতাও এই দারিদ্রসীমারেখার নীচে বসবাসকারীদের মধ্যে বেশী দেখা যায়। ভারতে বিভিন্ন
কলকারখানা, নির্মান কাজ কৃষিক্ষেত্র, গৃহ পরিচারিকা, বিডি বাধা, ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদি পেশায় প্রায় ৮০ শতাংশ
নারী নিয়ােজিত আছেন। যদি কৃষিক্ষেত্রের কথা ধরা যায়, সেখানে নিয়ােজিত নারী শ্রমিকদের মধ্যে প্রায়
৯৭.৮ শতাংশ নারীই বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেন। শিল্পক্ষেত্র থেকে নির্মানকাজ - সব জায়গাতেই নারী
পুরুষের চেযে মজুরী কম পায়। এই ক্ষেত্রে করিমগঞ্জের একটা উদাহরণ দেই। গ্রাম করিমগঞ্জে সুপারির খােসা
ছাড়ানাের কাজে বহু সংখ্যক নারী নিয়ােজিত আছেন। এই কাজে সম্য লাগে বেশী এবং একটানা বসে কাজ
করতে হয়। ১০০০ সুপারির খােসা ছাড়িযে নারী শ্রমিকেরা সারাদিনে রােজগার করেন ৫০ থেকে ৬০ টাকা,
সেই জায়গায় একজন পুরুষ দিনমজুরের দৈনিক রােজগার ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। খেতমজুর হিসেবেও
অসংখ্য মহিলা মাঠে কাজ করেন। তাদের নিজের নামে কোন জমি নেই। একইভাবে, অসংগঠিত ক্ষেত্রের
মহিলা শ্রমিক যেমন নির্মাণ শ্রমিক, ঠিকে ঝি তথা অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কাজ করা মহিলারা স্বল্প
মাইনেতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতাে গেল নিম্নবিত্ত নারীর কথা। সরকারী চাকুরী থেকে শুরু
করে বিভিন্ন সেক্টরে নারীদের নিযােগ পুরুষদের থেকে কম। প্রায় তিনভাগ পুরুষের বিপরীতে নিয়ােজিত এক
ভাগ নারী। খােদ ভারতীয় সেনাবাহিনীতেই মহিলা অফিসারদের কম্যান্ড পজিশনে যাওয়ার সুযােগ ছিল না
এতদিন। মহিলা সেনারা তাঁদের অধিকারের দাবী তুলে সুপ্রীম কোর্টের দ্বারস্থ হলে খােদ ভারত সরকার এর
বিরােধীতা করে আদালতকে যুক্তি দেয় পুরুষ সৈন্যরা এখনও নারী কমান্ডারের আদেশ মানার জন্য
মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়। অনেক লড়াইযের পর অতি সম্প্রতি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সেনাবাহিনীর নারী
অফিসারেরা সে যােগ্যতা লাভ করলেও যুদ্ধ বিভাগগুলােতে নিয়ােজিত হওয়ার অধিকার এখনাে তাঁরা পাননি।
কদিন আগেই সারা দেশে ঢাকঢােল পিটিযে প্রচার করা হলাে মােদি সরকার 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' শুধু
হিন্দুদের জন্যই করছেন না, তিন তালাক ব্যান করে মুসলমান বেটিদেরও এর আওতায় আনছেন। অর্থাৎ কিনা
শুধু তিন তালাক 'ব্যান' করেই মুসলমান বেটিদের শিক্ষাদীক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং সামাজিক জীবনেও
সমানাধিকার এনে দিচ্ছেন। এখানেই প্রশ্ন জাগে ইন্সট্যান্ট তিন তালাক বা তাৎক্ষনিক তিন তালাকের হার শহুরে
শিক্ষিত মুসলমান সমাজে মাত্র ০.১% (বিবিসির সমীক্ষানুযায়ী)! প্রান্তিক গ্রামীণ মুসলমান মহিলারাই বহুলভাবে
এর শিকার হতেন। এখনাে হবেন। অভাবের ঘরেই ঝগড়া-মারামারি বেশী হয় এবং গরীব মুসলমান পুরুষটি যদি
অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে শােষিত হয়ে থাকে, তবে গরীব মুসলমান বউটি হচ্ছে তিন ভাবে: অর্থনৈতিক,
সামাজিক এবং পারিবারিকভাবে। স্বামী বাইরের রাগ এসে ঝাড়ছে বৌটির উপর কারণ বাইরে প্রতিবাদ বা রাগ
করার অধিকার শাসক শ্রেণী তাকে দেয়নি। অতঃপর বাড়ি এসে বৌ ভাত দিতে কেন দেরি করছে সেটার জবাব
না পাওয়ায় বৌকে ইনস্ট্যান্ট তালাক দিচ্ছে। পুত্রসন্তান কেন হচ্ছে না সেটার জন্যও তালাক দিচ্ছে বৌকে।
এই যখন অবস্থা, তখন মুসলমান বেটিদের শিক্ষা, অর্থনৈতিক অবস্থান, এসব বদলের কোনও উপায় ভেবে
শুধুমাত্র তিন তালাক ব্যান মুসলমান মেয়েদের মুক্তি, স্বাধীনতা কীভাবে এনে দিতে পারে!
