অসমের এন আর সি ছুট ৪০ লক্ষ মানুষের বিষয়টি উত্তপ্ত করে তুলবে আসন্ন সংসদের অধিবেশনে
রাষ্ট্ৰ সংঘের মানবাধিকার কমিটি ভারতকে সতৰ্ক করে দিয়েছে
অমল গুপ্তঃ গুয়াহাটি
১৯৫১ থেকে ১৯৭১ সালের ২৪ মাৰ্চকে ভিত্তিবৰ্ষ হিসাবে গণ্য করে অসমে নাগরিকত্ব নবায়নের কাজ চলছে। সারা দেশের মধ্যে একমাত্ৰ অসমেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এন আর সি) লাগু হওয়ার পর থেকে দু দুবার খসড়া তালিকা প্ৰকাশ পেয়েছে। ৩ কোটি ২৯ লক্ষ মানুষের মধ্যে ২ কোটি ৮৯ লক্ষ মানুষের নাম চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় প্ৰকাশ পেয়েছে। বাদ পড়েছে ৪০ লক্ষ ৭ হাজার ৭০৭ জন মানুষের নাম। নাম অন্তৰ্ভুক্তির জন্য পুনরায় আবেদন করেছেন ৫ লক্ষ ১৯ হাজর ২১৪ জন মাত্ৰ। গত ২২ নভেম্বর পৰ্যন্ত মাত্ৰ ১৯৪ জন আপত্তি দাখিল করেছেন। মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল, অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা বার বার বেশি করে আপত্তি জানানোর আবেদন করেছেন। পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনের প্ৰেক্ষিতে দাবি আপত্তির দাখিলের সংখ্যাও কমে গেছে। মুখ্যমন্ত্ৰী, অৰ্থমন্ত্ৰীর আশংঙ্খা তা না জানালে অবৈধ নাগরিকরা বৈধ নাগরিক হিসাবে পরিণত হবে। ২৫ সেপ্তেম্বর থেকে দাবি আপত্তি শুরn হয়েছিল। দাবি আপত্তির শেষ দিন ১৫ ডিসেম্বর। সাধারণ মানুষ আপত্তি দাখিল করতে গেলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির এ্যপ্লিকেশন রিসিট নম্বর (এ আর এন) জানা প্ৰয়োজন। ওয়েভ সাইটেও তা পাওয়া যােচ্ছ না। দাবি আপত্তির ক্ষেত্ৰে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
১৯৫১ থেকে ১৯৭১ সালের ২৪ মাৰ্চকে ভিত্তিবৰ্ষ হিসাবে গণ্য করে অসমে নাগরিকত্ব নবায়নের কাজ চলছে। সারা দেশের মধ্যে একমাত্ৰ অসমেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এন আর সি) লাগু হওয়ার পর থেকে দু দুবার খসড়া তালিকা প্ৰকাশ পেয়েছে। ৩ কোটি ২৯ লক্ষ মানুষের মধ্যে ২ কোটি ৮৯ লক্ষ মানুষের নাম চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় প্ৰকাশ পেয়েছে। বাদ পড়েছে ৪০ লক্ষ ৭ হাজার ৭০৭ জন মানুষের নাম। নাম অন্তৰ্ভুক্তির জন্য পুনরায় আবেদন করেছেন ৫ লক্ষ ১৯ হাজর ২১৪ জন মাত্ৰ। গত ২২ নভেম্বর পৰ্যন্ত মাত্ৰ ১৯৪ জন আপত্তি দাখিল করেছেন। মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল, অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা বার বার বেশি করে আপত্তি জানানোর আবেদন করেছেন। পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনের প্ৰেক্ষিতে দাবি আপত্তির দাখিলের সংখ্যাও কমে গেছে। মুখ্যমন্ত্ৰী, অৰ্থমন্ত্ৰীর আশংঙ্খা তা না জানালে অবৈধ নাগরিকরা বৈধ নাগরিক হিসাবে পরিণত হবে। ২৫ সেপ্তেম্বর থেকে দাবি আপত্তি শুরn হয়েছিল। দাবি আপত্তির শেষ দিন ১৫ ডিসেম্বর। সাধারণ মানুষ আপত্তি দাখিল করতে গেলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির এ্যপ্লিকেশন রিসিট নম্বর (এ আর এন) জানা প্ৰয়োজন। ওয়েভ সাইটেও তা পাওয়া যােচ্ছ না। দাবি আপত্তির ক্ষেত্ৰে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
৪০ লক্ষ মানুষের নাম এন আর সি থেকে বাদ পড়ায় সারা দেশে এমন কি রাষ্ট্ৰ সংঘও প্ৰতিক্ৰিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্ৰ সংঘের মানবাধিকার সংক্ৰান্ত কমিটি ভারত সরকারকে সতৰ্ক করে দিয়েছে। এই বৃহৎ সংখ্যক মানুষ রাষ্ট্ৰহীন হিসাবে পরিচিত হলে দেশে এক চরম বিপৰ্যয়ের সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ সরকার আগে ভাগে ভারত সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে এন আর সি ছুটদের একজনকেও তারা গ্ৰহণ করবেনা। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পৰ্কে যাতে ফাটল না ধরে তার জন্য কেন্দ্ৰীয় সরকারও ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে, তারা একজনকেও সেই দেশে পাঠাবে না। আগামী ১১ ডিসেম্বর সংসদের অধিবেশন শুরু হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্ৰেস, সমাজবাদী দল ইতিমধ্যে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পরায় গভীর উদ্বেগ প্ৰকাশ করেছে দিল্লীর এক সূত্ৰ জানান, সংসদের অধিবেশনে এই বিষয়টি উত্থাপন করে সদনকে উত্তপ্ত করে তুলবে। দিশপুরের এক সূত্ৰ জানান, পরিস্থিতি ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিং, মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল এবং অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মাকে দিল্লীতে জরুরী তলব করে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বুধবার মিলিত হয়েছিল। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, উত্তর পূৰ্বাঞ্চলের দায়িত্ব প্ৰাপ্ত স্বরাষ্ট্ৰ বিভাগের যুগ্ম সচিব সত্যেন্দ্ৰ গাৰ্গেও ঐ জরুরী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্ৰীয় সরকার পরিস্থিতি অধ্যায়নের জন্য এক উচ্চ পৰ্যায়ের কমিটি গঠন করে দিয়েছে। মন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা অভিযোগ করেছেন, এন আর সি প্ৰস্তুতের সময় এবং প্ৰথম তালিকায় নাম প্ৰকাশের পর জমিয়ত প্ৰধান আর্শ্বাদ মাদানী, এআইইউডিএফ, আমসু প্ৰভৃতি সংগঠন বারংবার অভিযোগ গিয়েছে লক্ষ লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষের নাম বাদ পড়বে। কিন্তু দ্বিতীয় তালিকা প্ৰকাশের পর তারা বিস্ময়করভাবে তারা চুপ হয়ে গেছে। মন্ত্ৰী হিমন্তের আশংঙ্খা দ্বিতীয় তালিকায় লক্ষ লক্ষ অবৈধ নাগরিকের নাম এন আর সিতে ঢুকিয়ে দিয়েছে। ‘প্ৰবজন বিরোধী মঞ্চের আহবায়ক তথা সুপ্ৰীমকোৰ্টের বিশিষ্ট আইনজীবি উপমন্যু হাজরিকাও একই অভিযোগ করেছেন। রাজ্যে ৫৫ হাজার সরকারী কৰ্মচারী এন আর সি নবায়নের কাজ করেই চলেছেন, তাদের একাংশের কাজ-কৰ্মের উপরে সরকারের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। ১৫ ডিসেম্বরের পর দাবি আপত্তির নথি পত্ৰ ভালো ভাবে পরীক্ষা করার জন্য রাজ্য সরকার দেড় দুহাজার অফিসার নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নাম অন্তৰ্ভুক্ত ২ কোটি ৮৯ লক্ষ মানুষের নাম নতুন করে পুনঃপরীক্ষার দাবিও উঠেছে। বিজেপি সভাপতি বাদ পরা ৪০ লক্ষ মানুষকে ‘ঘুষপেটিয়া', অবৈধ অনুপ্ৰবেশকারী বলায়, বিজেপির মধ্যেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে অসমের এক বৃহৎ সংখ্যক প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিক বাঙালি হিন্দুর নাম এন আর সি তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। তাদেরকে ‘ঘুষপেটিয়া'র তকমা সেঁটে দেওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এক দিকে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী অপর দিকে প্ৰস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল দিক থেকে বিজেপি পরিত্ৰাণ পাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পরিত্ৰাণের কোনও রাস্তা নেই। প্ৰায় ৪০ লক্ষ বাদ পরা মানুষের বোঝা বিজেপিকে চূড়ান্ত বিপৰ্যয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। প্ৰব্ৰজন বিরোধী মঞ্চের আহবায়ক আইনজীবি উপমন্যু হাজৰিকা এন আর সি কৰ্তৃপক্ষকে স্মারক পত্ৰ দিয়ে রাজ্যের অবৈধ বিদেশীদের সংখ্যা বোঝাতে গিয়ে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী হিতেশ্বর শইকীয়া ১৯৯২ সালে বিধানসভায় বলেছিলেন, রাজ্যে ৩২ লক্ষ বাংলাদেশী আছে, ২০০৪ সালে কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰ প্ৰতিমন্ত্ৰী শ্ৰীপ্ৰকাশ আগরওয়ালা সংসদে বলেছিলেন অসমে ৫০ লক্ষ বাংলাদেশী আছে। ২০১৬ সালে কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰ প্ৰতিমন্ত্ৰী কিরণ রিজিজু সংসদে বলেছিলেন, অসমে প্ৰায় ৮০ লক্ষ বাংলাদেশী আছে। অভিমন্যুর প্ৰশ্ন সেই বাংলাদেশীরা কোথায় গেল?
কোন মন্তব্য নেই