করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক :অসমে হ্রাস চীনা আমদানীকৃত সামগ্রী
দেবযানী, গুয়াহাটি
সমগ্র বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করা করোনা ভাইরাস প্রভাব ফেলেছে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও । চীনে ভয়াবহ রূপ নেওয়া কারোনা ভাইরাসের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাজারে কারন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাজারে রয়েছে চীনা সামগ্রীর এক বৃহৎ বাজার। বিশেষ করে মটরপার্স, কাপড়, প্রসাধন সামগ্রী, উপহার সামগ্রী,ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী আমদানী করা হয় চীন থেকে।এ ছাড়াও মোবাইল সহিত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রীর এক বৃহৎ বাজার রয়েছে উত্তর পূর্বাঞ্চলে। এদিকে করোনাভাইরাসের সংহারের প্রতি লক্ষ রেখে ভারত আর চীনের মাঝে ব্যবসায়িক লেনদেন সীমিত হয়ে যাবার ফলে ক্রমশ হ্রাস পেয়েছে এই সামগ্রী সমূহের আমদানি। একথা বলেছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যবসায়ীক প্রাণকেন্দ্র ফাঁসী বাজারের একাংশ ব্যবসায়ীরা। অবশ্য প্রত্যক্ষভাবে অসমের ব্যবসায়ীরা চীন থেকে সামগ্রী আমদানী করে না। শিলিগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লীর ব্যবসায়ীর দ্বারা রাজ্যের বাজারে চীনা সামগ্রী আমদানী করা হয়। শিলিগুড়ির অনেক ব্যবসায়ীরা চীনের সামগ্রী আমদানি করে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাথে দেশের অন্যান্য প্রান্তে ব্যবসা করে ।কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকে লক্ষ রেখে শিলিগুড়ি ব্যবসায়ীরা প্রত্যাহার করেছে চীনের বাজার থেকে সামগ্রী ক্রয়ের জন্য প্রদান করা অর্ডার। বিশেষ করে শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীরা চীনে না যাবার ফলে সামগ্রী ক্রয় করার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে অসমের বাজারেও এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। শিলিগুড়ি ব্যবসায়ীরা চীনা সামগ্রী আমদানী বন্ধ করার সাথে সাথে অসমের বাজারও এই সামগ্রী সমূহের যোগান আপনা আপনি বন্ধ হয়ে পড়েছে।এইভাবে মোবাইল ,এলইডি লাইটের ও ইলেকট্রনিক মতো সামগ্রীর বাজারে এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা চীনা সামগ্রী উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে ক্রমশঃ উৎপাদন হ্রাস পাবার ফলে আগামী ভবিষ্যতে এই সামগ্রী যোগান কমে আসাটা নিশ্চিত হয়ে পড়েছে ।ফলে বিভিন্ন সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি হবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে ফাঁসী বাজারের একাংশ ব্যবসায়ীদের বক্তব্য যে করোনাভাইরাস আগন্তুক তিন-চার মাসের ভিতরে নিয়ন্ত্রনে না আসলে মোটর পার্টস,লাইট ইত্যাদির মতো সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
ওদিকে চীনের থেকে অসমের বাজারে আমদানি করা ওষুধের মূল্যবৃদ্ধিও আগন্তুক সময়ে মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে ওষুধ কমে যাবার আশঙ্কা করা হয়েছে। ওষুধ জাতীয় সামগ্রী নির্মাণের সাথে সাথে ঔষধ নির্মাণে ব্যবহৃত হওয়া উৎপাদন আমদানি করা হয় চীনের থেকে।ফলে ওষুধ প্রস্তুত করা কোম্পানীগুলির এতে প্রভাব পড়াটা নিশ্চিত ।যার ফলে জীবনদায়িনী ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি হবার আশঙ্কা করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে অসমে বৈধভাবে আসা সামগ্রীর ছাড়াও স্মাগলিং হয়ে আসা সামগ্রীর অসমে আছে এক বৃহৎ বাজার ।কাপড় থেকে আরম্ভ করে লাইট ,ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী,পুতুল,iইত্যাদি বেআইনিভাবে আমদানি করা হয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাজারে। শিলিগুড়ির,দিল্লী, মুম্বাইয়ের এজেন্টরা চীনা সামগ্রী অবৈধ বাজার চালিয়ে আসছে। করোনা ভাইরাসের আক্রমণের ফলে স্মাগলিং এর বাজারেও প্রভাব পড়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে করোনা ভাইরাস আক্রমণে চীনের প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি লোক আক্রান্ত হয়েছে এবং আক্রান্ত মধ্যে দুই হাজারের বেশি ব্যক্তির ইতিমধ্যে মৃত্যু ঘটেছে। ভয়াবহ রূপ নেওয়া এই মারাত্মক ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত সফল হতে পারেনি চীন। সমান্তরালভাবে চীনের থেকে অন্য বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে ।যার ফলে বিশ্বর বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে চীনের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছে ।ভারতেও প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা হিসেবে চীন ভ্রমণ করা ব্যক্তিকে দেশের প্রতিটি বিমান বন্দরে পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চীনে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,কল কারখানা সমূহ সম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য বন্ধ রেখেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।ফলে মোবাইল,কাপড়,ইলেকট্রনিক সামগ্রী,মোটর পার্টস,ইত্যাদির উৎপাদন,আগন্তুক সময়ে হ্রাস পাবাটা নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় দেশের অন্য প্রান্তের সাথে অসমের বাজারেও ভবিষ্যতে গভীর সমস্যার সম্মুখীন হবে।
কোন মন্তব্য নেই