হিন্দুদের জন্যই করছেন না, তিন তালাক ব্যান করে মুসলমান বেটিদেরও এর আওতায় আনছেন। অর্থাৎ কিনা
শুধু তিন তালাক 'ব্যান' করেই মুসলমান বেটিদের শিক্ষাদীক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং সামাজিক জীবনেও
সমানাধিকার এনে দিচ্ছেন। এখানেই প্রশ্ন জাগে ইন্সট্যান্ট তিন তালাক বা তাৎক্ষনিক তিন তালাকের হার শহুরে
শিক্ষিত মুসলমান সমাজে মাত্র ০.১% (বিবিসির সমীক্ষানুযায়ী)! প্রান্তিক গ্রামীণ মুসলমান মহিলারাই বহুলভাবে
এর শিকার হতেন। এখনাে হবেন। অভাবের ঘরেই ঝগড়া-মারামারি বেশী হয় এবং গরীব মুসলমান পুরুষটি যদি
অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে শােষিত হয়ে থাকে, তবে গরীব মুসলমান বউটি হচ্ছে তিন ভাবে: অর্থনৈতিক,
সামাজিক এবং পারিবারিকভাবে। স্বামী বাইরের রাগ এসে ঝাড়ছে বৌটির উপর কারণ বাইরে প্রতিবাদ বা রাগ
করার অধিকার শাসক শ্রেণী তাকে দেয়নি। অতঃপর বাড়ি এসে বৌ ভাত দিতে কেন দেরি করছে সেটার জবাব
না পাওয়ায় বৌকে ইনস্ট্যান্ট তালাক দিচ্ছে। পুত্রসন্তান কেন হচ্ছে না সেটার জন্যও তালাক দিচ্ছে বৌকে।
এই যখন অবস্থা, তখন মুসলমান বেটিদের শিক্ষা, অর্থনৈতিক অবস্থান, এসব বদলের কোনও উপায় ভেবে
শুধুমাত্র তিন তালাক ব্যান মুসলমান মেয়েদের মুক্তি, স্বাধীনতা কীভাবে এনে দিতে পারে!
মুসলিম মহিলা বিল নিয়ে সুপ্রীমকোর্ট তাে যা বলার বলেই দিয়েছিল আগে। স্পষ্টভাবে রায় দিয়েছিল তাৎক্ষণিক
তিন তালাক অসাংবিধানিক, অবৈধ। কোরান শরিফেরও কোনও সমর্থন নেই ওতে। কিন্তু তারপরও মুসলমান
মহিলাদের ক্ষমতায়নের দোহাই দিয়ে ডিভাের্সের মতাে একটি দেওয়ানি বিষয়কে ফৌজদারি অপরাধের
আওতায় আনা হলাে। ডিভাের্স যদি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় তাহলে ডিভাের্স হওয়ার পরই
ডিভাের্সদাতা স্বামীর জেলজরিমানা হল। তাহলে যে ভারতীয় আইন বলে ডিভাের্স বা তালাক হলে স্ত্রীকে
খােরপােষ দিতে হবে, সেই খরপােষ কি স্বামী জেল থেকে পাঠাবে! এখানেই শ্রেণীর বিষয়টি আসে। বড়লােক
পরিবারের শিক্ষিত কোনও মেযে আত্মসম্মানের খাতিরে ডিভাের্সদাতা স্বামীর থেকে খরপােষ না আনলেও তার
খাওযাপরা চলে যাবে ভালভাবে। কিন্তু প্রান্তিক গ্রামীণ অশিক্ষিত তিন সন্তানের মা যে স্ত্রীটি, তার স্বামীর খরপােষ
ছাড়া খাওযাপরা চলবে কী করে? সুতরাং মােদি সরকারের তিন তালাকের পেছনে হন্যে হয়ে না ছুটে, আগে বরং সাচার কমিটির সুপারিশগুলাে মুসলমানদের উন্নতির জন্যে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজ, সমানাধিকার, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে কাজে পরিণত করতে সচেষ্ট হওয়া উচিত ছিল। প্রান্তিক গ্রামীণ মুসলমান মেয়েদের শিক্ষার আলােয় টেনে আনতে বিভিন্ন বৃত্তির ব্যবস্থা করার প্রয়ােজন ছিল। ফ্রি এডুকেশন, জীবিকামুখী
তিন তালাক অসাংবিধানিক, অবৈধ। কোরান শরিফেরও কোনও সমর্থন নেই ওতে। কিন্তু তারপরও মুসলমান
মহিলাদের ক্ষমতায়নের দোহাই দিয়ে ডিভাের্সের মতাে একটি দেওয়ানি বিষয়কে ফৌজদারি অপরাধের
আওতায় আনা হলাে। ডিভাের্স যদি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় তাহলে ডিভাের্স হওয়ার পরই
ডিভাের্সদাতা স্বামীর জেলজরিমানা হল। তাহলে যে ভারতীয় আইন বলে ডিভাের্স বা তালাক হলে স্ত্রীকে
খােরপােষ দিতে হবে, সেই খরপােষ কি স্বামী জেল থেকে পাঠাবে! এখানেই শ্রেণীর বিষয়টি আসে। বড়লােক
পরিবারের শিক্ষিত কোনও মেযে আত্মসম্মানের খাতিরে ডিভাের্সদাতা স্বামীর থেকে খরপােষ না আনলেও তার
খাওযাপরা চলে যাবে ভালভাবে। কিন্তু প্রান্তিক গ্রামীণ অশিক্ষিত তিন সন্তানের মা যে স্ত্রীটি, তার স্বামীর খরপােষ
