Header Ads

গানে কবিতায় কথায় ‘উজান সাহিত্য গোষ্ঠী’ পালন করল ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

 


নয়া ঠাহর প্রতিবেদন,গুয়াহাটি
প্রতিবারের মতো এবারেও ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০, শুক্রবার তিনসুকিয়ার  উজান সাহিত্য গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি  বিভিন্ন অনুষ্ঠানসূচীর মধ্যদিয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করল।  বিকেল বেলা দুর্গাবাড়ি হলের অনুষ্ঠানে গান কবিতা সহ বিচিত্রানুষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিবারের মতো এবারেও ছিল এক বিশেষ বক্তৃতা। বক্তৃতা করতে বিশ্বনাথ চারিয়ালি থেকে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন তরুণ অসমিয়া কবি, চিত্রনাট্যকার সাংবাদিক স্নেহাঙ্কর চক্রবর্তী। তাঁর বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘অসমিয়া-বাঙালি ভাষিক সংহতি এবং নিরুদ্দিষ্ট কবি হেমাঙ্গ দত্তের কবিতার আভ্যন্তরীণ সৌন্দৰ্য।’
   

কথা ছিল বিকেল ২টা ৩০শে শুরু হবে অনুষ্ঠান। সামান্য দেরিতে  বিকেল তিনটায় শুরু হয়। গোষ্ঠীর সভাপতি সুজয় রায় শহিদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। তাঁকে সঙ্গ দেন অতিথি স্নেহাঙ্কর চক্রবর্তী সহ উপস্থিত সুধীজন। সঙ্গে উজানের শিল্পীবৃন্দ  গেয়ে উঠেন, একুশের গান ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ এবং ‘চির চেনেহি মোর ভাষা জননী’ । দুটি গানেই কণ্ঠ মেলান জীবন সরকার, শিলা দেব দে সরকার, বর্ণালি সেনগুপ্ত, গীতু ভৌমিক, চন্দ্রা চক্রবর্তী, টুইঙ্কল পাটগিরি, হর্ষিতা মরাং, তুহিনা ভট্টাচার্য, মিতালি মালাকার। শিল্পীদের তবলাতে সহযোগিতা করেন অনিমেষ কলিতা। এর পরেই  অতিথি স্নেহাঙ্কর চক্রবর্তীকে উত্তরীয়, একটি করে স্মারক এবং  উপহার দিয়ে বরণ করেন  শিলা দেব দে সরকার এবং বর্ণালি সেনগুপ্ত।  এরপরে আবারও উজানের শিল্পীরা পরিবেশন করেন রবীন্দ্র সঙ্গীত ‘শুভ কর্মপথে ধর নির্ভয় গান’ সহ আরো ক’টি সমবেত গান। অনুষ্ঠানে এ ছাড়াও গান গেয়ে শুনান দীপ্তি দুয়োরা, পূর্ণেন্দু দাস। নিজের লেখা কবিতা পড়ে শুনান  ইন্দু বরকটকী, গৌতম বরঠাকুর, মায়া চৌবে, প্রণতি বরুয়া, টুলু বরা, সুতপা চক্রবর্তী, সারিক আহমেদ, সীমা পাল, পার্থসারথি দত্ত, শিলা দেব দে সরকার প্রমুখ ।




স্নেহাঙ্করের বক্তৃতা দুই ভাগে ভাগানো ছিল। এক ঘণ্টারও বেশি তাঁর বলবার সময় পুরো হল নীরবে শুনে যাচ্ছিল বক্তৃতা।  প্রথম ভাগে তিনি হেমাঙ্গ বিশ্বাস, অমলেন্দু গুহ, বিষ্ণু রাভা, ভূপেন হাজরিকা সহ হালের জুবিন গার্গ, অঙ্গরাগ মোহন্ত, ডলি ঘোষ, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কিছু ব্যক্তিত্বের দুই ভাষাতেই সাহিত্য ও শিল্প কর্মের উদাহরণে আদানপ্রদানের নজির মনে পড়িয়ে দেন।সঙ্গে উজান, নাইনথকলাম ইত্যাদি কাগজের কথা বলেন, যারা দুই ভাষা সাহিত্যকেই বৃহৎ পাঠকের কাছে পৌঁছে দেবার কাজ করছেন।  তিনি যেমন অসমিয়া উগ্রজাতীয়তাবাদকে এই আদানপ্রদানের প্রতিকুল বলে মত ব্যক্ত করেন, তেমনি বাঙালির উচ্চাত্মিকাবোধকেও সমানই দায়ী মনে করেন। 




 দ্বিতীয় ভাগে তিনি হঠাৎ নিখোঁজ খেয়ালি কবি হেমাঙ্গ দত্তের একটিই মাত্র প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘অথবা’র কিছু বাছাই করা কবিতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং এর ভেতরের ব্যঞ্জনা নিজের মতো ধরিয়ে দেবার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, অসমের দুর্যোগপূর্ণ আর্থসামাজিক পরিবেশে তির্যক বাগভঙ্গীমাতে রচিত হেমাঙ্গ দত্তের প্রতিটি কবিতার আশার বার্তা বহন করে।
 সেদিনের গোটা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বাচিক শিল্পী ত্রিদিব দত্ত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.