বিজেপির রথের চাকা বসে গেল হাইকোৰ্টে, এরপরই সংবাদ মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিলেন অমিত
ছবি, সৌঃএএনআই
নয়াদিল্লিঃ হাইকোৰ্টে অনুমতি না মেলার পর শুক্ৰবার সকাল থেকেই কোচবিহারে ফাঁকা মাঠ। কোচবিহারে বিজেপির প্ৰস্তাবিত রথযাত্ৰা যে বাতিল হচ্ছে তা আগে থেকে আঁচ করা হয়েছিল। দিল্লি থেকে অমিত শাহ-র সফর বাতিলের কথা জানানো হলে তা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপরই রাজধানীতে দলের সদর দফতর থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপির সৰ্বভারতীয় সভাপতি অমিহ শাহ। জানান- ‘রথযাত্ৰা স্থগিত, তবে বন্ধ নয়।’ আগামীকাল কলকাতায় আসছেন অমিত শাহ। রথযাত্ৰা বাতিলের জন্য সরাসরি রাজ্য প্ৰশাসনকেই দায়ি করেছেন তিনি। বলেন- বাংলায় কোনও কিছুরই অনুমতি প্ৰশাসন দেয় না, সবেতেই আদালতে যেতে হয়। প্ৰসঙ্গত, ২৯ অক্টোবর থেকে অনুমতি চাওয়ার পর জবাব না পেয়ে আরও তিনবার চিঠি দেন দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহারা। শেষ পৰ্যন্ত ৩০ নভেম্বর হাইকোৰ্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিচারপতি তপোব্ৰত চক্ৰবৰ্তীর বেঞ্চ আগামী ৯ জানুয়ারি পৰ্যন্ত বিজেপি- র কৰ্মসূচিতে স্থগিতাদেশ দেন। এদিন অমিত শাহ সাংবাদিকদের বলেন- পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্ৰী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়ে গিয়েছেন। কলকাতায় প্ৰস্তাবিত তিন রথযাত্ৰা হলে তবে পরিবৰ্তন আসবে, তাই তিনি রথযাত্ৰাগুলোকে আটকাবার চেষ্টা করছেন। এর আগে পঞ্চায়েত নিৰ্বাচন হয়েছে, পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনে অ্যাতো হিংসা হয়েছে যা কমিউনিস্ট আমলেও কোনও দিন বাংলায় হয়নি। তৃণমূলের সমালোচনা করে তিনি বলেন- তৃণমূল নিজের কৰ্মকৰ্তাদের সূত্ৰ দিয়েছে- জোর যার বুথ তার। এটা কি গণতান্ত্ৰিক সূত্ৰ, প্ৰশ্ন তোলেন তিনি। এই ধরনের ভাষণে কি কখনও গণতন্ত্ৰের ভাল হতে পারে? প্ৰশ্ন তোলেন তিনি। পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনে শুধু বিজেপিরই ২০ জন কৰ্মকৰ্তাকে খুন করা হয়েছে। ১৩৪১ দলীয় কৰ্মী আহত হয়েছেন। ৬৫ জনেরও বেশি হত্যা হয়েছে পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনের সময়। পুরুলিয়ার ত্ৰিলোচন মাহাতো, দুলাল কুমার এবং জগন্নাথ ডুংরু তিনজনকেই হত্যা করা হয়েছে। এই রাজনৈতিক হত্যাগুলির পিছনে পুলিশ এবং তৃণমূলের কৰ্মকৰ্তারা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ৩৪ শতাংশ আসনে ভোটই হয়নি। ২ কোটি বাঙালি ভোটারদের ভোট দেওয়ার অধিকারই দেওয়া হয়নি। গুণ্ডামির কারণে মানুষ নিজের ভোটই দিতে পারেনি। ৭ বছর ধরে তৃণমূল সরকারের অপশাসন চলছে। প্ৰশাসনকে জানিয়েও অনুমতি পাওয়া গেল না রথের। গবাদিপশু, কয়লা, বন্দর সহ সবেতেই মাফিয়ারাজ চলছে। তৃণমূলের মন্ত্ৰীরা ওদের সুরক্ষা দিচ্ছে। রাজনৈতিক হত্যায় বাংলা বেশ কয়েক বছর ধরে শীৰ্ষে রয়েছে। বাংলায় আইন বলে কিছুই নেই। বাংলায় যা চলছে তা সামলাতে প্ৰশাসন ব্যৰ্থ। শাহ বলেন- বাংলায় সুশাসন আনতে আমরা প্ৰতিশ্ৰুতিবদ্ধ। পরিবৰ্তন আনতে আমরা প্ৰতিশ্ৰুতিবদ্ধ। প্ৰসঙ্গত, কোচবিহার থেকে শুরু হতে যাওয়া বিজেপির রথযাত্ৰা বাতিলের পাশাপাশি ৪১ দিনে ৪২ টি লোকসভা জুড়ে তিন রথযাত্ৰাতেই ৯ জানুয়ারি পৰ্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোৰ্ট। এই সময়ের মধ্যে সব জেলার পুলিশ সুপারকে জেলা বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যকে রিপোৰ্ট দিতে নিৰ্দেশ দিয়েছে হাইকোৰ্ট। সেই সামগ্ৰিক রিপোৰ্ট আদালতে জমা দেবে রাজ্য। এরপর ৯ জানুয়ারি পরবৰ্তী শুনানি হবে। সূত্ৰের খবর, জানুয়ারি মাসে প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি সহ মোট চারটি জায়গায় জনসভা করবেন।
কোন মন্তব্য নেই