ছাড়া খাওযাপরা চলবে কী করে? সুতরাং মােদি সরকারের তিন তালাকের পেছনে হন্যে হয়ে না ছুটে, আগে বরং সাচার কমিটির সুপারিশগুলাে মুসলমানদের উন্নতির জন্যে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজ, সমানাধিকার, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে কাজে পরিণত করতে সচেষ্ট হওয়া উচিত ছিল। প্রান্তিক গ্রামীণ মুসলমান মেয়েদের শিক্ষার আলােয় টেনে আনতে বিভিন্ন বৃত্তির ব্যবস্থা করার প্রয়ােজন ছিল। ফ্রি এডুকেশন, জীবিকামুখী
Tদেরকে নিয়ােজিত করার প্রয়ােজন ছিল। সরকারী চাকরির ক্ষেত্রে উৎসাহিত করার প্রয়ােজন ছিল। সর্বোপরি
CEADAW এর আর্টিকলগুলাে কাজে পরিণত করার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হওয়া উচিত ছিল। CEADAW এর ধারা
অনুযায়ী প্রত্যেক এক কিলােমিটারের মধ্যে পাবলিক টয়লেট, রেইপড বা যে কোন নির্যাতিত মহিলাদের জন্যে
প্রত্যেক জেলায় শেল্টার হােম, বাধ্যতামূলক বিবাহ রেজিস্ট্রেশন, সম কাজে সম বেতন সহ আরও নানা ধারা
যেগুলাে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মহিলাদের সুরক্ষা, অধিকার, উন্নতি এনে দিত! কিন্তু বাস্তবে আমাদের
দেশের সরকার তাৎক্ষণিক তিনতালাক রদ আর প্রমাণিত হওয়ার আগেই সন্দেহযুক্ত ধর্ষকদের এনকাউন্টারে
মেরে ফেলার মধ্যেই নারীর ক্ষমতায়ন খুঁজে পায়!
CEADAW এর আর্টিকলগুলাে কাজে পরিণত করার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হওয়া উচিত ছিল। CEADAW এর ধারা
অনুযায়ী প্রত্যেক এক কিলােমিটারের মধ্যে পাবলিক টয়লেট, রেইপড বা যে কোন নির্যাতিত মহিলাদের জন্যে
প্রত্যেক জেলায় শেল্টার হােম, বাধ্যতামূলক বিবাহ রেজিস্ট্রেশন, সম কাজে সম বেতন সহ আরও নানা ধারা
যেগুলাে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মহিলাদের সুরক্ষা, অধিকার, উন্নতি এনে দিত! কিন্তু বাস্তবে আমাদের
দেশের সরকার তাৎক্ষণিক তিনতালাক রদ আর প্রমাণিত হওয়ার আগেই সন্দেহযুক্ত ধর্ষকদের এনকাউন্টারে
মেরে ফেলার মধ্যেই নারীর ক্ষমতায়ন খুঁজে পায়!
সারা দেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধর্ষণ, হত্যা, শারীরিক-মানসিক
নির্যাতন, দাম্পত্য হিংসা, যৌতুকজনিত অপরাধ ইত্যাদি প্রতিদিনই বর্ধিত হারে সংঘটিত হয়ে চলেছে।
কিন্তু সরকার এবং প্রশাসনের নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা ছিল তা
করা তাে দূর, ভাবাও হয় না। অন্যদিকে সরকারী তথ্যমতে এই ধরণের ঘটনা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে হ্য।
হালের কাটোয়া ধর্ষন কান্ড স্টাডি করলেই সরকারি মদতে নারীর উপর সংঘটিত সহিংস ঘটনা চাপা দেওয়ার
বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
নির্যাতন, দাম্পত্য হিংসা, যৌতুকজনিত অপরাধ ইত্যাদি প্রতিদিনই বর্ধিত হারে সংঘটিত হয়ে চলেছে।
কিন্তু সরকার এবং প্রশাসনের নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা ছিল তা
করা তাে দূর, ভাবাও হয় না। অন্যদিকে সরকারী তথ্যমতে এই ধরণের ঘটনা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে হ্য।
হালের কাটোয়া ধর্ষন কান্ড স্টাডি করলেই সরকারি মদতে নারীর উপর সংঘটিত সহিংস ঘটনা চাপা দেওয়ার
বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
বহু টাকা ব্যায়ে স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্প গ্রহণ করেছে ভারত সরকার। কিন্তু বাস্তবে এই প্রকল্প যেভাবে কার্যকরী
হওয়ার কথা ছিল, হ্যনি। মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্যকর পাবলিক শৌচালয-প্রস্রাবাগারের অভাব। মাসিক ঋতুস্রাবের
সময় ব্যবহারযােগ্য স্বাস্থ্যকর সেনিটারি প্যাডের অভাব। একইভাবে, যৌন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার্য বা জন্ম নিয়ন্ত্রণের
