বরাকে ভাষা শহিদ দিবসে প্ৰাপ্তি-অপ্ৰাপ্তির খতিয়ান
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ ১৯৬১ সালে ১৯ মে বাংলা ভাষা রক্ষার দাবিতে একজন যুবতী সমেত ১১ জন শহিদ হয়েছিলেন। কমলা ভট্টাচাৰ্য, সচীন্দ পাল, হিতেশ বিশ্বাস, চণ্ডীচরণ সূত্ৰধর, সত্যেন্দ্ৰ দেব, বিরেন্দ্ৰ সূত্ৰধর, কুমদরঞ্জন দাস, সুনীল সরকার, ধরনী দেবনাথ, সুকোমল পুরকায়স্থ এবং কানাইলাল নিয়োগী। লাঠিচাৰ্জ এবং গুলি চালনার ফলে আহত হয়েছিলেন ৩০ জন। অধিকাংশ প্ৰতিবাদীই পঙ্গু হয়েছেন, অনেকেই মারা গেছেন। এই দিনটিকে সারা বরাকবাসী শ্ৰদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। সেই ভাষা শহিদরা আজ পৰ্যন্ত সরকারীভাবে কোনও স্বীকৃতিই পেল না। শিলচর রেলওয়ে স্টেশনকে ভাষা শহিদ স্টেশন হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছিল। রেলমন্ত্ৰক তা মেনে নিলেও অসম সরকারের গাফিলতিতে তা আজও বাস্তবায়িত হল না। অসম আন্দোলনে শহিদদের রাজ্য সরকার ৫ লক্ষ টাকা করে দিয়েছে, নিকটাত্মীয়দের স্বীকৃতি জানিয়েছে। ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। অথচ বরাক উপত্যকার ১১ জন ভাষা শহিদকে স্বীকৃতি তো দেওয়া হয়ইনি, কোনও ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিলেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে। তা আজও দেওয়া হয়নি। এই ভাষা শহিদের গুলি চালনার ঘটনায় প্ৰকৃত দোষীদের শাস্তির দাবিতে ‘মেওরোতরা’ কমিশন গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিশন আজও ফাইলে আবদ্ধ রইল, তা প্ৰকাশ পেল না। ১৯৫২ সালে পূরব পাকিস্থানে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। এরপর বহু ঘাত প্রতিঘাত, বহু বাঙালি শহিদ হওয়ার পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ নতুন দেশ হয়। কিন্তু অসমে ভাষা আন্দোলন করে তারা কিছুই পেল না। সরকারের স্বীকৃতি পৰ্যন্ত পেল না। বিজেপি সরকারের কাছে আশা করা গেছিল এই সরকার স্বীকৃতি দেবে কিন্তু কিছুই পেল না বরাক উপত্যকাবাসী। প্ৰায় ৪০ লক্ষাধিক মানুষের ক্ষোভ থেকেই গেল। বরাক উপত্যকায় মানুষের পঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্ৰকাশ ঘটেছে বহুবার। বরাকে কেন্দ্ৰীয় শাসিত অঞ্চলের ঘোষণা দাবিতে বহু আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু কোনও দাবি আজ পৰ্যন্ত পূরণ হয়নি। না কংগ্ৰেস, না অগপ, না বিজেপি, কোনও সরকারই বরাককের কোনও অভিযোগকে গুরুত্বই দেয়নি। সেই ক্ষোভ আর হতাশাকে বুকে নিয়ে রবিবার বরাক উপত্যকায় সৰ্বত্ৰ ভাষাদিবস উদযাপিত হচ্ছে। শিচলচর রেলওয়ে স্টেশনে ১১ জন ভাষা শহিদকে শ্ৰদ্ধা তৰ্পণ রক্তদান শিবির, আলোচনা চক্ৰ, বিভিন্ন কৰ্মীসূচী গ্ৰহণ করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই