পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনে বিজেপির আধিপত্য, বিপৰ্যস্ত অগপ-এআইইউডিএফ, মুখ রক্ষা করেছে কংগ্ৰেস
অগপ-বিজেপি ভাঙন চূড়ান্ত, অগপর বিরুদ্ধে প্ৰতিবেদন দাখিল করতে বিজেপি সভাপতি দিল্লী যাচ্ছেন
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি
দেশে ৫ রাজ্যের মধ্যে ৩ রাজ্যে কংগ্ৰেসের বিপুল জয়ের বিপরীতে অসমে পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনে বিজেপি দেশের মধ্যে চমকপ্ৰদ ফল করল। ২০১৩ নিৰ্বাচনে বিজেপি ছিল চতুৰ্থ স্থানে। প্ৰথম স্থান দখল করেছিল কংগ্ৰেস, দ্বিতীয় স্থানে এআইইউডিএফ, তৃতীয় স্থানে অগপ। বিজেপি মাত্ৰ ১৫টি জেলা পরিষদের আসন দখল করতে পেরেছিল। আজ ১৩ ডিসেম্বর পৰ্যন্ত রাত ৭ টা পৰ্যন্ত ৪২০ টি জেলা পরিষদের মধ্যে বিজেপি একাই ২১৪টি আসন পেয়ে প্ৰথম স্থান দখল করেছে। দ্বিতীয় স্থানে কংগ্ৰেস ১১৯টি আসন পেয়েছে, এআইইউডিএফ ২০ পেয়ে তৃতীয় স্থানে, এবং অগপ ১৮ টি আসন পেয়ে চতুৰ্থ স্থানে আছে। এই নিৰ্বাচনে কংগ্ৰেস তাদের ভোট ব্যাঙ্ক বলে পরিচিত সংখ্যালঘু মুসলিমদের ভোটে থাবা বসিয়েছে। অপর দিকে মুসলিম ধৰ্মাবলম্বী দল বলে পরিচিত বদরুদ্দিন আজমল মুসলিমদের ভোট থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তার দলের ভোট গেছে বিজেপি এবং কংগ্ৰেসের পকেটে। অপর দিকে এই নিৰ্বাচনে বিজেপি শাসক দলের শরিক দল অগপর প্ৰায় ভরাডুবি ঘটেছে। বিজেপির সঙ্গে সাংঘাতিক ভাবে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আজ বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস সরাসরি ভাবে অগপর সমালোচনা করে বলেন, অগপর বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য বিজেপি সৰ্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কাছে প্ৰতিবেদন দাখিল করতে যাবেন। তিনি জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলির দিকে আঙুল তুলে বলেন, গত ৬ মাস ধরে এক আবেগ সৃষ্টি করা হয়েছিল। প্ৰস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বাঙালি-অসমীয়াদের মধ্যে ভাতৃঘাতি সংঘাতের সৃষ্টির ষড়যন্ত্ৰ হয়েছিল। শেষ পৰ্যন্ত বিজেপির স্থিতিরই জয় হল। মন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মাও শরিক দল অগপর সমালোচনা করে বলেন, ‘শত্ৰুদল কংগ্ৰেসের সঙ্গে গোপনে সমঝোতা করেছিল অগপ। অগপ বিজেপির অঘোষিত মিত্ৰ ছিল। তারাও আমার সমালোচনা করে বলেছিল হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মাকে জেলে পাঠানো হবে'। অগপর আত্ম সমালোনা করা উচিত। হিমন্ত বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল শুধু টিভি এবং টক শোয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। প্ৰসঙ্গত আগামী সোমবার সৰ্বানন্দ সনোয়ালের পৌরহিত্যে ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে অগপর তিন মন্ত্ৰী না যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে বিজেপি সূত্ৰ দাবি করেছে। অপর দিকে অগপ সভাপতি তথা মন্ত্ৰী অতুল বরা পঞ্চায়েতের জনাদেশ নতশীরে মেনে নিলাম বলে মন্তব্য করে বিজেপিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাদের দলের খারাপ ফলাফল এবং বিজেপির সঙ্গে মিত্ৰতা নিয়ে দলের মধ্যে পৰ্যালোচনা হবে বলে জানিয়েছেন। প্ৰসঙ্গত তার নিৰ্বাচন কেন্দ্ৰ গোলাঘাটে বিজেপির জয় জয়কার। প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী প্ৰফুল্ল মহন্তের নিৰ্বাচন কেন্দ্ৰ বহরমপুরে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ অৰ্জন করেছে। বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰ নাথ গোস্বামী তথা অগপ নেতা যোরহাট কেন্দ্ৰ কংগ্ৰেজ জয়ী হয়েছে। প্ৰাক্তন তরুণ গগৈ তার তিতাবর কেন্দ্ৰ ধরে রাখতে পেরেছেন। কিন্তু কংগ্ৰেস সভাপতি রিপুন বরা তার কেন্দ্ৰ গহপুরে গো-হারা ভাবে হেরেছেন। স্বচ্ছ ভাবমূৰ্তি থাক অগপ মন্ত্ৰী ফণী ভূষণ চৌধুরী বঙ্গাইগাঁওয়ে অগপর প্ৰাধান্য ধরে রাখতে পেরেছেন। এআইইউডিএফ প্ৰধান বদরুদ্দিন আজমল এবং তার পুত্ৰের খাস মহল হোজাইয়ের যমুনামুখ এলাকায় এআইইউডিএফ প্ৰায় ধূলিস্যাৎ। বরপেটার সাংসদ সিরাজুদ্দিন আজমলও ভাল ফল দেখাতে পারেন নি। উজান অসমে মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দর নিৰ্বাচন কেন্দ্ৰ মাজুলি এবং নিজের জেলা, ডিব্ৰুগড়, তিনসুকিয়া, ধেমাজি সৰ্বত্ৰ বিজেপির আধিপত্য। বরাক উপত্যকায় অগপ-বিজেপি মিলেমিশে আসন দখল করেছে। সেখানেও এআইইউডিএফ-র অবস্থা খারাপ। বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ জেলায় জেলা রিটানিং অফিসার এবং প্ৰশাসন ষড়যন্ত্ৰ করে কংগ্ৰেসকে হারানোর চেষ্টা করছে আজ উত্তর করিমগঞ্জের কংগ্ৰেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ দলবল নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করার খবর এসেছে। তাদের অভিযোগ আশীনগর এবং ভৈরবনগরে ব্যাপক রিগিংয়ের ষড়যন্ত্ৰ করা হচ্ছে। এই প্ৰতিবেদন পাঠানো পৰ্যন্ত রাজ্যে ৪২০ টি জেলা পরিষদের মধ্যে বিজেপি একাই ২১৪টি আসন পেয়ে প্ৰথম স্থান দখল করেছে। দ্বিতীয় স্থানে কংগ্ৰেস ১১৯টি আসন পেয়েছে, এআইইউডিএফ ২০ পেয়ে তৃতীয় স্থানে আছে এবং অগপ ১৮ টি আসন পেয়ে চতুৰ্থ স্থানে আছে। বিজেপির জেলা পরিষদের আসন আরও বাড়বে বলে বিভিন্ন জেলা থেকে খবর আসছে।
অপর দিকে আঞ্চলিক পরিষদে বিজেপি ৬২৩ টি আসন পেয়ে প্ৰথম স্থানে আছে, কংগ্ৰেস, ৪০৭টি আসন দ্বিতীয়, অগপ ৬২টি আসন, এআইইউডিএফ ৫৯টি আসন পেয়েছে। অপরদিকে গ্ৰাম পঞ্চায়েত সভাপতি পদে বিজেপি এখন পৰ্যন্ত ৭১৪টি আসন পেয়ে প্ৰথম স্থানে আছে, কংগ্ৰেস ৪৬১, অগপ ১১১টি আসন, এআইইউডিএফ ৫৫টি আসন পেয়েছে। বিভিন্ন জেলায় এখনও গণনা শেষ হয় নি।
কোন মন্তব্য নেই