জন্য প্রযােজনীয় সামগ্রীও বেশী দামের জন্য দরিদ্র সীমারেখার নীচের মহিলাদের কাছে যােগাড় করা কঠিন।
হওয়ার কথা ছিল, হ্যনি। মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্যকর পাবলিক শৌচালয-প্রস্রাবাগারের অভাব। মাসিক ঋতুস্রাবের
সময় ব্যবহারযােগ্য স্বাস্থ্যকর সেনিটারি প্যাডের অভাব। একইভাবে, যৌন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার্য বা জন্ম নিয়ন্ত্রণের
জন্য প্রযােজনীয় সামগ্রীও বেশী দামের জন্য দরিদ্র সীমারেখার নীচের মহিলাদের কাছে যােগাড় করা কঠিন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীদিবসে তাঁর সােস্যাল মিডিয়া একাউন্ট একদিনের জন্যে নারীদের সম্মানে ছাড়ছেন।
অথচ শুধু যদি আসামের কথাই ধরি, তাহলে এই রাজ্যে মােট ১৪ টি লােকসভা আসন আছে। অথচ কেবলমাত্র
৬টিতেই মহিলা প্রার্থী রয়েছেন দলীয়-নির্দল সব মিলিযে। বিধানসভায় ৬.৩৫%। মহিলাদের জন্য ৩৩%
সংরক্ষণের বিল সংসদে পেশ হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কি মনে হয় না, নারীর ক্ষমতায়ন শুধু সােস্যাল
মিডিয়া ছেড়ে দিলেই হয় না, বাস্তবে নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিযােগের সুযােগ, নারীর জীবিকা, শিক্ষা, সন্মান
সুনিশ্চিত করার নাম ই নারীর ক্ষমতায়ন! একদিকে বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, অপরদিকে সেই বেটিরা
নিজেদের দাবী আদায়ে রাস্তায় নামলে, সরকারের কোন নীতির বিরােধীতা করলে তাদের সেডিশন চার্জ লাগিয়ে
জেলে পােরা, হােস্টেলে ঢুকে রড দিয়ে মাথা ফাটানােতে আর যাই থাক, নারীর ক্ষমতায়ন থাকে না।
অথচ শুধু যদি আসামের কথাই ধরি, তাহলে এই রাজ্যে মােট ১৪ টি লােকসভা আসন আছে। অথচ কেবলমাত্র
৬টিতেই মহিলা প্রার্থী রয়েছেন দলীয়-নির্দল সব মিলিযে। বিধানসভায় ৬.৩৫%। মহিলাদের জন্য ৩৩%
সংরক্ষণের বিল সংসদে পেশ হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কি মনে হয় না, নারীর ক্ষমতায়ন শুধু সােস্যাল
মিডিয়া ছেড়ে দিলেই হয় না, বাস্তবে নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিযােগের সুযােগ, নারীর জীবিকা, শিক্ষা, সন্মান
সুনিশ্চিত করার নাম ই নারীর ক্ষমতায়ন! একদিকে বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, অপরদিকে সেই বেটিরা
নিজেদের দাবী আদায়ে রাস্তায় নামলে, সরকারের কোন নীতির বিরােধীতা করলে তাদের সেডিশন চার্জ লাগিয়ে
জেলে পােরা, হােস্টেলে ঢুকে রড দিয়ে মাথা ফাটানােতে আর যাই থাক, নারীর ক্ষমতায়ন থাকে না।
এনআরসিতে সবথেকে বেশী বৈষম্যের শিকার নারীরা। আসামের দিকে তাকালেই দেখা যাবে সবথেকে বেশী
ডি-ভােটার বা সন্দেহযুক্ত ভােটার নারীরা। সবচেয়ে বেশি ঘােষিত বিদেশিও নারীরা। সরকার থেকে নাগরিকত্ব
প্রমাণের জন্যে যে যে নথিপত্র চাওয়া হয়েছিল তার বেশিরভাগই পিতৃতান্ত্রিক সমাজ রাষ্ট্রে নারীর থাকে না।
নারীর নামে সম্পত্তি কেনা হয় না, বাবার সম্পত্তিতেও লিখিত ভাবে মেয়ের নাম যােগ হয় না। তাই তার জমির
বৈধ কোনাে দলিল নেই। অথচ স্বামীর পরিচযে এনআরসি-তে কিছু হবার নয়। পিতা এবং তাঁর দিক থেকে
যােগাড় করা প্রমাণই প্রমাণ বলে গ্রাহ্য হবে patrilineal legacy)! আসামে বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিবাহিত
মেয়েদের নাম বাবার বাড়ি থেকে ইচ্ছে করে, অনেক ক্ষেত্রে অজ্ঞানতাবশত, বংশলতিকায় ঢুকানাে হয় নি।
ফলস্বরূপ এনআরসিতে তাদের নাম আসে নি। রাষ্ট্রহীন হযে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনেলের চক্কর কাটছেন এখন তারা।
ডি-ভােটার বা সন্দেহযুক্ত ভােটার নারীরা। সবচেয়ে বেশি ঘােষিত বিদেশিও নারীরা। সরকার থেকে নাগরিকত্ব
প্রমাণের জন্যে যে যে নথিপত্র চাওয়া হয়েছিল তার বেশিরভাগই পিতৃতান্ত্রিক সমাজ রাষ্ট্রে নারীর থাকে না।
নারীর নামে সম্পত্তি কেনা হয় না, বাবার সম্পত্তিতেও লিখিত ভাবে মেয়ের নাম যােগ হয় না। তাই তার জমির
বৈধ কোনাে দলিল নেই। অথচ স্বামীর পরিচযে এনআরসি-তে কিছু হবার নয়। পিতা এবং তাঁর দিক থেকে
যােগাড় করা প্রমাণই প্রমাণ বলে গ্রাহ্য হবে patrilineal legacy)! আসামে বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিবাহিত
মেয়েদের নাম বাবার বাড়ি থেকে ইচ্ছে করে, অনেক ক্ষেত্রে অজ্ঞানতাবশত, বংশলতিকায় ঢুকানাে হয় নি।
ফলস্বরূপ এনআরসিতে তাদের নাম আসে নি। রাষ্ট্রহীন হযে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনেলের চক্কর কাটছেন এখন তারা।
আসামে ২০০২ সালের আগের বেশীর প্রান্তিক অশিক্ষিত দরিদ্র প্রজন্মের জন্মের প্রমাণ পত্র নেই। স্কুলে ভর্তিও
খুব কম সংখ্যকই হতেন। যারাও বা হতেন তাদের অভিবাবকদের ইচ্ছে এবং স্মৃতি অনুযায়ী শিশুর বয়েস
বাড়িয়ে বা কমিয়ে লেখানাে হত। মাধ্যমিকের বাের্ড রেজিস্ট্রেশনের কার্ড বয়েসের প্রমাণপত্র হয় বটে, কিন্তু
মাধ্যমিক অব্দি যাওয়ার সুযােগ তাে গ্রাম আসামের ২০ ভাগ মেযের ও হয় না! তাহলে প্রান্তিক নারী তার জন্ম
তারিখ বা বয়েস প্রমাণ করবে কি দিযে? ভারতবর্ষ নামক রাষ্ট্রে বিবাহিত নারীর পরিচয় ন্যস্ত থাকে স্বামীর উপর।
খুব কম সংখ্যকই হতেন। যারাও বা হতেন তাদের অভিবাবকদের ইচ্ছে এবং স্মৃতি অনুযায়ী শিশুর বয়েস
বাড়িয়ে বা কমিয়ে লেখানাে হত। মাধ্যমিকের বাের্ড রেজিস্ট্রেশনের কার্ড বয়েসের প্রমাণপত্র হয় বটে, কিন্তু
মাধ্যমিক অব্দি যাওয়ার সুযােগ তাে গ্রাম আসামের ২০ ভাগ মেযের ও হয় না! তাহলে প্রান্তিক নারী তার জন্ম
তারিখ বা বয়েস প্রমাণ করবে কি দিযে? ভারতবর্ষ নামক রাষ্ট্রে বিবাহিত নারীর পরিচয় ন্যস্ত থাকে স্বামীর উপর।
সব ডকুমেন্টে অব্দি অভিবাবক হিসেবে স্বামীর। হঠাৎ করে ডকুমেন্টের বদল না ঘটিযেই এনআরসি নারীকে
করে দিল পিতৃনির্ভর। এবং কন্যা হিসেবেও নিজেকে প্রমাণ করবার দায়িত্ব চাপিয়ে দিল খােদ নারীর কাঁধে।
মা'যের পরিচয় এনআরসি-তে গ্রাহ্য হয় না। তাহলে যে মা'যের বাবার সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে তার ক্ষেত্রে
কি হবে? উত্তর জানা নেই। আসামের ক্ষেত্রে যেসব প্রান্তিক নারীরা না জেনে শ্বশুরঘরের লিগ্যাসি
দেখিয়েছিলেন তাদের একজনের নামও এনআরসি-তে ওঠেনি। গ্রামীন মুসলমান নারীদের অনেকেরই বিয়ের
পরে নাম বদল হ্য। এবং আরেকটা জরুরী বিষয় হলাে সেনসাস কর্মী এবং ইলেকশন অফিস সহ সবকটা
অফিসেই কর্মচারীরা আপন মনের মাধুরী মিশাযে আরবীয় নামের বানান লেখেন। আমার মাযের ই 'বেগম'
উপাধি ইংরেজিতে তিন ডকুমেন্টে তিনরকম। একজাযগায় Begum, আরেকজাযগায় Begam,
তৃতীয়টিতে Begom। এইরকম হাজার হাজার নমুনা আছে। এবং ডকুমেন্টে শুধু নামের অমিলের জন্যেই
হাজার হাজার নারীর নাম আসামের এনআরসি তে বাদ গেছে। এই সংখ্যার অনেকটা জুড়েই আছেন
বাংলাভাষী মুসলমান, যাদের মূলতঃ দুধরণের বৈষম্যের শিকার হতে হ্য: এক, মুসলমান হিসেবে এবং দুই,
নারী হিসেবে। নারীর পরেই যাদের উপর রাষ্ট্রহীন হওয়ার সবথেকে বড় ঝুঁকি, তাঁরা ট্রান্সজেন্ডার সেকশন। নতুন নাম, নতুন পরিচয় নিয়ে পরিবারচ্যুত হতে হলেও তারা বাঁচবে ঠিক করেছিল। এনআরসি-তে তাদের হালও শােচনীয়। যে নারী অন্যধর্মে বা অন্য কাস্টে বিয়ে করবার জন্যে পরিবার দ্বারা ত্যাজ্য, তার অবস্থাও অনূরূপ।
রাষ্ট্রীয় নাগরিকপঞ্জী, নিয়ম-বহির্ভুত উচ্ছেদ এবং ডিটেনশন ক্যাম্পগুলােতে নারীদের যেসব সাংবিধানিক
সুরক্ষা পাওয়ার কথা তা তাদের দেওয়া হয় না। এর প্রত্যক্ষ উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যায় কুলসুমা বেগমের
ঘটনা। হােজাই জেলার নাথুটিতে বলপূর্বক উচ্ছেদ করতে গিয়ে পুলিশ লাঠি দিয়ে মারধাের করায় প্রাণ হারান
আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা কুলসুমা বেগম। বলপূর্বক, নিয়ম-বহির্ভূত উচ্ছেদ, প্রশাসনের উৎপীড়নের শিকার হাজার
হাজার নামের পাশে কুলসুমাও একটি উদাহরণ মাত্রই। আসামের প্রত্যেকটা ডিটেনশন ক্যাম্পে বিপুল সংখ্যক
নারীকে বিদেশী তকমা লাগিয়ে বন্দী করে রাখা হযেছে। ন্যূনতম কোন সুবিধাও ক্যাম্পে বন্দী নারীরা উপভােগ
করতে পারেন না। পরিবার হারা, সন্তান হারা হয়ে ধুকে ধুকে মৃত্যুর অপেক্ষায় তাঁরা বেঁচে আছেন।
সুরক্ষা পাওয়ার কথা তা তাদের দেওয়া হয় না। এর প্রত্যক্ষ উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যায় কুলসুমা বেগমের
ঘটনা। হােজাই জেলার নাথুটিতে বলপূর্বক উচ্ছেদ করতে গিয়ে পুলিশ লাঠি দিয়ে মারধাের করায় প্রাণ হারান
আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা কুলসুমা বেগম। বলপূর্বক, নিয়ম-বহির্ভূত উচ্ছেদ, প্রশাসনের উৎপীড়নের শিকার হাজার
হাজার নামের পাশে কুলসুমাও একটি উদাহরণ মাত্রই। আসামের প্রত্যেকটা ডিটেনশন ক্যাম্পে বিপুল সংখ্যক
নারীকে বিদেশী তকমা লাগিয়ে বন্দী করে রাখা হযেছে। ন্যূনতম কোন সুবিধাও ক্যাম্পে বন্দী নারীরা উপভােগ
করতে পারেন না। পরিবার হারা, সন্তান হারা হয়ে ধুকে ধুকে মৃত্যুর অপেক্ষায় তাঁরা বেঁচে আছেন।
আজকে যখন রাস্তায় নেমে সংবিধান হাতে নারীরা আওয়াজ তুলছেন 'পিতৃতান্ত্রিক এনআরসি চাই না',
'বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইন চাই না', ডিটেনশন ক্যাম্প চাই না, যখন সােচ্চারে জানান দিচ্ছে দেশকে ধর্মের
নামে ভাগ বাটো করা চলবে না, দাঙ্গা চাই না, শান্তি চাই, প্রগতি চাই, সমান মজুরি চাই, মহিলাদের ক্ষমতায়নের
নামে ‘বেটি বাঁচাও' এর ফাঁকা প্রতিশ্রুতি চাই না, অবস্থানে বসছে শাহীনবাগ, পার্কসার্কাস, পলাশীতে, ঠিক
তখনই পিতৃতান্ত্রিক রাষ্ট্র, ফ্যাসিস্ট শাসক সমস্ত রকমের আক্রমণ নামিয়ে আনছে আন্দোলনকারী নারীদের
উপর। রাতের অন্ধকারে মুখ ঢেকে হােস্টেলে ঢুকে তাদের মাথা ফাঁটিয়ে আসছে। মারছে, কারাগারের অন্ধকারে
ঠেলে দিচ্ছে, সারি সারি পুলিশের চোখের সামনে আন্দোলনরত নারীদের বন্দুক হাতে গুলি ছুঁড়ছে। কেড়ে
নেওয়া হচ্ছে নারীর কথা বলার স্বাধীনতা। 'না' বলার অধিকার।
'বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইন চাই না', ডিটেনশন ক্যাম্প চাই না, যখন সােচ্চারে জানান দিচ্ছে দেশকে ধর্মের
নামে ভাগ বাটো করা চলবে না, দাঙ্গা চাই না, শান্তি চাই, প্রগতি চাই, সমান মজুরি চাই, মহিলাদের ক্ষমতায়নের
নামে ‘বেটি বাঁচাও' এর ফাঁকা প্রতিশ্রুতি চাই না, অবস্থানে বসছে শাহীনবাগ, পার্কসার্কাস, পলাশীতে, ঠিক
তখনই পিতৃতান্ত্রিক রাষ্ট্র, ফ্যাসিস্ট শাসক সমস্ত রকমের আক্রমণ নামিয়ে আনছে আন্দোলনকারী নারীদের
উপর। রাতের অন্ধকারে মুখ ঢেকে হােস্টেলে ঢুকে তাদের মাথা ফাঁটিয়ে আসছে। মারছে, কারাগারের অন্ধকারে
ঠেলে দিচ্ছে, সারি সারি পুলিশের চোখের সামনে আন্দোলনরত নারীদের বন্দুক হাতে গুলি ছুঁড়ছে। কেড়ে
নেওয়া হচ্ছে নারীর কথা বলার স্বাধীনতা। 'না' বলার অধিকার।
শাহিনবাগে মুসলমান নারীরা পিতৃতান্ত্রিক এনআরসি, বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব (সংশােধনী) আইন বাতিলের
দাবীতে অবস্থানে বসেছেন, নিপীড়ক রাষ্ট্রের দালালদের চোখে চোখ রেখে বলছেন, "এটা আমার দেশ। এদেশ
ছেড়ে কোথাও যাবাে।
দাবীতে অবস্থানে বসেছেন, নিপীড়ক রাষ্ট্রের দালালদের চোখে চোখ রেখে বলছেন, "এটা আমার দেশ। এদেশ
ছেড়ে কোথাও যাবাে।
আমরা", শাসকের দালাল মিডিয়াদের ঢুকতে দিচ্ছেন না অবস্থান মঞ্চে, রাতের পর রাত খােলা আকাশের নীচে
বসে আছেন, হিজাব বােরখা পরেই নিজের অধিকারের দাবীতে লড়ছেন, এটা লিঙ্গগত জাগরন ন্য?
