এন আর সি তে নাম থাকা ব্যাক্তিদেরও বিদেশী নোটিশ ধরিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ বাড়ছে , নামবিভ্রাট চলছেই
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণাগারে গিনিপিককে কাঁটা ছেঁড়া
করে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন, বিজেপি সরকার বাঙালিকে গবেষণাগারের গিনিপিক হিসাবে
ব্যবহার করে কাঁটা ছেঁড়া করছে, অত্যাচারের,
হেনস্থার সব সীমা ছাড়িয়ে
গেছে। নিম্ন অসমের বিজনী শহরের এক গরিব পরিবারের মহিলার নাম
মধুবালা মন্ডল, মন্ডল পদবীর অন্য মন্ডলকে সীমান্ত পুলিশ বিদেশি বলে ধরতে গিয়ে নিরীহ, নিরপরাধ, হত দরিদ্র মধুবালা মন্ডলকে ধরে নিয়ে গিয়ে ডিটেনশন
ক্যাম্পের অন্ধকারে পুরে দিলো, তিন তিন বছর বিনাদোষে জেল খাটলেন, সরকার কোনো
ক্ষতিপূরণ দেয়নি, ভুলের জন্যে ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি। বঙাইগাঁও
জেলার অভয়াপুর নির্বাচন কেন্দ্রের অধীন 1 নম্বর দাঁড়াগুড়ি গ্রামের চার সন্তানের মা নবমী আর্যকে বিদেশি বলে বঙ্গায়গাঁও ফরেন
ট্রাইব্যুনাল নোটিশ দিয়েছে। তার দাদা গিরিন চন্দ্র আর্য্য বানেশ্বর মন্ডল এম
ই ভেঞ্চার স্কুলের শিক্ষক দীর্ঘ 29 বছর বেতন পাননি, শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা পান, তিনি শিক্ষক পরিচয় লুকিয়ে রেখে আজ এই প্রতিবেদককে
জানান, তার খুড়তুতো বোন নবমীর 1966 সালের, 1971 সালের ভোটার তালিকায় নাম আছে। তার স্বামী সুবল
আর্য্য একজন বেকার, কষ্টের সংসার, নাগরিকত্বের সব
নথি আছে, এন আর সি-তে নাম
উঠেছে, তার নামে বিদেশি
নোটিশ এসেছে। তিনি জানান, সুবলের নথিপত্রে
নাম ঠিকই আছে, কিন্তু বিদেশি
নোটিশে তার ডাকনাম ভানু লেখা আছে, আগামী 27 ফেব্রুয়ারি বঙাইগাঁও বিদেশি ট্রাইব্যুনালে হাজির
থেকে চার সন্তানের মা-কে প্রমাণ দিতে হবে সে ভারতীয় নাগরিক। সাধারণ নাম বিভ্রাটের
জন্যে এত বড় শাস্তি, হয়তো তাকে মধুবালার
মত ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হতে পারে, সেই চিন্তায় উদ্বিগ 29 বছরের বেতন না
পাওয়া ভেঞ্চার স্কুল শিক্ষক গিরিনবাবু। বরপেটা রোডের শাক সবজি বিক্রি করে সংসার চালাতেন
হানিফ আলী, বজালির বিদেশি
ট্রাইব্যুনাল তার নামে বিদেশি নোটিশ পাঠায়, হানিফ আলীর বাবা ছিলেন সোনা মিঞা, নির্বাচন অফিসারের ভুলে বাবার নাম হয় সোনাজান
মিঞা, এই ভুলের জন্যে
গোয়ালপাড়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে ঠাঁই হয়েছে। এরকম হাজার হাজার ভুলের খেসারত দিতে
হচ্ছে হিন্দু, মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে। এন আর
সি-তে নাম তোলার জন্যে 14টি নথি নির্দিষ্ট
করে দেওয়া হয়েছিল, সেই নথির মধ্যে
ছিল জমির খাজনার রশিদ, ব্যাংকের নথি, ভোটার পরিচয়পত্র,
প্যান কার্ড প্রভৃতি,
উজানের মর্গারিটার
বাসিন্দা মুনিন্দ্র বিশ্বাস এই সব নথিপত্র আদালতে জমা দেওয়ার পরও তার আবেদন গুয়াহাটি
হাইকোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। তার পূর্বপুরুষের সঙ্গে লিঙ্ক দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সব
বৈধ নথি অবৈধ হয়ে গেল। নিখিল ভারত বাঙলি সন্থার পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক মানস রায়
আজ জানান, যে সব গরিব
পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল, আদালতে যাবার
ক্ষমতা নেই, তাদের ব্যাপারে
তারা লড়বে। মুনিন্দ্র বিশ্বাসের মামলাটি তারা নিতে চাইছে। এন আর সি নাম ছুট 19 লক্ষ মানুষকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে, তার কারণ জানিয়ে রিজেকসন
পত্র দেওয়ার কাজ শুরু হবে, শিক্ষক, কর্মীদের এন আর সি কাজে যোগ দেবার নির্দেশ জারি হবে। আবার হাজার হাজার ভুল
শুরু হবে, মানুষের ভোগান্তি
বাড়বে, এন আর সি যে পর্বত সমান ভুল করেছে, আর নাম ছুটরা
বিশ্বাস করতে পারছে না। এন আর সি-তে নাম থাকা ব্যাক্তিদের আবার বিদেশি নোটিশ
পাঠানোর কারণ কি? আবার বড় কোনও চক্রান্ত নয় তো?
কোন মন্তব্য নেই