পূর্ব-শ্রীহট্ট সন্মিলনী রাজ্য সভায় সিলেট মূলের হিন্দু মনোনয়ন না দেওয়ায় মর্মাহত
রাজ্যসভার একটি আসন সিলেট মূলের হিন্দুর জন্য ৬+১ যোগ করে ১৯৫৬ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দেওয়ার যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল- তা উলংঘন করে বিগত ১১ বৎসর চালানো হয়েছে। আর ২০১৯ এ পূর্ব-শ্রীহট্ট সন্মিলনীর পক্ষ থেকে বার বার মনে করিয়ে দেওয়া সত্বেও ২টি আসনে বঞ্ছিত করা হচ্ছে - সেটা শুধু অসমের জন্য নয় - সমগ্র ভারতবর্ষের জন্য মঙ্গল হবে না - সংবিধান বলে কিছু নয়- "আমিই সংবিধান" বলে প্রতীয়মান হবে। বলছেন পূর্ব-শ্রীহট্ট সন্মিলনীর অন্যতম আহবায়ক ডঃ ইরেশ রঞ্জন ভট্টাচাৰ্য।
কেন সিলেট্মূলের হিন্দুকে নির্বাচিত করতে হবে? সিলেট মূলের হিন্দুরা আজ পর্য়ন্ত ভারতের সংবিধান গহণ করতে পারেন নি - যা পূর্ব-বঙ্গের বা পূর্ব-পাকিস্তানের হিন্দুদের পক্ষে (দুঃখ জনক ভাবে- সমগ্র ইষ্ট-বেঙ্গল প্রভিন্স হিসাবে পাকিস্থানে চলে যাওয়ায় ) সম্ভব হয়েছিল। শুধু সিলেট জেলা হিসাবে গণভোটের মাধ্যমে একটি অংশ জমি ভারতে এসেছে বা ভারতে থাকার স্বপক্ষে ভোট দিয়েছেন- তারা আজও ভারতের সংবিধান গ্রহণ করা সম্ভব হয় নি। কারণ ১৯৪৬ সালের সংবিধান তৈ্রির জন্য নির্বাচিত তিন সদস্যকেই মাউন্টবেটেন ৩রা জুনের ভুল ঘোষণায় পাকিস্তান সংবিধান বানাতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অথচ ভোটদাতারা ভারতে থাকার বা ভারতের জমিতে থেকে গেলেন।
উদাহরণ স্বরূপ আজ যদি গুয়াহাটির নির্বাচিত শ্রীমতী কুইন ওজাকে ভূটান বা নেপালের সংবিধানে গিয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে বলা হয়- তাহা হলে গুয়াহাটির ভোটারদের সংবিধানে প্রতিনিধিত্ব করার কেউ থাকবে না। এই ভাবে সিলেটের হিন্দুদেরও ভারতের সংবিধান বানাতে পারেন নি।
আর সংবিধান কি জিনিষ বুঝিয়ে বলছি। আজকে টাউন ক্লাব, মহারাণা ক্লাব আদি বিভিন্ন ফুটবল দল নিজেদের পৃথক পৃথক সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করে সেক্রেটারি/ প্রেসিডেন্ট বানান- একজন মেম্বার বা সদস্য না হলে তাকে নেওয়া হয় না। তাই সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন রায়ে এই সংবিধান গ্রহণের ক্রম হিসাবে শপথ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তা না হলে যে কেউ বাইরে থেকে এসে বলবে এই সংবিধান আমার বা আমার মতে হতে হবে। তাই সংবিধানে মেম্বারশিপ টি একটি বড় অধ্যায়। সিলেটের হিন্দুরা ভারতের সংবিধানে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন নি ভারতে থেকেও ১৯৪৭-১৯৫০।
তাই অসমে প্রতীক হিসাবে ১৯৫৬ সালে সপ্তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে রাজ্যসভায় ৬+১ করে সিলেটের হিন্দুদের সংবিধানে প্রতীকী সদস্য হিসাবে স্বিকৃতি দেওয়া হয়েছিল। আজ তা উলংঘিত। তার পরিণাম ভবিষ্যতে কি হবে বলা কঠিন।
তাই পূর্ব-শ্রীহট্ট সন্মিলনী বার বার এই সাংবিধানিক আসনটি সিলেট মূলের হিন্দুদের জন্য সংরক্ষিত রাখার জন্য আবেদন রেখে যাচ্ছেন । কর্ণপাত না করে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছেন। এখানে এটা পুর্ব-বংগ বা সিলেটি বলে বিরোধের প্রশ্ন আসছে না। তাই সুরেশ দেব, মহীতোষ পুরকায়স্থ, নৃপতি চৌধুরী, কমলেন্দু, কর্ণেন্দুদের রাজ্য সভায় স্থান দেওয়া হয়েছিল। ভবিষ্যতে যতদিন ভারতের সংবিধান থাকবে, সেটা মানতে হবেই।
কোন মন্তব্য নেই