যে আন্দোলন শাসকদের ভয় পাইয়ে দিচ্ছে! কেবল ভারতীয় সমাজে নয় বরং সমগ্র দক্ষিন এশিয়া জুড়েই
এক অনন্য নজির গড়ে তুলছে, নারীরাও রাজপথের আন্দোলনে সমান ভুমিকা রাখছেন, বিভিন্ন স্থানে নেতৃত্ব
দিচ্ছেন, মানুষকে সংগঠিত করছেন। বাবাসাহেব আম্বেদকরের ছবি আর সংবিধানের সাথে হিজাব, বােরখা
মিশে গিযে এক নতুন চিন্তা, নতুন ভাষ্য তৈরী করছে না?
বসে আছেন, হিজাব বােরখা পরেই নিজের অধিকারের দাবীতে লড়ছেন, এটা লিঙ্গগত জাগরন ন্য?
যে আন্দোলন শাসকদের ভয় পাইয়ে দিচ্ছে! কেবল ভারতীয় সমাজে নয় বরং সমগ্র দক্ষিন এশিয়া জুড়েই
এক অনন্য নজির গড়ে তুলছে, নারীরাও রাজপথের আন্দোলনে সমান ভুমিকা রাখছেন, বিভিন্ন স্থানে নেতৃত্ব
দিচ্ছেন, মানুষকে সংগঠিত করছেন। বাবাসাহেব আম্বেদকরের ছবি আর সংবিধানের সাথে হিজাব, বােরখা
মিশে গিযে এক নতুন চিন্তা, নতুন ভাষ্য তৈরী করছে না?
কিন্তু ঠিক যে সময়ে সংখ্যালঘু সমাজের রক্ষনশীল চরিত্রকে অতিক্রম করে ঘর-পরিবারের পাশাপাশি
শাহীনবাগের নারীদের প্রতিবাদের এই আওযাজ অতীতকে পিছনে ফেলে এক নতুন সমযের বার্তা দিচ্ছে,
মুসলমান নারীদের পাশাপাশি অমুসলমান নারীরাও হিজাব পরে মুসলমানদের পােশাককে বিশ্বজুড়ে
অপমানের বিষয় করে তুলবার বিরুদ্ধে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর 'পােষাক দেখে চেনা যায়' মন্তব্যের বিরুদ্ধে,
দেশজোড়া বহমান ইসলামফোবিত্যার বিরুদ্ধে, আত্মমর্যাদার প্রশ্নকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে, নারী কী
পােশাক পরবে কী খাবে এই নিয়ে স্বয়ং নারীরা নিজে সিদ্ধান্ত নেবার প্রশ্নকে উর্ধ্বে তুলে ধরবার সংগ্রামে
নেমেছে, ঠিক তখনই তসলিমা নাসরিন সহ একশ্রেণীর সুবিধাবাদী, শাসকের পদলেহনকারী নারীবাদী মুখােশে
মুখ ঢাকা তাবেদার নেমেছেন বােরখা পরা আন্দোলন সহী নারীবাদ হলাে কি হলাে না সেই তত্ব পর্যালােচনায়।
প্রখ্যাত নারীবাদী তসলিমা নাসরিন ইসলামফোবিযা ভুগতে ভুগতে নারীবাদের সংজ্ঞা ভুলে গেছেন! মুসলমান
মৌলবাদীদের কুকর্মের দায় এনে সমস্ত সাধারন মুসলমান সমাজকেই অপরাধী হিসেবে দেগে দিচ্ছেন।
অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে 'নারীবাদের' ডেফিনেশন হিসেবে লেখা রযেছে , "The advocacy of Women's rights
on the ground of the equality of the sexes." আরাে সহজ করে বললে, নারী-পুরুষের রাজনৈতিক,
অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমতার পক্ষে থাকার নাম নারীবাদ। আরােও সহজ করে বললে, নারীবাদী সে
মানুষটিই, যে নারী এবং পুরুষ দুজনকে সম্পূর্ণ মানুষ বলে মনে করে এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা এবং
সমানাধিকারে বিশ্বাস করে। সেই সমানাধিকারের আন্দোলনের সাথে পােষাকের কোন সম্পর্ক নেই। নিজের
অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের সাথে পােষাকের কোন সম্পর্ক নেই। বরং কেউ পােষাকের দোহাই দিযে
নারীআন্দোলন মাপতে চাইলে তারসাথে পিতৃতন্ত্রের ধ্বজাধারীদের কোন ফারাক ই আসলে থাকে না। কারুর
ইচ্ছে হলে বােরখা পরে আন্দোলনে নামতে পারে, কেউ জিন্স পরে নামতে পারে, কেউ হাফপ্যান্ট পরে নামতে
পারে, শাড়ী পরতে পারে, কেউ বিকিনি পরতে পারে, কেউবা পুরাে নগ্নও থাকতে পারে। তাতে 'নারীবাদ'
এতটুকুও লােপ পায় না, মানবিকতা ও বিসর্জন হ্য না। মানবিকতা, নারীবাদ লােপ পায় শাসকদের পদলেহনে।
অন্যায়ের সাথে আপােষ করলে। নিজের স্বার্থ রক্ষায় নারীবাদকে বিকৃত করে ব্যবহার করলে। এটা বুঝাটা খুব
প্রযােজন। নারী-পুরুষ সহ সমস্ত নাগরিকদেরই।
