Header Ads

দিলীপে আস্থা কম বিজেপির! আসন্ন পুরভোটে এবার বিকল্প ভাবনায় উঠে এল বাবুলের নাম !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়
বাংলায় বিজেপির মুখ বলতে এখনও 'ওয়ান অ্যান্ড অনলি' দিলীপ ঘোষ। মুকুল রায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এলেও তাঁকে দলের মুখ করা হয় নি। আর শোভন তো এসেও এলেন না। তাই এখন কলকাতা পুরভোটের দিকে চেয়ে বিজেপি তুলে আনতে চাইছে বাবুল সুপ্রিয়কে। বিজেপি চাইছে একজন মার্জিত-স্বচ্ছ মুখ।

বিজেপি তাই আসন্ন পুরভোটে দিলীপ ঘোষকে একাংশের
দায়িত্বে দিয়ে কলকাতা ও কলকাতা সংলগ্ন শহরতলির পুরসভার দায়িত্বে আনতে চাইছে বাবুল সুপ্রিয়র মতো নতুন একজনকে। দিলীপ ঘোষকে বাংলার অন্যত্র প্রচারে রেখে বাবুল সুপ্রিয় ও
অন্যান্য মধ্যপন্থীদের দায়িত্বে এনে ফায়দা তুলতে চাইছে
বিজেপি।
একথা অনস্বীকার্য যে, বাংলার বেশিরভাগ অঞ্চলে বিজেপির মুখ দিলীপ ঘোষই। তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যের নমুনা এইরকম ছিল-- "দরিদ্র, অশিক্ষিত নারী-পুরুষকে রাস্তায় বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিনিময়ে তারা প্রতিদিন টাকা পাচ্ছে। বিদেশি তহবিল দিয়ে তাদের বিরিয়ানি খাওয়ানো হচ্ছে। দিল্লির শাহিনবাগ বা কলকাতার পার্কসার্কাসের চিত্র একইরকম।" বিজেপি চাইছে না এই চরমপন্থা কলকাতার জন্য নিতে।
বিজেপি এখন দ্বৈত নীতি নিচ্ছে সিএএ-এনআরসি নিয়ে। আসলে এটি একটি কৌশলের অংশ। পুরভোটের আগে বিজেপির
পরীক্ষণীয় কৌশল বললেও ভুল বলা হবে না। বিজেপি দু-রকম কথা বলছে। তাই দুই পৃথক মুখ এনে গ্রাম-শহরের জন্য অবস্থানও বদল করতে চাইছে। খানিকটা দু-নৌকায় পা দেওয়ার মতোই চলবে বিষয়টি। 
দিলীপ ঘোষ রাজনৈতিকভাবে চরমপন্থা নিয়ে চলছেন। তিনি সবকিছুতেই আক্রমণাত্মক অবস্থান নিচ্ছেন। প্রয়োজনে খারাপ ভাষাতেও কথা বলবেন। কিন্তু বাবুল সুপ্রিয় খানিক মধ্যপন্থী। মাঝেমধ্যে চরমপন্থার মতো আচরণ করলেও তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নরমপন্থা অবলম্বন করেন। তাই তাঁকে পছন্দ কলকাতা-সহ শহরতলির পুরসভাগুলির প্রচার-পরিকল্পনায়।
এবার বিজেপির লক্ষ্য কলকাতা ও শহরতলির পুরসভাগুলিতে থাবা বসানো। বিজেপি তাই কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বাবুল সুপ্রিয়র মতো কোনও বিকল্প নম্র-ভদ্র মুখকে উপস্থাপন করতে চাইছে।  দিলীপের আক্রমণাত্মক মেজাজ গ্রামীণ মানুষদের কাছে পছন্দের হতে পারে, শহর অপছন্দ করছে বলেই অভিমত। তাই এই অঞ্চলে বাবুল সুপ্রিয় এবং অন্যান্য 'মধ্যপন্থী' নেতাদের সামনে হাজির করে ফায়দা তুলতে চাইছে। পুরসভায় যেমন কোনও মেয়রের মুখ তারা সামনে আনতে চাইছে না, তেমনই ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দলের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করে বিজেপি দ্বৈত নীতি নিয়ে চলতে আগ্রহী।
অর্থাৎ গ্রামে একরকম প্রচার, শহরে অন্যরকম প্রচার করে বাজিমাত করা বিজেপির উদ্দেশ্য। এই অবস্থায় ১৪টি লোকসভা আসনে বাবুল সুপ্রিয় ও মধ্যপন্থী নেতারা প্রচারের দায়িত্বে থাকবেন। অর্থাৎ ২৯৪ আসনের মধ্যে ৯৮টি বিধানসভা আসন থাকবে বাবুল সুপ্রিয়দের হাতে। আর বাংলার বাকি দুই-তৃতীয়াংশ আসনে তাঁর নিজত্ব স্টাইলে দলকে নেতৃত্ব দেবেন দিলীপ ঘোষ। বাংলার ২৮টি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত প্রায় ১৯৬ বিধানসভা আসন থাকবে দিলীপের হাতে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.