শাহীনবাগের নারীদের প্রতিবাদের এই আওযাজ অতীতকে পিছনে ফেলে এক নতুন সমযের বার্তা দিচ্ছে,
মুসলমান নারীদের পাশাপাশি অমুসলমান নারীরাও হিজাব পরে মুসলমানদের পােশাককে বিশ্বজুড়ে
অপমানের বিষয় করে তুলবার বিরুদ্ধে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর 'পােষাক দেখে চেনা যায়' মন্তব্যের বিরুদ্ধে,
দেশজোড়া বহমান ইসলামফোবিত্যার বিরুদ্ধে, আত্মমর্যাদার প্রশ্নকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে, নারী কী
পােশাক পরবে কী খাবে এই নিয়ে স্বয়ং নারীরা নিজে সিদ্ধান্ত নেবার প্রশ্নকে উর্ধ্বে তুলে ধরবার সংগ্রামে
নেমেছে, ঠিক তখনই তসলিমা নাসরিন সহ একশ্রেণীর সুবিধাবাদী, শাসকের পদলেহনকারী নারীবাদী মুখােশে
মুখ ঢাকা তাবেদার নেমেছেন বােরখা পরা আন্দোলন সহী নারীবাদ হলাে কি হলাে না সেই তত্ব পর্যালােচনায়।
প্রখ্যাত নারীবাদী তসলিমা নাসরিন ইসলামফোবিযা ভুগতে ভুগতে নারীবাদের সংজ্ঞা ভুলে গেছেন! মুসলমান
মৌলবাদীদের কুকর্মের দায় এনে সমস্ত সাধারন মুসলমান সমাজকেই অপরাধী হিসেবে দেগে দিচ্ছেন।
অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে 'নারীবাদের' ডেফিনেশন হিসেবে লেখা রযেছে , "The advocacy of Women's rights
on the ground of the equality of the sexes." আরাে সহজ করে বললে, নারী-পুরুষের রাজনৈতিক,
অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমতার পক্ষে থাকার নাম নারীবাদ। আরােও সহজ করে বললে, নারীবাদী সে
মানুষটিই, যে নারী এবং পুরুষ দুজনকে সম্পূর্ণ মানুষ বলে মনে করে এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা এবং
সমানাধিকারে বিশ্বাস করে। সেই সমানাধিকারের আন্দোলনের সাথে পােষাকের কোন সম্পর্ক নেই। নিজের
অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের সাথে পােষাকের কোন সম্পর্ক নেই। বরং কেউ পােষাকের দোহাই দিযে
নারীআন্দোলন মাপতে চাইলে তারসাথে পিতৃতন্ত্রের ধ্বজাধারীদের কোন ফারাক ই আসলে থাকে না। কারুর
ইচ্ছে হলে বােরখা পরে আন্দোলনে নামতে পারে, কেউ জিন্স পরে নামতে পারে, কেউ হাফপ্যান্ট পরে নামতে
পারে, শাড়ী পরতে পারে, কেউ বিকিনি পরতে পারে, কেউবা পুরাে নগ্নও থাকতে পারে। তাতে 'নারীবাদ'
এতটুকুও লােপ পায় না, মানবিকতা ও বিসর্জন হ্য না। মানবিকতা, নারীবাদ লােপ পায় শাসকদের পদলেহনে।
অন্যায়ের সাথে আপােষ করলে। নিজের স্বার্থ রক্ষায় নারীবাদকে বিকৃত করে ব্যবহার করলে। এটা বুঝাটা খুব
প্রযােজন। নারী-পুরুষ সহ সমস্ত নাগরিকদেরই।
এবছরের নারীদিবস তাই উৎসর্গিত থাকুক শাহীনবাগের দাদীদের প্রতি। উৎসর্গিত থাকুক পার্ক সার্কাস,
পলাশী'র লড়াকু নারীদের প্রতি। উৎসর্গিত থাকুক ঐশী ঘােশ, গৌরি লঙ্কেশ, সহ প্রত্যেকটা আপােষহীন
নারীকে। এবং এর সাথে সাথেই নারী-পুরুষ সহ সমস্ত শ্রেণীর নাগরিকেরা এগিয়ে আসুক ভারতীয় সংবিধানে
সুনিশ্চিত ধর্মনিরপেক্ষতা, সমতা এবং একতা বজায় রাখতে। এটাই হােক আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আহ্বান।
শান্তি, সম্প্রীতি এবং সমতার দেশ গড়ার আহ্বান।
পলাশী'র লড়াকু নারীদের প্রতি। উৎসর্গিত থাকুক ঐশী ঘােশ, গৌরি লঙ্কেশ, সহ প্রত্যেকটা আপােষহীন
নারীকে। এবং এর সাথে সাথেই নারী-পুরুষ সহ সমস্ত শ্রেণীর নাগরিকেরা এগিয়ে আসুক ভারতীয় সংবিধানে
সুনিশ্চিত ধর্মনিরপেক্ষতা, সমতা এবং একতা বজায় রাখতে। এটাই হােক আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আহ্বান।
শান্তি, সম্প্রীতি এবং সমতার দেশ গড়ার আহ্বান।
(লেখিকার মতামত নিজস্ব)
কোন মন্তব্য নেই